Site icon Book PDF Down.com

ন হন্যতে PDF Download মৈত্রেয়ী দেবী ও লা লুই বেঙ্গলী PDF

ন হন্যতে PDF Download মৈত্রেয়ী দেবী

‘ন হন্যতে’ বইটির লেখক মৈত্রেয়ী দেবী। বইটি ১৯৭৩ সালে লেখা হয় এবং প্রকাশিত হয় ১৯৭৪ সালে। লেখক মৈত্রেয়ী দেবী তাঁর এই বইটির জন্য ১৯৭৬ সালে সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার পান। উপন্যাসটিকে আত্মজীবনীমূলক লেখাও বলা যেতে পারে কারণ মৈত্রেয়ী দেবীর নিজস্ব জীবনকাহিনীর ওপর ভিত্তি করেই বইটি রচিত হয়েছে।

ভারত ও বাংলাদেশে এই বইটির জনপ্রিয়তা এখনো তুঙ্গে। রোমান দার্শনিক মির্চা ইউক্লিডের লেখা রোমান বই ‘লা নুই বেঙ্গলি’র প্রতিক্রিয়া হিসাবে এই বইটি লিখেছিলেন মৈত্রেয়ী দেবী৷ মির্চা ইউক্লিড এবং মৈত্রেয়ী দেবীর মধ্যে একটি প্রেমের সম্পর্ক ছিলো৷ মির্চা তাঁর ‘লা নুই বেঙ্গলি’ বইটি তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে লিখেছিলেন।

ন হন্যতে উপন্যাস

১৯৫০ এ প্রকাশিত এই বইটিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। সেই বইটিরই কিছু কথা সত্য না হওয়ার কারণে মৈত্রেয়ী দেবী প্রতিবাদস্বরুপ এবং আসলে কী ঘটেছিলো এটা পাঠককে জানাতেই এই বইটি রচনা করেছিলেন। চল্লিশ বছর আগের স্মৃতিচারন নিয়েই এই বইটির যাত্রা শুরু৷ পাঠক শুরুতেই দেখতে পাবেন স্বামী, পুত্রসহ পুরো পরিবার পরিজন নিয়ে বেষ্টিত থেকেও লেখিকা কিসের জন্য যেন অন্তর্জালায় জ্বলছেন।

ন হন্যতে গল্প

তিনি বর্তমানের মাঝে থেকেও যেন নেই। তিনি বারবার ফিরে যাচ্ছেন ৪০ বছর আগের অতীতে। সেখানে পাঠক দেখতে পাবেন লেখিকার যখন ১৬ বছর বয়স তখন তাঁর পিতার কাছে ছাত্র হিসেবে আসে এক ফরাসী ছাত্র। সেই ছাত্রই হচ্ছেন মির্চা ইউক্লিড। লেখিকার বাবা সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত ছিলেন বিখ্যাত ভারতীয় দার্শনিক এবং পন্ডিত ব্যক্তি। সেই সূত্রে তাদের বাড়িতে বিভিন্ন বিখ্যাত পন্ডিত ব্যক্তি এবং কবিসাহিত্যিকদের যাতায়াত ছিলো।

এমনকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও এই বাড়ির সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। লেখিকার পন্ডিত পিতার কাছে শিক্ষা অর্জনের উদ্দ্যেশ্যেই মির্চা ইউক্লিডের আগমন ঘটেছিলো এই বাড়িতে। মির্চা ইউক্লিড ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং বুদ্ধিমান তরুণ। তিনি মনে প্রাণে ভারতীয় সংষ্কৃতি আয়ত্ব করার চেষ্টা চালিয়ে যান। তাই তিনিও সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছিলেন।

ন হন্যতে Meaning

অন্যদিকে কন্যা রু মানে মৈত্রেয়ী দেবী কে নিয়েও তাঁর পিতার গর্বের অন্ত ছিলো না। তিনি চেয়েছিলেন রু কে গড়ে তুলবেন সম্পূর্ণ আলাদা শিক্ষায়। তৎকালীন সমাজের আর দশজন মেয়ের মতো তাঁকে শুধু রান্নাঘর আর সংসারের জালেই আটকে রাখবেন না। সমানতালে পারদর্শী করে তুলবেন দর্শন, জ্ঞান বিজ্ঞান এবং শিল্পসাহিত্যে।

