Site icon Book PDF Down.com

চতুরঙ্গের অশ্বারোহী সিদ্দিক আহমেদ PDF download (থ্রিলার)

চতুরঙ্গের অশ্বারোহী সিদ্দিক আহমেদ

পাঠক মহলে সিদ্দিক আহমেদ নামটা খুবই পরিচিত। বিশেষ করে ইতিহাস ভিত্তিক ফিকশন যারা খুব পছন্দ করেন তাদের কাছে। তবে খালি ইতিহাসই নয়, তিনি লিখে মার্ডার মিস্ট্রিও! এছাড়াও একটু ভিন্নভাবে ঐতিহাসিক থ্রিলার থেকে বেড়িয়ে অন্ধকার জগৎ নিয়ে লিখেছেন সেরকম একটি হলো ‘চতুরঙ্গের অশ্বারোহী’। তার অন্যান্য কাজগুলো থেকে একটু আলাদাই। এই অসাধারণ বইটা থেকে বঞ্চিত না থেকে খুব সহজেই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করে পড়ে ফেলতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে।

কাহিনী সংক্ষেপঃ খুলনা শহরের আন্ডারওয়ার্ল্ডের উপাখ্যান চতুরঙ্গের অশ্বারোহী। শহরের দুই প্রান্তের দুই ডন, নাম তাদের মোজাফফর এবং জামশেদ। মোজাফফর নিজে অন্ধকার জগতের বাসিন্দা। এবং সেই অন্ধকার জগতের বাসিন্দাদের নিয়েই অবলীলায় চালায় তার অস্ত্র-স্বস্ত্রের ব্যাবসা। আর জামশেদ নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে করে ড্রাগ সাপ্লাই সহ আরও নানা কার্যক্রম।
সব ঠিকঠাক চললেও হঠাৎ তৃতীয় পক্ষের আগমনে পাল্টে যায় সব! মোজাফফর- জামশেদ আর অন্য তৃতীয় পক্ষের ধূসর চরিত্রের সাথে পাল্লা দিয়ে অনেকটা পুলিশের ইঁদুড়-বেড়াল দৌঁড় কাহিনী এ বই।

তবে একটা মজার ব্যাপার হলো তৃতীয় পক্ষের পরিচয়টা সবার অজানা। একে একে শহরে দোজখ কায়েম করছে চতুরঙ্গে পারদর্শী সেই তৃতীয় পক্ষ। সাব ইন্সপেক্টর হাদী আর তার এসিস্ট্যান্ট কাম কাছের বন্ধু বাবুল কিনারা করতে পারছে না কোনো কিছুরই। থামাতে হবে অবশ্যম্ভাবী গ্যাং ওয়ার। তবে তৃতীয় পক্ষ তার চতুরঙ্গে ‘শাহমাত’ করতে ব্যস্ত, সিদ্ধহস্তও বটে। ফলাফল কী দাঁড়াবে শেষমেশ? আদেও শান্তি নামবে খুলনা শহরে? সব কিছুর উত্তর জানতে হলে পড়ে ফেলুন সিদ্দিক আহমেদের চতুরঙ্গের অশ্বারোহী বইটি।

 

বইটা একটা স্লো বার্নার। চ্যাপ্টার টু চ্যাপ্টার টুইস্ট দিয়ে ডোপামিন রিলিজে সাহায্য করবে না বইটা। ধীর সুস্থ সাসপেন্স থ্রিলার পাঠকদের জন্য মোক্ষম একটা বই!

বইটা লিখতে লেখক বেশ রিসার্চ করেছেন বোঝা যায়। এমনিতেও খুলনা শহরে ডনদের উৎপাত নিয়ে জানেন অনেকেই যারা পত্রিকা পড়েন নিয়মিত। লেখক মোটেই খুব বেশি অতিরঞ্জন করেননি। সত্যটাকে তথ্যের সমাহারে কাল্পনিক কাহিনীতে উপস্থাপন করেছেন মাত্র। চরিত্রগুলোও বাস্তবিক ও বাহুল্যবর্জিত। এছাড়াও বইয়ের ওপেনিং সিনটাও দারুন ছিল। ক্রিকেট জুয়াড়িদের ব্যাপারে বেশ কিছু চলে এসেছে বইয়ের প্রথমেই।

চরিত্রের কথা বলতে গেলে, প্রথমেই বলি হাদী আর বাবুলের জুটি ছিল এই বইয়ের প্রাণ। প্রতিটা ক্যারেক্টারই ছিল ওয়েল ডেভেলপড। দাদা চরিত্র বই শেষেও অন্ধকারে রয়ে গেছে। বইয়ের শেষটা লেখক যেখানে এবং যেভাবে করেছেন তাতে এর দ্বিতীয় কিস্তির একটা আভাস পাওয়া যায়।

এছাড়া ক্রিকেটার সরফরাজ, সাংবাদিক সামিয়ার চরিত্রগুলোও বেশ ছিল। তবে পুরো বইয়ে দাদা চরিত্রের উপস্তিতি সবচেয়ে বেশি থাকলেও তিনি আপাতত অন্ধকারেই রয়ে গেলেন!

ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট খুবই জোশ। ভাল-খারাপ ট্যাগ কারও গায়ে লাগানো সম্ভব না। ক্যারেক্টার সবাই কমবেশি ডার্ক বা গ্রে। আর অসংখ্য চরিত্রের মিশেলে কোনো চরিত্রই হারিয়ে যায়নি চিরতরে। প্রথমে একটু সমস্যা হলেও পরে অসাধারণ বর্ণনায় তা কেটে গেছে।

হাদী আর বাবুলের কারণে সেন্স অব হিউমারের উপস্থিতি ছিল। বাবুলের ‘সব অসল্য কাম খালি আমারে দিয়ে করান লাগবি আপনার’ ডায়লগটা বেশ কয়েকবার হাসিয়েছে।

পাঞ্চিং ডায়লগের উপস্থিতি ছিল বইয়ে বেশ। ‘বুদ্ধি খরচ করলে বুলেট খরচ করা লাগে না’ এর মাঝে বেশ লেগেছে আমার।

দাবার সাথে পুরো গল্পের মিশেলটা একটা দারুন তড়কা হিসেবে কাজে দিয়েছে। বইয়ের শেষ দিকের অ্যানালজিটা তুখোড় ছিল। শেষটা ছিল একদম মানানসই। পুরো গল্পটা যে গতিতে এগিয়েছে সে গতিতেই বইটা শেষ করতে পেরেছেন লেখক।

সবশেষে বলবো, অসাধারণ কোনো একটা হালকা স্লো গতির থ্রিলার পড়তে চাইলে বইটা অবশ্য পাঠ্য।

Exit mobile version