Site icon Book PDF Down.com

কবি PDF Download তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

কবি PDF Download তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

‘কবি’ উপন্যাসটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সামাজিক উপন্যাস। উপন্যাসটি ১৯৪৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এর প্রকাশক বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। বাংলা সাহিত্যে রচিত প্রেমের উপন্যাসগুলোর মধ্যে তারাশঙ্করের ‘কবি’ রয়েছে তালিকার একদম উপরের দিকে। গ্রামবাংলার কবিগান ও ঝুৃুমুর দলের মানুষের জীবনযাত্রা এবং তাদের জীবনের নানা ওঠা-পরা কে মূল উপজীব্য করেই রচিত হয়েছে এই উপন্যাস।

উপন্যাসের মূল চরিত্র হিসেবে পাঠক দেখতে পাবেন নিতাই কে। যার জন্যই এই উপন্যাসের নামকরণ করা হয়েছে কবি৷ তাকে ঘিরেই এগিয়ে গেছে উপন্যাসের কাহিনী। এছাড়াও অন্যতম কিছু প্রধান চরিত্র হিসেবে রয়েছে ঠাঁকুরঝি, বসন্ত, মাসীর মতো কিছু চরিত্র। উপন্যাসের নায়ক নিতাই এর জন্ম অত্যন্ত ছোট একটি জাতে।

তারাশঙ্করের কবি উপন্যাস pdf

তাদের বংশের সকলে দূর্ধর্ষ ডাকাত হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু নিতাই এর এসব ভালো লাগে না। নিচু জাতে জন্মগ্রহণ করলেও মনটা তার অনেক বড়। সে মানুষকে ভালো বাসতে জানে, মানুষকে ভালোবেসে গান বাঁধতে জানে।ছোট থেকেই তার আগ্রহ জন্মায় কবি গানের প্রতি। মুখে মুখে গান বেঁধে গ্রামের সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয় নিতাই।

তার নিজের জাতের লোকেরাও অবাক হয়ে যায়। সে কবিয়ালদের দোহার হিসেবে কাজ শুরু করে।কিন্তু একদিন এক কবিগানের আসরে কবিয়াল না আসায় ডাক পরে তার। সেই আসরে নিতাই অভিজ্ঞ কবিয়াল মহাদেব এর কাছে হেরে গেলেও পুরো গ্রামের লোক কে তাক লাগিয়ে দেয়৷ গাঁয়ের মানুষ ভাবতে থাকে ডোমের ছেলে নিতাই এত ভালো গান কিভাবে বাঁধতে পারে। এ যেন গোবরে পদ্মফুল।

প্রশংসার পাশাপাশি অনেক টিটকিরি-টিপ্পনি ও শুনতে হয় নিতাই কে। গ্রামের অনেকে যেমন “ডোমের ছেলের কবি” বলে ব্যাঙ্গ করতে থাকে তেমনই বিভিন্ন কবি গানের আসরে গিয়েও তাকে প্রতিপক্ষের কাছে শুনতে হয় অশ্লীল অশ্রাব্য ভাষা। এ সবকিছুর কারণই তার নিচু জাত। নিতাই নিচু জাতের হলেও এবং প্রতিপক্ষের কাছে অপমানিত হলেও কখনো খারাপ ভাষা ব্যবহার করে না।

তার কারণ সে এই পেশাকে ভালোবাসে এবং সম্মান করে। মা এবং মামাদের অত্যাচারে সে একসময় বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। কারন তার মা এবং মামারা চাইতো সে পড়ালেখা এবং কবিগান ছেড়ে ডাকাতির দলে নাম লেখাক। কিন্তু নিতাই তা মেনে নিতে পারেনি। তাই সে বাড়ি ছেড়ে স্টেশনে গিয়ে থাকতে শুরু করে। সেখানেই তার বন্ধুত্ব হয় স্টেশন মাস্টার রাজার সাথে।

রাজা সেখানে তার থাকার সব বন্দোবস্ত করে দেয়। সেখানেই রাজার শ্যালিকার সাথে নিতাইয়ের পরিচয় হয়।রাজা তার শ্যালিকা কে ঠাকুরঝি বলে ডাকে তাই নিতাইও তাকে ঠাকুরঝি বলেই ডাকে৷ ঠাকুরঝি ছিলো পাশের গ্রামেরই এক বাড়ির বউ। সে ছিলো কমবয়সী,ছিপছিপে, কৃষ্ণবর্ণের এক তরুণী।

তারাশঙ্করের উপন্যাস pdf

সদা হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত এই তরুনীটির সাথে খুব কম সময়েই নিতাইয়ের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে৷ নিতাই এই কিছুদিনে কয়েকটা কবিগানে অংশ নিয়ে বেশ নাম ডাক ও পায়। ঠাকুরঝিও ছিলো তার কবিগানের ভক্ত। ঠাকুরঝি কে একদিন তার গায়ের রং নিয়ে ঠাট্টা করা হলে নিতাই গান বাঁধে “কালো যদি মন্দ তবে কেশ পাকিলে কান্দো কেনে/ কালো কেশে রাঙা কুসুম হেরেছো কি নয়নে।” এই গানটি সকলের মন ছুঁয়ে যায়।

একসময় নিতাই ও ঠাকুরঝি একে অপরকে ভালোবেসে ফেলে। কিন্তু এখানে রয়েছে সামাজিক অনেক বাধা। রাজা ঠাকুরঝির সাথে নিতাই এর বিয়ে দিয়ে দিতে চাইলেও নিতাই রাজি হয় না। জানায় সে ঠাকুরঝির সংসার ভেঙে দিতে পারবে না, বরং সে ওখান থেকে চলে যাবে। ইতোমধ্যে নিতাই এর সাথে পরিচয় হয় এক ঝুমুর দলের।

সে ঝুমুর দলের সাথে গান গাওয়ার আহ্বান পায় এবং তাদের সাথে বেরিয়ে পরে। ঝুমুরদল মূলত অশ্লীল গান এবং নাচের দল হলেও নিতাই তাদের ডাক উপেক্ষা করতে পারে না। ঝুমুর দলের সাথে গান গাইতে গাইতে সেই দলের প্রধান নর্তকী ও গায়িকা বসন্তের প্রেমে পরে যায় নিতাই৷ নর্তকী ও দেহোপজীবিনী এই মেয়েটির মধ্যে সে এক সরল নারী হৃদয়ের খোঁজ পায় ৷

বসন্তও ভালোবেসে ফেলে নিতাইকে৷ এভাবে চলতে থাকে বেশ কিছুদিন। কিন্তু এই আনন্দও নিতাই এর জীবনে দীর্ঘস্থায়ী হয় না। নিতাই এর জীবনে নেমে আসে দুঃখের কালো ছায়া। তারপর কী হয় নিতাই এর জীবনে? সে কি আর কোনোদিন তার ঠাকুরঝির দেখা পায়? সে কি পায় একজন কবিয়ালের মর্যাদা? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে পাঠককে পড়তে হবে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর কালজয়ী সৃষ্টি ‘কবি’ উপন্যাসটি।

কবি PDF Download

লেখকের অসাধারণ বর্ণনাশৈলীর কারণে পাঠক নিতাই এর জীবনের প্রতিটি ঘটনার সাথে একাত্মতা অনুভব করতে পারবেন,বুঝতে পারবেন কবি নিতাইকে দিয়ে লেখক কেন বলিয়েছিলেন “জীবন এত ছোট কেনে”।

Exit mobile version