বকুলফুল PDF Download মনোয়ারুল ইসলাম

ভালো কিছু লেখকদের তালিকা করলে ‘মনোয়ারুল ইসলাম’ এর নাম সে তালিকায় থাকবে। রহস্যোপন্যাস লিখতে তাঁর জুড়ি নেই। যদিও তাঁর ‘বকুলফুল’ বইটা কিছুটা স্লো গতির কিন্তু গভীর! এই ‘বকুলফুল’ তার ২য় বই হলেও প্রথম উপন্যাস। আর এই প্রথম উপন্যাসেই লেখক বাজিমাত করেছিলেন। বর্তমানে তাঁর ছয়টিরও অধিক গ্রন্থ বের হয়েছে। এবং সেগুলো বেশ ভালোই জনপ্রিয় হয়েছেন। বকুলফুল বইটা আপ্নারা যারা পড়তে চান, আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটার পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

কাহিনীটা শুরু কৃষ্ণনগরে। এক বৃষ্টির রাতে গল্পকথক বের হয়েছেন। ছাতা নেই, অগত্যা বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে, ঠিক এ সময় এক অদ্ভুত নারী এসে ছাতা মেলে ধরে। গল্পকথক অবাক হন। মেয়েটার নাম স্মিতা চৌধুরানি। শ্যাম বর্ণ গায়ের রঙ। সে থাকে কৃষ্ণনগরের পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িতে। বাড়ির নামও ‘স্মিতা মহল’! সবাই বলে অভিশপ্ত। কিন্তু ঐ পরিত্যক্ত বাড়িটা তে স্মিতা কি করে?

তারপর পেড়িয়ে গেছে বহু বছর। গল্পকথক আর তার বাবা-মা স্থায়ী হয়েছে হীরণমুখি গ্রামে। একদিন গল্পকথক জরুরি কাজে ট্রেনে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। রাতের ট্রেন। ট্রেনে উঠে যেমনি ঘুমানোর আয়োজন করছেন তখনই কে যেন ‘মশাই’ বলে ডাকে। গল্পকথক চমকে উঠেন। এমনভাবে তো শুধু স্মিতা ডাকে।

হঠাৎ গল্পকথক খেয়াল করলেন ট্রেন চলছে না। ট্রেনের বগি মাঝখান থেকে ছিড়ে গেছে। এটা কি স্মিতার কাজ? ‘হ্যাঁ আমি’! তারা ট্রেন থেকে নামে। জানা যায় তারা যেখানে আছে সেটার নাম ‘নীলসাগর’। নামের মতই সুন্দর নাকি গ্রামটা। কিন্তু হঠাৎই ঘটতে থাকে কিছু অলৌকিক অদ্ভুত ঘটনা। স্মিতা নামের মেয়েটা গায়েব! কোথায় সে? গ্রামে নাকি ৩টা কবর খানা আছে। সেগুলোতে ঘটে অদ্ভুত সব ঘটনা। গল্পকথক হাটঁতে হাটঁতে একটা গর্তে পরে যায়। একটা শিশুর মাথার খুলি! বিভীষিকা মত রাতটা কখন শেষ হবে? ট্রেনে তার ব্যাগে আছে একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। সেটা সে কিভাবে পৌছাবে?

বিভীষিকা ময় রাতটা শেষ হয়। গল্পকথক বাড়ি ফিরে যায়। সে আবার কৃষ্ণনগরে পারি জমায় স্মিতার রহস্য বের করতে। মাঝখানে তার ব্যাগের ঐ জিনিসটা হারিয়ে গেছে। ওটা খুঁজে না পেলেও নানা সমস্যা। সে কি পারবে সব গল্পের রহস্য উদঘাটন করতে? কি বা সম্পর্ক তার এসবের সাথে? এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে পড়ে ফেলুন বইটি।

বইটা মূলত পাঠকদের মনে ভয় সৃষ্টির জন্য। অদ্ভুর ঘোর লাগা ভয়। তবে সেটাকে অনুভবের জন একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমারও হয়েছে। বইটা বুঝতে একটু সময় লেগছে। আর গল্পের শুরুটা ছিল চমৎকার। এবং শেষের দিকটাও ভালো লেগেছে। তবে মাঝখানে নীলসাগর গ্রামে অদ্ভুত সেইসব বিভৎস ঘটনা আমার সহ্য হচ্ছিল না।

মনে হচ্ছিল এই রাত কি কখনো শেষ হবে না? নাকি আটকে থাকবে? তবে রাত একসময় শেষ হয়ে দিনের আলো অবশ্যই ফুটে। এ গল্পেও তা হয়েছে। এবং শেষের দিকে এসে সে সব ঘটনার মোটামুটি পর্যাপ্ত বর্ণনা দিয়েছেন লেখক। তবে এখনও অনেক কিছু জানা বাকি।
তাহলে পর্যাপ্ত বলছি কেন? কারণ, এটা একটা সিরিজ। এই সিরিজের তিনটা বই। বকুলফুল, বিড়ালক্ষী ও বাঁশি। সুতরাং লেখক সব রহস্য এক বইয়ে নিশ্চয় ক্লিয়ার করবেন না! তবে যেটুকু দিয়েছেন তা আমার পর্যাপ্ত মনে হয়েছে।

এই বইয়ের গল্পটা ঘুরেছে গ্রামে গ্রামে। প্রথমে কৃষ্ণনগর। তারপর নীলসাগর, হীরণমুখি, রূপনগর…তবে গ্রামীন পরিবেশের বর্ণনা দিয়ে লেখক গল্পটাকেই বেশি প্রধান্য দিয়েছেন। ক্ষেত্রবিশেষে একটু অসস্তি হলেও ব্যাপারটা ভালো লেগছে।

সবশেষে বলবো, একটা স্লো গতির অতিপ্রাকৃত কাহিনী রসিয়ে উপভোগ করতে চাইলে বইটা পড়তে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top