দান প্রতিদান রবি ঠাকুরের গল্পগুচ্ছ হতে সংগৃহীত একটি অসাধারণ পারিবারিক ছোট গল্প। উপন্যাসটি মূলত দুই ভাই শশীভূষণ ও রাধা মুকুন্দপুর পরিবারের গল্প। তাদের স্ত্রী যথাক্রমে ব্রজসুন্দর রাসমণি কে নিয়ে তাদের সংসার। রাধা মুকুন্দ শশিভূষণের নিজের ভাই নয় বরং সম্পর্কিত ভাই যে বাল্যকাল হতে শশিভূষণের সাথে তাদের পরিবারে বড় হয়েছে।
গল্পটি অত্যন্ত ছোট কিন্তু লেখক এই ছোট গল্পটির মধ্যে যে বিশাল মনস্তাত্ত্বিক ও পারিবারিক বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন তা সত্যি লেখক এর রচনা শৈলী ও অসম্ভব বহিঃপ্রকাশ। দুই ভাইয়ের একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা অসাধারণ ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে তা সত্যি লেখক এর রচনা শৈলীতে আরো অসাধারণ হয়ে উঠেছে।
শশীভূষণ ছিল ছোটখাটো জমিদার তার সমস্ত জমিদারীর দেখাশোনা করতো রাঁধা মুকুন্দ। নিজের ভাই না হয়েও একই বাড়িতে রাধাকুণ্ড স্ত্রী সহ যে ভাবে বসবাস করছিল তাতে শশীভূষণ এর স্ত্রী ব্রজসুন্দর এ সুযোগ পেলেই অপমান ও খাওয়া-পরার খোটা দিত রাসমণি কে। রাসমণি বারবার স্বামীর নিকট এটা নিয়ে বিবাদ করতে চাইলেও রাধাকুণ্ড কখনোই তাকে কলহের কোন সুযোগ দেয়নি কিন্ত মনে মনে খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন ব্রজসুন্দরীর ব্যবহারে।
অল্প কিছুকাল পরেই কাজ না করার অপরাধে জমিদারি শশীভূষণ কেননা সেই সময় সূর্যাস্ত আইন বহাল ছিল। তখন সংসারের হাল ধরে রাধা মুকুন্দ ও মোক্তারি করে অর্থ উপার্জন শুরু করে। এরূপ পরিস্থিতিতে রাতে মুকুন্দ সব সময় সুন্দরীকে সংসারের কর্তী করে রেখেছিল। প্রায় দশ বছরের মাথায় পুনরায় তাদের জমিদারি কিনে নিয়েছিল রাঁধা মুকুন্দ। কিন্তু ততদিনে শশীভূষণ অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মৃত্যুশয্যায় উপনীত হয়।
রাধা মুকুন্দ তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ভাইকে সুস্থ করে তোলার কিন্তু অসুস্থতা অত্যন্ত বেড়ে যায় এবং চিকিৎসক বলে যে শশিভূষণের শেষ সময় অতি নিকটে। সবকিছু জানার পরে রাধা মুকুন্দ শশীভূষণ এর কাছে মাফ চায় কারণ যখন জমির খাজনা পরিশোধের জন্য পাঠানো হয়েছিল রাধা মুকুন্দ নিজের তা লুট করে সর্বস্বান্ত করেছিল শশীভূষণকে।
সে কেন সেই পাপ কাজ করেছিল সেটা খোলসা করে গল্পটিতে না বলা হলেও হয়তো লেখক মানব চরিত্রের রহস্যময় দিকটি তুলে ধরেছেন কিংবা রাঁধা লোভে পড়ে ছিল। সে শশীভূষণ কে তার হারানো সমস্ত সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে চায় তার কাছে মাফ চাই এবং মৃত্যুকালে শশীভূষণ তাকে জানায় সে আগে থেকেই এই কথা জানতো এবং তাকে মাফ করেছে। তার পরেই মৃত্যু হয়ে যায় শশিভূষণের।
রবি ঠাকুরের এই অসাধারণ ছোটগল্পটি আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করেছি শুধুমাত্র আপনাদের জন্য। আপনারা চাইলে যখন তখন আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারবেন আর ডাউনলোড করে নিতে পারবেন রবি ঠাকুরের এই অসাধারণ ছোট গল্পটির পিডিএফ ফাইল সেই সাথে শেয়ার করতে পারেন বন্ধু-বান্ধবদের সাথে।