Site icon Book PDF Down.com

হাঁসুলী বাঁকের উপকথা PDF Download তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

হাঁসুলী বাঁকের উপকথা PDF Download তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথা’ একটি আঞ্চলিক উপন্যাস। উপন্যাসটির প্রথম প্রকাশকাল ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ। উপন্যাসটিতে ফুটে উঠেছে তৎকালীন গ্রামীণ বাংলার সমাজ জীবন, জমিদারি ব্যবস্থা ও সমসাময়িক সামাজিক ধারণার পরিবর্তনের রূপ। আনন্দবাজার পত্রিকায় ১৯৪৬ সালে উপন্যাসটির প্রথম সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল।

১৯৬২ সালে উপন্যাসটি চলচিত্রে রূপান্তরিত করেন বিশিষ্ট পরিচালক তপন সিংহ। উপন্যাসটির কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে বাঁশবাদী নামক একটি গ্রাম। উপন্যাসটির সূচনা হয় বর্তমানকালের একটি সমস্যা দিয়ে, রাতের আঁধারে বাঁশবনে ভয়ংকর শিষ ধ্বনির মধ্য দিয়ে। অন্যান্য সকল দিনের মতই রাতের বেলা কাহার মজলিস বসেছিল। সেখানকার মূল বক্তা ছিল সুচাঁদ।

হাঁসুলী বাঁকের উপকথা রিভিউ

সুচাঁদের গল্পে বর্তমান সময়ের মাঝে অতীতের ছায়া ভেসে ওঠে। আর গল্পের মাঝেই ওই শিষ ধ্বনিকে সুচাঁদ কাহারদের দেবতার সাবধানবাণী বলে অবিহিত করে। উপন্যাসে কাহারদের দুটি উপবিভাগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, একটি আটপৌরে কাহার অন্যটি বেহারা কাহার। বাঁশবনের ধ্বনির ব্যাপারে বেহারা কাহারদের প্রধান বনওয়ারী সুচাঁদের সাথে একমত পোষণ করে।

এভাবেই শুরু হয় ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথা’ উপন্যাসটির। উপন্যাসটিতে ব্যক্ত হয়েছে তিনটি প্রজন্মের কথা। এই তিন প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীন প্রজন্মের একজন হলো সুচাঁদ। সুচাঁদই সমাজের নিয়ম-কানুন, আচার-ব্যবহার, সংস্কার ও অতীত সম্পর্কে ধারণা দেন। সুচাঁদ বয়েসের দরুন তেমন কাজ করতে না পারলেও যতটুকু পারেন করেন।

হাঁসুলী বাঁকের উপকথা সারাংশ

কেননা, বাঁশবাদি গ্রামে কেউ অন্যের ঘাড়ে বসে খেতে চায় না। সুঁচাদের পরের প্রজন্ম হলো তার মেয়ে বসন্ত এবং তার পরের প্রজন্ম বসন্তের মেয়ে পাখি। বেহারা কাহারদের প্রধান বনওয়ারী হলো বসন্তের প্রজন্মের। বনওয়ারীর স্ত্রী হলো গোপালীবালা। স্ত্রী ছাড়াও বনওয়ারীর জীবনে আরেক নারী আছে যে হলো কালোশশী। কালোশশী হলো আটপৌরে পাড়ার আর বনওয়ারী হলো কাহার পাড়ার। উভয় পাড়ার সকলেই কাহার হলেও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিদ্যমান।

যার ফলশ্রুতিতে বনওয়ারী ও কালোশশীর বিয়ে হয়নি। বনওয়ারীর অন্যতম একটি পরিচয় হলো সে কাহার পাড়ার মাতব্বর। একসময় বনওয়ারী বিয়ে করতে চায় তার মেয়ের বয়সি সুবাসীকে। এই বিষয়টিকে নিয়ে আবার বনওয়ারী ও করালীর মাঝে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। বনওয়ারীর পরের প্রজন্মেরর একজন হলো করালী। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারাবার পর করালী নিজের মত বড় হয়েছে। করালী হলো বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী।

হাঁসুলী বাঁকের উপকথা আলোচনা

সমাজের পুরাতন আচার-আচরণ, রীতিনীতির প্রতি করালী উদাসীন। করালী কখনোই এসব রীতিনীতি মেনেছে কিনা তার মমে নেই। উপন্যাসের কাহিনীর পুরোটা জুড়েই পাঠক লক্ষ্য করবে বনওয়ারী ও করালীর মাঝের দ্বন্দ্ব। বনওয়ারীর ধ্যান-ধারণা করালীর সাথে মেলে না। বনওয়ারী ভাবে সমাজে এতদিন সবকিছু যেভাবে চলে এসেছিল, সবাই তা সেভাবেই মেনে চলবে।

কিন্তু করালী তা মানতে চায় না। করালীর সবকিছুর বিরুদ্ধেই প্রশ্ন করা চাই। উপন্যাসের শুরুতে যেই শিষকে সবাই দেবতার সতর্কবাণী ভেবেছিলো করালী তাও ভুল প্রমাণ করে দেয়। বাঁশবনের মধ্যে একটা বিশাল চন্দ্রবোড়া সাপ মেরে সে সবার সামনে এনে দেয়। উদঘাটিত হয় শব্দের আসল রহস্য।

তারাশঙ্করের উপন্যাস pdf

কিন্তু এই প্রমাণ পেয়েও বনওয়ারী বলেছিলো এটা দেবতার বাহন। আর এভাবেই উপন্যাসের কাহিনী বিস্তৃত হতে থাকে। উপন্যাসটির লক্ষণীয় একটি বিষয় হলো, উপন্যাসটির মূল চরিত্র বলতে কেউ নেই। সকল চরিত্রের মাধ্যমেই উপন্যাসটি পরিপূর্ণভাবে ব্যক্ত হয়েছে। যা লেখকের এই সৃষ্টিকে একটি নতুন মাত্রা দিয়েছে।

হাঁসুলী বাঁকের উপকথা PDF Download

সাধারণত উপন্যাসের এমন রূপ দেখা যায় না, যেখানে সবগুলো চরিত্রই মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। উপন্যাসটিতে লেখক যেভাবে সমসাময়িক বাঙলার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তাও অনন্য এবং নিশ্চয়ই প্রশংসার যোগ্য।

Exit mobile version