উপন্যাস
ছদ্মবেশ PDF Download সাদাত হোসাইন

‘ছদ্মবেশ’ উপন্যাসটির রচয়িতা হলে ‘সাদাত হোসাইন’। চিরায়ত সাধাসিধা ধরণের উপন্যাস লেখলেও এবার এই লেখক থ্রিলার লিখেছেন। গতানুগতিকতা কে পাশ কাটিয়ে লেখকের এই নতুন উদ্যোগ বেশ ভালোই সফল হয়েছে। যদিও অন্যান্য থ্রিলার উপন্যাসের মত এটি নয়।
সাদাত হোসাইনের নিজের লেখার একটি ধরণ আছে, যা তার অন্য বইগুলোতে লক্ষ্যণীয়। এখানেও তিনি সেই ধারাবাহিকতাই বজায় রেখেছেন। মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক, আর জীবনমুখী ও পারিবারিকতার আধারে তিনি এই উপন্যাসটি রচনা করেছেন। লেখকের অন্যান্য উপন্যাসের মত এই উপন্যাসের কাহিনী তেমন একটা বড় নয়।
অতিরিক্ত দীর্ঘায়িত না করে এবার লেখক উপন্যাসটিকে কিছুটা সুবিন্যস্ত করেছেন এবং অতিরিক্ত কোন বর্ণনা ও চোখে পরেনি। উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালে ‘অন্যধারা প্রকাশনী’ থেকে। উপন্যাসটির মূল উপাখ্যান গড়ে উঠেছে লতিফুর রহমানের বাড়িকে কেন্দ্র করে।
তিনি সম্প্রতি একটি তিনতালা বাড়ি করেছেন সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে। বাড়িতে তিনি বাদে, তার স্ত্রী, কাজের মেয়ে ও সম্প্রতি গ্রাম থেকে এক ছেলেকেও নিয়ে এসেছেন। বাড়ির কাজ এখনও সম্পূর্ণভাবে শেষ হয় নাই। লতিফুর সাহেব চিন্তা করেছেন ভালো ভাড়াটিয়া পেলে তিনি কিছু টাকা অগ্রিম নিয়ে বাকি কাজটুকু সেরে ফেলবেন।
একদিন একজন ভাড়া নেয়ার জন্য আসলে লতিফুর সাহেব তাকে নিয়ে ফ্ল্যাট দেখাতে যান। তিন তলার একটি ফ্ল্যাট দেখানোর সময় হঠাৎ বাথরুম দেখাতে গেলেই চলে আসে বিপত্তি, লতিফুর সাহেব বাথরুমের দরজা খোলার সাথে সাথেই এক বিশ্রী গন্ধ তার নাকে লাগে ভেতরে তাকিয়ে তিনি দেখতে পান এক বিভৎস লাশ।
যেটা অনেকটা পঁচে-গলে গেছে। এই দৃশ্য দেখার পর লতিফুর সাহেব দ্রুতই দরজা বন্ধ করে দিয়ে বের হয়ে আসেন। লতিফুর রহমান ভেবে পান না কিভাবে লাশ এখানে আসলো! বাসাটি সবসময় তালাবদ্ধ থাকে আর চাবি শুধুমাত্রই তার কাছে থাকে। এসব কিছু ভাবতে ভাবতে তার পেট গুলিয়ে আসে, মাথা ভনভন করতে থাকে।
এরপর লতিফুর রহমান করে বসেন এক অকল্পনীয় কাজ। তিনি ভেবে দেখেন, তার বাসায় যদি এই লাশ পাওয়া যায় তাহলে তাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে তাই তিনি লাশটি সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। লাশ সরিয়ে ফেলার পর তিনি তার বাসা ভাড়ার বিজ্ঞপ্তিটিও সরিয়ে ফেলেন।
এটি আবার লক্ষয করেন রেজা সাহেব যিনি কি না আবার একজন পুলিশ। এরপর থেকেই মূলত ঘটনা দ্রুতই পট পরিবর্তন করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে অনেক অজানা সত্য আবিস্কার হতে থাকে। তাহলে সেই লাশটি কার? কেই বা তাকে খুন করেছিল? এসব জানতে হলে পড়তে হবে বইটি। গতানুগতিক ধারার থ্রিলার না হলেও বইটি উপভোগ্য। থ্রিলার এর সাথে মানুষের জীবনের সাধারণ দিকটির মিশ্রণে এক অপূর্ব গল্প তৈরি করেছেন লেখক যা যে কোন পাঠকের ভালো লাগবে।