Site icon Book PDF Down.com

বিষাদ সিন্ধু PDF Download মীর মোশাররফ হোসেন

বিষাদ সিন্ধু PDF Download মীর মোশাররফ হোসেন

বিষাদ সিন্ধু PDF Download মীর মোশাররফ হোসেন ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসটির রচয়িতা বাংলার প্রথম মুসলমান ঔপন্যাসিক মীর মোশাররফ হোসেন। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম সাহিত্যকর্মগুলোর তালিকায় বিষাদ সিন্ধুর স্থান একেবারেই উপরদিকে। এটি বাংলাভাষায় রচিত প্রথম মহাকাব্যিক উপন্যাস।

উপন্যাসটি প্রথমে ধারাবাহিকভাবে ১৮৮৫, ১৮৮৭ ও ১৮৯১ সালে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী তে ১৮৯১ সালে বই আকারে মুদ্রিত হয়। মীর মেশাররফ হোসেনের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা যে সময়ে সেই সময় গ্রাম বাংলার মানুষের মুখে মুখে গল্পের মতো প্রচলিত ছিলো বিভিন্ন ধর্মীয় ঘটনা এবং এদের মাহাত্ন্য। সেই সময়ের একজন ঔপন্যাসিক হিসেবেই তিনিও রচনা করেন ‘বিষাদ সিন্ধু’ যা পরবর্তীতে বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে পরিণত হয়।

বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের সারাংশ

এই উপন্যাসটির মূল উপজীব্য হলো হিজরী ৬১ সালে সংঘটিত কারবালার যুদ্ধ এবং এর পূর্ববর্তী-পরবর্তী ঘটনা সমূহ। তাই এই উপন্যাসটিকে ঐতিহাসিক উপন্যাসের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে গবেষকদের মধ্যে মতভেদ দেখা যায়। মীর মোশাররফ হোসেন এই উপন্যাসটির ভূমিকায় লিখেছিলেন “পারস্য ও আরব্য গ্রন্থ হইতে মূল ঘটনার সারাংশ লইয়া বিষাদ সিন্ধু বিরচিত হইলো।”

লেখকের এই বক্তব্য থেকেই পাঠক অনুমান করতে পারেন এটি একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস তবে উপন্যাসের ঘটনাপ্রবাহের খাতিরে লেখককে নিজে থেকে কিছু পার্শ্বচরিত্র এবং ঘটনার সৃষ্টি করতে হয়েছে। যদিও এই উপন্যাসে বেশ কিছু অতিপ্রাকৃত ঘটনার উল্লেখ রয়েছে যা বর্তমান সময়ে এসে পাঠকের কাছে অবিশ্বাস্যও মনে হতে পারে।

বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের সারমর্ম

এ নিয়ে যত মতবিভেদই থাক সাহিত্যসমালোচকগণ সম্মিলিত ভাবেই এই উপন্যাসটিকে মহাকাব্যের মর্যাদা দিয়েছেন। তারা মনে করেন এই উপন্যাসটির পটভূমি মহাকাব্যিক৷ এই উপন্যাসটিতে প্রচুরসংখ্যক চরিত্র থাকলেও মূল চরিত্র হিসেবে পাঠক দেখতে পাবেন মহানবী (সঃ) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হাসান, ইমাম হোসেন, এজিদ,জয়নাব, সিমার, কাসেম, জায়েদা এবং মায়মুনার মতো কিছু ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্যকে।

বিষাদ সিন্ধুর মূল কাহিনীর ভিত্তি গড়ে উঠেছে জয়নাবকে কেন্দ্র করে। স্বামী পরিত্যাক্তা জয়নাব বিবাহসূত্রে বাধা পরেন ইমাম হাসানের সঙ্গে।দামেস্কের শাসক এজিদ জয়নাবের রুপে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে নিজের অধিকারে পাবার জন্য সংঘর্ষ শুরু করে ইমাম হাসান-হোসেনের সাথে৷ কাহিনী পরিক্রমায় ইমাম হাসান মৃত্যুবরণ করলে জয়নাব বন্দীনি হন এজিদের কারাগারে।

বিষাদ সিন্ধু অর্থ

তখন নিজেকেই সবকিছুর জন্য দায়ী মনে করতে থাকেন। সাহিত্যসমালোচক গণ জয়নাবক চরিত্রটিকে তুলনা করেছেন ‘রামায়ণ’ মহাকাব্যটির প্রধান নারী চরিত্র সীতার সাথে৷ কোন কোন গবেষক এজিদ চরিত্রটি কে এই উপন্যাসের মূল চরিত্র হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন।

