Site icon Book PDF Down.com

লালসালু PDF Download সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ

আপনি যদি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত লালসালু উপন্যাসের পিডিএফ ভার্সনটি ডাউনলোড এর জন্য আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করেন তাহলে আপনাকে স্বাগতম। কারণ আমাদের ওয়েবসাইট থেকেই আপনি বইটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। কিভাবে বইটি ডাউনলোড করতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের লেখাটির সম্পূর্ণ পড়তে হবে।

লালসালু উপন্যাসের কাহিনী সংক্ষেপ ও বূক রিভিউ

‘লালসালু’ উপন্যাসটির রচয়িতা সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ। উপন্যাসটির প্রথম প্রকাশকাল ১৯৪৮ সাল, দ্বিতীয় প্রকাশকাল ১৯৬০ সাল। উপন্যাসটির মূল উপজীব্য ১৯৪০ কিংবা ১৯৫০ এর দশকের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠলেও উপন্যাসটির কাল থেকে কালান্তরে একটি আবেদন আছে যা কখনোই মুছবার নয়।

উপমহাদেশের গ্রামীন সমাজের মানুষের সরলতাকে কেন্দ্র করে ধর্ম ব্যবসা গড়ে ওঠার এক অতি কঠিন সত্য লেখক তার এই উপন্যাসটিতে তুলে ধরেছেন। উপন্যাসটি ঢাকার কমরেড পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। উপন্যাস প্রেমীদের মাঝে লেখনীটি লেখকের শ্রেষ্ঠতম কৃতি হিসেবে বিবেচিত হয়।

এই উপন্যাসের জন্য লেখক ১৯৬১ সালে বাংলা একাডেমি পুরষ্কার লাভ করেন। লেখকের এই উপন্যাস পরবর্তীতে ইংরেজি, ফরাসি, চেক ও জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়।

‘লালসালু’ একটি সামাজিক উপন্যাস হিসেবে পাঠক সমাজে পরিচিত। সামাজিক কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোড়ামীকে ভিত্তি করে, কালের বিবর্তনে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ ধর্মের মূলধারা থেকে সমাজকে বিচ্ছিন্ন করে কিভাবে ধর্ম ব্যবসা গড়ে তুলে উপন্যাসটিতে তাই বর্ণিত হয়েছে শৈল্পিক রূপে।

সমসাময়িক সময়ের মানুষের জীবনের অজ্ঞতা, দুঃখ, বৈকল্য নতুন এক আঙ্গিকে বর্ণিত হয়েছে ‘লালসালু’তে। কালে কালে পূর্ব বাংলার সরল গ্রামীন সমাজ যেই কপটতা ও মিথ্যার শিকার হয়েছেন, তাই উপন্যাসটিতে শৈল্পিক রূপে ব্যক্ত হয়েছে।

উপন্যাসটির কাহিনী গড়ে উঠেছে মজিদ নামের এক স্বার্থান্বেষী ভন্ড ধর্ম ব্যবসায়ীকে কেন্দ্র করে। যে কিনা জীবন-জীবিকার সন্ধানে মহব্বতপুর নামক গ্রামে উপস্থিত হয় এবং খুব সহজেই ধর্ম ব্যবসা গড়ে তুলতে সমর্থ হয়। কেননা সেই গ্রামে, ‘শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের চেয়ে আগাছা বেশি।’

উপন্যাসের শুরুটা হয় যথেষ্ট নাটকীয়তার সাথে, মজিদ নিজের শস্যহীন অঞ্চল হতে বেড়িয়ে পরে জীবিকার সন্ধানে মাঝেই সে লক্ষ্য করে এই মহব্বতপুর গ্রামটিকে। মজিদ এই গ্রামের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে নিজের প্রভাব বিস্তারে মনোযোগী হয়।

মজিদকে সবার প্রথমে দেখতে পায় তাহের ও কাদের, তারা মাছ ধরার সময় লক্ষ্য করে মতিগঞ্জের সড়কের উপর মূর্তির মতো কেউ মোনাজাত করছে। এরপর ধুরন্ধর মজিদ গ্রামে ঢুকে সে ঘাঁটি গেড়ে বসে মাতব্বর খালেক ব্যাপারীর বাড়িতে। গ্রামের অদূরেই যে বাঁশঝাড় সংলগ্ন একটি কবর ছিলো তা মজিদের নজরে আসে।

