Site icon Book PDF Down.com

মা, মা, মা এবং বাবা PDF Download আরিফ আজাদ

মা, মা, মা এবং বাবা বইটি লিখেছেন তুমুল জনপ্রিয় লেখক আরিফ আজাদ। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ 176। বইটির মুদ্রিত মূল্য 230 টাকা। বইটি 2018 সালে সমকালীন প্রকাশনী থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়।

বইটির নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে যে বইটি আমাদের জন্মদাত্রী মাতা এবং পিতা সম্পর্কে বলা এবং লেখা হয়েছে। তিনবার মা শব্দটি আনা হয়েছে এই কারণে যে মাকে পিতার চাইতে অধিক সম্মান প্রদান করা হয়েছে এবং খেদমতের দিক থেকে আমাদের বেশি পরিমাণ সম্মান করতে হবে।

কেন মাতা পিতার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে হবে তা এই বইটি পাঠ করলেই আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো।

আমরা এখন বিভিন্ন মানুষ,বিভিন্ন জন, বিভিন্ন চরিত্রে এই পৃথিবীতে বসবাস করছি। আমাদের এই অস্তিত্ব এক সময় ছিল না। মায়ের গর্ভে আমরা একসময় অস্তিত্ব লাভ করি এবং মায়ের বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা শিকারের মাধ্যমে আমরা এই পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়।

মাতা গর্ভে দশ মাস রাখেন এবং আমাদেরকে পরম যত্নে লালন করেন। দুনিয়াতে আসার আগ থেকে শুরু করে দুনিয়াতে আসার পরেও পর্যন্ত তিনি আমাদের দেখভাল করেন। আমাদের ভালো-মন্দে তিনি সবসময়ই অংশীদারিত্ব করেন।

গর্ভে থাকা অবস্থায় যে কষ্ট সহ্য করেন তা অন্য কেউ পারবেনা। আবার ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে আমাদের মানুষ হওয়ার পেছনে যতটা ভূমিকা রাখেন তা কেউই রাখবেন না। তাই পবিত্র ধর্ম ইসলামে মাকে অধিক সম্মান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

শুধু তাই নয় আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ আমাদের জীবনে বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পিতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই মা-বাবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন, মা বাবার খেদমত,মা-বাবাকে ভালোবাসা, মা-বাবাকে দেখা শোনা ইত্যাদি বিষয়গুলো লেখক আরিফ আজাদ তার কলমের আঁচড়ে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন।

বইটিতে জীবন থেকে নেওয়া নামক অধ্যায়ে বিভিন্ন ঘটনার সম্মেলন ঘটিয়েছেন এবং পরবর্তী অধ্যায় কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিভিন্ন ঘটনা তুলে এনেছেন।

দুনিয়ার জীবনে আমরা মা-বাবার খেদমত করি, মা-বাবাকে দেখভাল করে মা-বাবার যত্ন নিই। আবার অনেকে এ বিষয়গুলো থেকে অনেক দূরে। তারা মা-বাবাকে দেখেন অন্য চোখে। কিন্তু তারা যে কি পরিমান ভুলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন তা তারা জানেন না।

তারা দুনিয়াবী জীবন পার করছেন তারা নিজেরাই জানেনা। বইটির প্রথম অধ্যায় একজন মায়ের খোলা চিঠি থেকে আমরা বুঝতে পারি যে একটা মা তার গর্ভের সন্তান এর জন্য কি পরিমান কষ্টের এবং জন্ম দেওয়ার এবং পৃথিবীর মুখ দেখার পরে তাকে মানুষ করার জন্য কি পরিমান ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করেন। তার জন্য আমরা সন্তান হিসেবে অনেকেই অনেক কর্তব্য পালন করি।

