Site icon Book PDF Down.com

কিডন্যাপড PDF Download রবার্ট লুইস স্টিভেন্সন

কিডন্যাপড PDF Download রবার্ট লুইস স্টিভেন্সন

‘রবার্ট লুই স্টিভেনসন’ আঠারো শতকের এক জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক। বেশি দিন বাচেঁন নি তিনি। কিন্তু জীবদ্দশায় লিখেছেন কিছু অসাধারন এডভেঞ্চারাস উপন্যাস। তেমনই একটি হলো ‘কিডন্যাপড’। আগাগোড়া এডভেঞ্চারে মোড়া আর কিছু রাজনীতি কিছু থ্রিল নিয়েই এই উপন্যাস তৎকালীন সময়ের এক অসাধারণ এক উপন্যাস।

যা এখনো পাঠকের মনে জাগুরুক। বইটার নতুন পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ করেছেন দীপ্তজিৎ মিশ্র। এই দারুন বইটি না পড়ে থাকলে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

সপ্তদশ শতক। ডেভিড ব্যালফুর। সতেরো আঠারো বছর বয়সী অনাথ ডেভিড ব্যালফুর, মা বাবা হারিয়ে এখন অনাথ সে। মি. ক্যাম্বেলের কথামতো রওনা দেয় ’শ’ জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে। মনে মনে ভাবে এবার বুঝি ভাগ্যটা খুলবে! কিন্তু সেখানে গিয়ে ’শ’ এর জমিদার মি. এবেনজার ব্যালফুর সম্পর্কে কারও কাছে জানতে চাইলে দুর্নামই শুনা যায়। তারপর যখন জমিদার বাড়িতে পৌঁছায়, দেখে অসমাপ্ত অর্ধেক বাড়িটা নিস্তব্ধ। ডেভিড তখনো জানে না তার ভাগ্য মোড় নিবে কোনদিকে!

রহস্যময় এই এবেনজার ব্যালফুর ঠিক কেমন তা ঠাহর করতে পারে না ডেভিড। তবে যতক্ষনে বুঝতে পারে ততক্ষণে বেশ দেরি হয়ে গেছে। কুইন্সফেরির বন্দরে কোভেন্যান্ট জাহাজের ক্যাপ্টেন হোসিয়ানসন এর তত্বাবধানে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ডেভিড বুঝতে পারে তাকে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করা হবে। কিন্তু তাহলে কাহিনী সেখানেই শেষ হয়ে যায়!

জাহাজে একটা দুর্ঘটনার মাধ্যমে ডেভিডের সাথে পরিচয় হয় আল্যান ব্রেক স্টুয়ার্ট এর সাথে। তারপর একটা খন্ড যুদ্ধ, ঘাত প্রতিঘাত, নানা দুর্ঘটনা, আর আল্যান আর ডেভিড এর একরমম অসহায় আর মৃত্যুর হুলিয়া নিয়ে শুরু হয় এডভেঞ্চার। ডেভিড এর গন্তব্য কুইন্সফেরি আর আল্যান যেতে চায় ফ্রান্স। কে জানে কে কোন পর্যন্ত পৌঁছেছিল?!

বহুদিন, বহুদিন বাদে এমন একটা আগাগোড়া এডভেঞ্চারে মোড়া একটা উপন্যাস পড়লাম। তবে নিছক এডভেঞ্চার নয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে তৎকালিন রাজনীতি। রাজনৈতিক বিষয়টা এত ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িয়ে আছে যে সেটা কয়েক লাইনে বলা যাবে না। এছাড়া আছে কতকটা বিশ্বাসঘাতকতাও। রবার্ট লুই স্টিভেনসনের এক অনন্য সৃষ্টি এই ‘কিডন্যাপড’।

সবকিছু ছাপিয়ে একটাই প্রশ্ন তখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল, ডেভিড আর আল্যান তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে তো শেষ পর্যন্ত? আর প্রত্যেকটা অধ্যায়কে একেকটা আলাদা আলাদা নামে ভাগ করা হয়েছে। যাতে করে সুবিধা হয়েছে, এই অধ্যায়ে বুঝি এইবার কিছু একটা ঘটবে! মোট ত্রিশটা অধ্যায়ে বইটা শেষ হয়।

এই ত্রিশটা অধ্যায় যেন একেকটা আলাদা আলাদা এডভেঞ্চার! এত এডভেঞ্চার এডভেঞ্চার করছি কেন সেটা বইটা না পড়ে বুঝতে পারবেন না। কখনো মাঝ সমুদ্রে যাত্রা তো কখনো মাঝরাতে হিথারের ঝোপে লুকিয়ে থাকা। এক কথায় বেশ৷ উপভোগ করেছি প্রতিটা মুহূর্ত! আর শেষটা পড়ে কিছুটা হাহাকার থেকেই যাবে। এছাড়া বইয়ে থাকা লুই রিডারের আঁকা ছবি গুলো যেন এক অনন্য মাত্রা যোগ করেছে।

এবার আসি অনুবাদ প্রসঙ্গে,
অনুবাদ বইয়ের ক্ষেত্রে ‘অনুবাদ’ বিষয়টা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনুবাদ ভালো না হলে সে বই পড়ে কোনো মজাই নেই। এক্ষেত্রে অনুবাদক ‘দীপ্তজিৎ মিশ্র’ পুরোপুরি সফল। ‘অনুবাদকের দু-চার কথা’ মূল কাহিনী শুরুর আগে এই প্যারাটা পড়ার পর পাঠকের মনে একটা বিশ্বাস জন্মাতে বাধ্য যে এই বইয়ের অনুবাদ খারাপ হতে পারে না।

আমি মনে করি সেই বিশ্বাসের দরকার আছে। বইটাতে ডুবে যাওয়ার আরও একটা বড় কারন হলো এর অসাধারণ অনুবাদ। আর অসংখ্য টীকা। এই টীকা গুলো থেকে অনেক কিছু জানতে পারি। আর অনুবাদক ওপার বাংলার হওয়ায় কিছুটা কোলকাতার টান ছিল। যেটা বেশ ভালো লেগেছে। কিছু কিছু যায়গায় অবশ্য আমাকে দুইবার পড়তে হয়েছে। একটু অপটু লেগেছে, অনুবাদককেও জায়য়গা গুলোর বর্ণনা দিতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বুঝা যায়।

সবশেষে বলবো, সব বয়সী পাঠকরাই এই উপন্যাস উপভোগ করবেন, আর এডভেঞ্চার প্রেমিরা কিছুতেই মিস করবেন না যেন!

Exit mobile version