রু ও পিতার এই আশা পুরণের পথেই এগোচ্ছিলেন। তিনিও অত্যন্ত বুদ্ধিমতী ছিলেন। তাই নিজ কন্যা রু এবং মির্চা ইউক্লিড কে নিয়ে সুরেন্দ্রনাথ খুব গর্ব করতেন। তারা দুইজন যেন ছিলেন সুরেন্দ্রনাথের ভান্ডারের সবচেয়ে দামী দুইটি রত্ন। এদিকে লেখিকাদের পরিবারটি তৎকালীন প্রথায় বিশ্বাসি না হওয়ার কারণে রু এবং মির্চা ইউক্লিডের মেলামেশায় কোন বাঁধা ছিলো না।

ন হন্যতে Quotes

তারা পরস্পর বন্ধুর মতোই মিশতেন, একসঙ্গে পড়ালেখা করতেন। এই বন্ধুত্ব একসময় প্রেমে পরিণত হয়। তারা দুজন পরস্পরকে ভালোবেসে ফেলেন। লেখিকা একটা জায়গায় উল্লেখ করেছেন,”জ্ঞানের আলো,বুদ্ধির আলো ইত্যাদি সবকিছুর একটা সীমানা আছে কিন্তু প্রেমের আলোর সীমানা নেই।” সত্যিই তাই।

এজন্যই ১৯৩০ সালেও ভারতীয় সম্ভ্রান্ত এক হিন্দু পরিবারের কন্যা ভালোবেসে ফেলেন ভিনদেশী এক আশ্রিত কে। এই কথা জানতে বাকি থাকেনা সুরেন্দ্রনাথের। তিনি জানামাত্রই মির্চাকে বাড়ি ছাড়ার আদেশ দেন।মির্চা সেই বাড়ি ছেড়ে কিছুদিন সন্ন্যাস যাপন করেন। অতঃপর নিজ দেশে ফিরে যান। নিজ দেশে ফিরে গিয়ে তিনি রু এবং তাদের সম্পর্ক নিয়ে একটি বই লেখেন।

ন হন্যতে Price

বইটি সম্পর্কে লেখিকা তখনও অবগত ছিলেন না। ১৯৩৮ সালে তার পিতা ইউরোপ সফরে গেলে তিনিই এসে তাঁকে এই বই সম্পর্কে জানান। তখন তিনি বইটির ফরাসী অনুবাদটিকে এক বন্ধুর সাহায্যে ইংরেজি তে অনুবাদ করে পড়েন এবং দেখতে পান মির্চা এখানে তাদের শারীরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন যা কখনো ঘটেই নি।

তিনি খুব মর্মাহত এবং ক্ষুব্ধ হন৷ এবং সংকল্প করেন তিনি মির্চার কাছে জানতে চাইবেন যে সে কেন এই মিথ্যাচারটি করেছে। এই কাহিনী নিয়েই এগিয়ে যেতে থাকে উপন্যাসের গল্প। লেখিকা বইটিতে এত চমৎকার করে সবকিছুর বর্ণনা দিয়েছেন তাতে পাঠক প্রতিটি ঘটনাই নিজের অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করতে পারবেন৷ লেখিকা দেখিয়েছেন কিভাবে একটি আধুনিক এবং সংষ্কৃতিমনা পরিবারও জাত্যাভিমানের উর্ধ্বে উঠে তাদের সম্পর্কটাকে মেনে নিতে পারেনি৷

Na Hanyate PDF Free Download

বইটি পড়ার এক পর্যায়ে এসে পাঠকের মনে হতে থাকে আবার এত বছর পর কি সত্যি দেখা হবে মির্চা আর রু এর? দেখা হলেও কী ঘটবে সেখানে? এইসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্যই পাঠক শেষ পর্যন্ত আগ্রহ সহকারে বইটির সাথে থাকবেন। প্রেম-বিরহ,অভিমানের সমন্বয়ে সৃষ্ট এই বইটি বছরের পর বছর বাংলা উপন্যাস প্রেমীদের মনে দাগ কেটে চলেছে।

Exit mobile version