অনেকে মনে করি যে আমরা আমাদের মায়ের ঋণ শোধ করতে পেরেছি। কিন্তু না ঋণ কখনোই শোধ হবার নয় এই ঋণ কোন কিছুর মাধ্যমে শোধ হবে না। অনেকেই মনে করে থাকেন যে যেহেতু আমি আমার পিতা মাতার খেদমত করছি সেহেতু আমি আমার পিতামাতার ঋণ শোধ করতে পেরেছি। কিন্তু এটা একদমই ভুল ধারণা।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের পিতা মাতাকে সন্তুষ্ট রাখতে হবে এবং সেই সন্তুষ্টচিত্তে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করব এটাই আমাদের লক্ষ্য। বইটির একটি অধ্যায়েএক বৃদ্ধা সমুদ্র তীরে বসে থাকেন। অন্য একটি দলের লোক বৃদ্ধাকে দেখে প্রশ্ন করেন আপনি এখানে কেন বসে আছেন।

বৃদ্ধা বলেন তার ছেলে তাকে নিতে আসবে এবং তাকে একটি চিরকুট দেখায়। লোকটি চিরকুট পড়ে বুঝতে পারে তার ছেলে তাকে আর ফেরত নিতে আসবে না এবং চিরকুটে লিখে যে যিনি চিরকুটটি পাঠ করবেন তিনি যেন তাঁর মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসেন।

এটা একটা মুসলিম সন্তানের জন্য কি পরিমান ধিক্কারজনক কাজ তা তার সন্তানটি জানতো না। একটা কুকুরকে খেতে দিলে সে আজীবন তার মনিবকে মনে রাখে। কিন্তু একজন মানব সন্তান হয়ে এরকম জঘন্যতম কাজ একেবারেই সাজেনা।

আমাদের সমাজে এরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে এসব ঘটনার কোন প্রতিকার নেই। আমাদের ঘুনে ধরা মানসিকতা এর জন্য দায়ী। আধুনিকতা আমাদের এই সমস্যার মূলে দায়ী। তাই এসব চিন্তাভাবনা, মানসিকতা ভুলে গিয়ে আমরা আমাদের পিতামাতাকে সর্বদা ভালো চোখে দেখবো, ভালবাসার চোখে দেখবো। পিতা-মাতা যেমন ছোটবেলার অসংখ্য আবদার এবং বড় বেলার অসংখ্য আবদার আমাদের পূরণ করেছেন তেমনি আমরাও তাদের মনের কথাটা কে জানার চেষ্টা করব এবং সেই কথাটার গুরুত্ব দিয়ে তা পূরণ করব।

একটা কথা মনে রাখব তারা আমাদের কোনো ক্ষতি চান না। তারা সব সময় আমাদের ভালো চান। তারা কি বলতে যাচ্ছেন তা আমাদের মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে ,হয়তো সেই কথার মধ্যেই আমাদের স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনের পথ লুকায়িত আছে। তাই আমরা তাদের সবসময়ই ঠিকমতো মুল্যায়ন করবো।

এক ইয়েমেন তার মাকে কাঁধে করে অনেক সময় বয়ে নিয়ে বেড়ালেন এবং তাকে ভ্রমণ করে নিয়ে বেড়ালেন। ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহা কে জিজ্ঞেস করলেন যে আমি আমার মাকে অনেকদিন ধরে বহন করে বেড়াচ্ছি অর্থাৎ তিনি যতদিন আমাকে গর্ভে ধরেছেন তার চাইতেও বেশি।

এতে আমার ঋণ শোধ হয়েছে কিনা? তার উত্তরে উমার বলেন যে তার মায়ের একটা দীর্ঘশ্বাস পরিমাণ ঋণ শোধ হয়নি। আসলে আমরা অনেকেই মনে করি যে পিতা মাতার খেদমত করে আমরা বিশাল কিছু করে ফেলেছি‌। তাই এই মানসিকতা পরিহার করে তাদের আরও খেদমত করবো তাদের দেখাশোনা করব এবং তাদেরকে সর্বোচ্চ সন্তুষ্টিতে রাখবো।

আমাদের চাওয়া পাওয়া, দুয়ার একমাত্র বিষয়বস্তু হবে মাতা পিতা। মাতা-পিতার মাধ্যমে আমরা লাভ করব কাঙ্খিত জান্নাত।তাই আমরা আমাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার এর মাধ্যমে মাতা-পিতার আনুগত্য স্বীকার করব।

Exit mobile version