পাঠক লক্ষ করবেন জয়নাবের প্রতি এজিদের আকর্ষণ এবং তাঁকে পাওয়ার লক্ষ্যই উপন্যাসটিকে দান করেছে গতিশীলতা। সে জয়নাব কে পাওয়ার বহু চেষ্টা করেছে। এই অভিপ্রায়ে সে সংঘর্ষ করেছে মহানবী দৌহিত্র ইমাম হাসান-হোসেন এর সাথে। কিন্তু কোনকিছুতেই যখন জয়নাবকে পাওয়া সম্ভব হয়নি তখন তারই বিছানো ষড়যন্ত্রের জালে পরে প্রাণ দিতে হয় মতামতি ইমাম হাসান কে এবং কারবালার যুদ্ধের পথ রচিত হয়।

লেখক এজিদ চরিত্র টি খুবই মনোযোগের সাথে গড়ে তুলেছেন। তার কামনা-বাসনাই এই উপন্যাসের বড় একটি জায়গা দখল করে রয়েছে। এই চরিত্রটির সম্পর্কে মুনীর চৌধুরী বলেছেন ” গ্রন্থের সর্বাপেক্ষা স্পষ্ট এবং প্রদীপ্ত চরিত্র এজিদের। এজিদের পাপের প্রকৃতি অসামান্য,তার বিকাশ প্রলয়ংকরী,তার পরিণাম যেমন ভয়াবহ তেমন শোকাবহ।”

বিষাদ সিন্ধু উক্তি

জয়নাবের প্রতি এজিদের মোহই এই উপন্যাসকে ট্র্যাজিক পরিণতির দিকে নিয়ে গেছে। তার এই মোহের কারণে বহু মানুষকে যুদ্ধে প্রাণ দিতে হয়েছে কিন্তু এজিদ জয়নাবে পায়নি। ঔপন্যাসিক বর্ণনা করেছেন জয়নাবের জন্য এজিদ “রাজ্যসুখ” এবং “প্রাণ পরিত্যাগ” করতেও রাজি। তার এই দূর্দমনীয় আকাংক্ষা যেন উপন্যাসটির প্রতিটি ছত্রেই প্রভাব রেখে যায়।

অপরদিকে ইমাম হাসান এবং ইমাম হোসেনের চরিত্রে পাঠক মানবচরিত্রের সকল সৎ গুণাবলীর উপস্থিতি দেখতে পাবেন। ইমাম হাসান মৃত্যুকেই তাঁর অদৃষ্ট হিসেবে মেনে নিয়ে তাঁর হত্যাকারী এবং বিষদাত্রী স্ত্রী জায়েদাকেও ক্ষমা করে দিয়ে যান। এছাড়াও ইমাম হোসেনও ছিলেন সাহসী, কর্তব্যপরায়ণ এবং ভ্রাতৃপ্রেমের এক জীবন্ত উদাহরণ।

মীর মশাররফ হোসেন PDF

কঠিন সময়ের পাঠক তাঁকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে দেখবেন। এছাড়াও ইমাম হাসানের পুত্র কাসেম এর মাঝেও একই রকম সাহসী চরিত্রের দেখা পাবেন পাঠক। এছাড়াও পাঠক আরো অনেক নেতিবাচক চরিত্রের দেখা পাবেন পুরো উপন্যাসজুড়েই। ইমাম হাসানের দ্বিতীয় স্ত্রী জায়েদা তার মধ্যে অন্যতম। জয়নাবকে বিয়ে করার পর থেকেই তিনি ইমাম হাসানের প্রতি বিরুপ মনোভাব পোষণ করে থাকেন।

যদিও ইমাম হাসান তার প্রতি কোন অবিচার করেননি কখনো তারপরেও তিনি ইমাম হাসান এবং জয়নাবকে মেনে নিতে পারেন না৷ তার এই ক্রোধ একসময় ভয়াবহ রুপ ধারণ করে। তিনি মায়মুনার প্ররোচণায় নিজ স্বামী ইমাম হাসানকে বিষ প্রয়োগ করেন। উপন্যাসটিতে কারবালা যুদ্ধের মূল কারণ হিসেবে জয়নাবের প্রতি এজিদের প্রেম কে দেখানো হলেও ঐতিহাসিক গণ বলে থাকেন এটি উপন্যাসের স্বার্থে লেখকের সৃষ্টি।

বিষাদ সিন্ধু PDF

মূলত কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো রাজ্য এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব থেকে। কিন্তু যত মতভেদ এবং কাহিনীর যাচাই বাছাই হতে থাক, যুগের পর যুগ ধরে ‘বিষাদ সিন্ধু’ পাঠকের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ধরে রেখেছে একইভাবে। বাংলার বিভিন্ন জনপদের মানুষের মুখে মুখে এটি আজও কিংবদন্তীর মতো ঘুরে বেড়ায়। মীর মোশাররফ হোসেনের এই অমর কীর্তি বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতোই। যুগে যুগে বাংলার পাঠকসমাজ চাইবেন এই আলোর সংস্পর্শ পেতে।

দূর্গেশনন্দিনী pdf

বিষাদ সিন্ধু কোন ধরনের উপন্যাস

বিষাদ সিন্ধু উপন্যাসের নায়ক কে

Exit mobile version