ঢাকায় ফাগুন’ হাসান ইনামের প্রথম উপন্যাস। নাম শুনে সমকালীন উপন্যাস বলে মনে হতেই পারে, তবে এটি একটি হিস্টোরিক্যাল থ্রিলার। ইউনিক প্লটে লেখা ১৯০ পৃষ্ঠার এই থ্রিলারটি প্রকাশিত হয়েছে ‘বাতিঘর’ প্রকাশনী থেকে। যারা এখনও বইটি পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েব সাইট থেকে বইটির পিডিএফ সংগ্রহ করে পড়ে নিতে পারেন অনায়েসে।
কাহিনী সংক্ষেপ
হাসান মাহফুজ। যে কি-না একজন সাহিত্যক। তার বাসা পুরান ঢাকার ইসলামপুরে। সাহিত্যিক হিসেবে কালজয়ী কিছু একটা লিখতে চান। কিন্তু সেরকম কিছু এখনও লিখতে পারে নি। তাই সেরকম কিছু একটা লেখার জন্য বিভোর হয়ে আছে সে। কিন্তু সেরকম কোনো গল্প লেখার জন্য ঠিক প্লটই পাচ্ছে না। তবে ভাগ্যের ফেরে হঠাৎই একদিন সে পেয়ে যায় চমৎকার একটা ইউনিক প্লট।
তাও সেটা বর্তমানের কারো কাছ থেকে নয়। ১৯৪২ থেকে আসা এক আগুন্তকের কাছ থেকে। কি সেই গল্প? কি সেই ইতিহাস?
হাসান মাহফুজের স্ত্রী সালমা। ক’দিন আগে তার সাথে মোনোমালিন্য হয় হাসান মাহফুজের। স্ত্রী রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ডিভোর্স হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। স্ত্রী চলে যাওয়ার কারনে বাসার কাজের জন্য একটা কাজের মেয়ে দরকার ছিল হাসান মাহফুজের। তাই সে সামনের মদি দোকামদার শহিদুলকে একজন কাজের মেয়ে খুঁজে দিতে বলে। তাকে বিকেলে বাসায় নিয়ে আসার কথা। সেটার জন্যই হাসান মাহফুজ অপেক্ষা করছে। না হলে আরও আগেই বাইরে বেরিয়ে যেত।
যা হোক হঠাৎই কলিংবেলটা বেজে উঠলো। শহিদুল মনে করে স্বাভাবিক ভাবেই দরজা খুলে দিল হাসান মাহফুজ। কিন্তু বাইরে যে দাঁড়িয়ে আছে সে শহিদুল না। কিংবা কাজের মেয়েও না। এক অগুন্তক। অদ্ভুত তার বেশভুসা। বিরক্ত হয়ে হাসান মাহফুজ পরিচয় জিজ্ঞেস করাতে সে ভিতরে আসতে চায়। হাসান তাকে ঢুকতে দেয়। সোফায় বসে আশে পাশে তাকায়, পানি খেতে চাইলে, হাসান পানি নিয়ে এসে দেখে এই কয়েক মিনিটের মাঝে ছেলেটা ঘুমিয়া পিড়েছে। তার দিকে তাকিয়ে ঘুম ভাঙালো না হাসান। সন্ধ্যা হতেই সে নিজেই জেগে ওঠে। তারপর ঘুম থেকে উঠেই আসল খেলা শুরু!
নাম তার জহির। সে এসেছে ১৯৪২ এর আজমীর থেকে! অর্থাৎ সময় ভ্রমন করে! পাগল। এসব আজগুবি কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। হাসানও করে নি। করা উচিতও নয়। কিন্তু ২৪/২৫ বছর বয়সী, হাবাগোবা ছেলেটার বেশভূষা ও কথা বার্তা দেখে যেন কিছুটা বিশ্বাস করে ফেলে হাসান। তারপরই হাসানের মাথায় গল্প লেখার কথাটা আসে। কালজয়ী কিছু লেখার জন্য এর থেকে সুন্দর সুযোগ আর হতে পারে না। সেও কিছুটা আগ্রহ দেখিয়ে গল্পটা শুনে। সারা রাত ধরে চলে এসব। সকাল হতেই সে জহিরকে বেরিয়ে যেতে বলে। জহিরও বেরিয়ে যায়।
তারপর বেশ অনেক দিন পার হয়ে গেছে। হাসান মাহফুজের স্ত্রী সালমা ফিরেও এসেছে। হাসান লিখেও ফেলেছে। প্রকাশও হয়েছে। আশানুরূপ সারা না পেলেও যা পেয়েছে এই করোনা কালে সেটাই অনেক! কিন্তু এখানেই তো সব কিছুর শেষ নয়! কাহিনী তো মাত্র শুরু! জহির হঠাৎই একদিন ফিরে আসে, হাসানকেও সময় ভ্রমন করাই। এর মধ্যে আবার আসে জামিল। আবার শুনা যায় জহির খুন হয়েছে, হাসানকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু কি হচ্ছে এসব? সব কিছুর উত্তর পেতে পড়তে হবে বইটি। কাহিনীর ঘনঘটা নিয়ে যাবে একেবারে শেষ পর্যন্ত!
প্রথম উপন্যাস হিসেবে অনেক ভালো লিখেছেন হাসান ইনাম। ঢাকার অনেক ইতিহাস তুলে ধরেছেন তিনি। কিছুটা সাইন্স ফিকশনের স্বাদ থাকলেও সাইন্সের কচকচানি করেননি। বরং সাবলীল ভাবেই লিখে গিয়েছেন। যেন এসব সবই সম্ভব! এরকম একটা ইউনিক প্লটে লিখতে গিয়ে কিছুটা তালগোল পাকিয়ে ফেললেও কাহিনী শেষ পর্যন্ত নিয়ে আপনাকে যেতেই হবে। এক নিঃশ্বাসে না হোক দুই নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মত একটা বই!
ঢাকায় ফাগুন PDF