সে জানতে পারে গ্রামবাসী জানে না কবরটা কার এবং জানার আগ্রহ কেউ পায় নাই এতোদিন। তারপর একদিন লোক জমায়েত করে মজিদ প্রচার করে এই কবরটি এক ‘মোদাচ্ছের’ (নাম না জানা) পীরের, সেই পীর মজিদকে স্বপ্নে এই কবরের সন্ধান দেয় এবং এই কবরের তদারকির জন্যই মজিদ গ্রামে আগমন করেছে তা জানায়।

এসব জানানোর পরপরই মজিদ গ্রামবাসীকে তিরস্কার করা শুরু করে এবং জাহেল, বে-এলেম বলে সম্বোধন করে। স্বপ্নের বিবরণ ও মজিদের তিরস্কারে বিচলিত হয়ে গ্রামবাসী শ্রদ্ধায় ভয়ে নতজানু হয়ে যায়।

আগাছা জঙ্গলে আবেষ্টিত কবরটি দ্রুতই পরিস্কার করে ঝালরযুক্ত লালসালুতে ঢেকে যায়। কবরটি কিছুদিনের মাঝেই পরিণত হয় মাজারে, আর তার খাদেম মজিদ হয় মাজারের একচ্ছত্র অধিপতি।

মাজার ব্যবসা দিনে দিনে ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকে। গ্রামবাসীরা সেখানে দেদারসে টাকা-পয়সা দিতে থাকেন। দিন-রাত সবসময়ই মাজারের ভিতর মোমবাতি আগরবাতি জ্বলে কোন সময় নিস্তার নাই। মাজারের সাথে গ্রামবাসীদের কাছে প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে মজিদের।

বিভিন্ন ভেলকিবাজি দেখিয়ে মজিদ গ্রামবাসীদের বোঝাতে সক্ষম হয় সে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী। ধীরেধীরে সে গ্রামের সকলের দৈনন্দিন জীবন থেকে বিচার-সালিশে প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ব্যক্তিতে পরিণত হয়।

গ্রামের মাতব্বর খালেক তাকে সমীহ করা শুরু করলে মজিদের আধিপত্য নতুন মাত্রা লাভ করে সে মানুষের পারিবারিক জীবন, দাম্পত্য জীবনেও প্রভাব খাটাতে শুরু করে। যাকে নিয়ে যেভাবে ইচ্ছা ছেলে খেলা শুরু করে।

কারো কোন কার্যক্রমে মজিদের আত্মসম্মানে আঘাত লাগলে তার আর নিস্তার ছিলো না।
ভন্ড মজিদ কিভাবে সরল গ্রামবাসীর ধর্মবিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে নিজের আখের গুছিয়ে তোলে তার বর্ণনাতেই এই উপন্যাস সমৃদ্ধ।

বাংলা সাহিত্যের একটি অতুলনীয় সংযোজন এই উপন্যাস। সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর পিতা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, সেই সুযোগেই পিতার সাথে বাংলাদেশের বহু প্রান্ত ঘোরার ফলে লেখক যেই অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন তা থেকেই উপন্যাসটির সৃষ্টি।

উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের হলেও উপন্যাসের মূল বিষয় বস্তু চিরকাল জীবন্ত হয়ে থাকবার মতো, আমরা যতই আধুনিক হই না কেন কিছু না কিছু মানুষ আমাদের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিতে চায়।

কুসংস্কার যেভাবে আমাদের বোধ-বুদ্ধি ও সচেতনতাকে ঢেকে দেয়, লালসালু ও ঠিক তেমনি পীরের কবর আবৃত করার মধ্য দিয়ে গ্রামবাসীর সচেতনতাও ঢেকে গিয়েছিলো। তাই এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু কখনই পুরোনো হবার নয়। এ এক কালোত্তীর্ণ সৃষ্টি।

লালসালু উপন্যাস পিডিএফ ডাউনলোড

বাংলা সাহিত্যের অসামান্য অবদান লালসালু উপন্যাস ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের পাঠকদের সুবিধার্থে আমরা তা আমাদের ওয়েবসাইটে শেয়ার করলাম। বইটি ডাউনলোড এর জন্য নিচে প্রদত্ত লিংকে ক্লিক করুন।

বইটি আপনার কেমন লেগেছে তা জানিয়ে কমেন্ট করতে পারেন। এছাড়াও সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত আর কোন বইটি আপনি বিনামূল্যে পেতে চান তা জানিয়ে মন্তব্য করতে পারেন। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করব বইটি প্রকাশ করার জন্য। আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Exit mobile version