বাংলাদেশের স্বনামধন্য একজন লেখক হলেন মোশতাক আহমেদ। তিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশেষ ভাবে সমৃদ্ধ করেছে তার বিভিন্ন রচনার মধ্য দিয়ে। তার লেখাগুলো পাঠকদের কাছে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন সেখানে পাঠকরা তাকে হুমায়ূন আহমেদ এর পরের স্থান দিয়েছে। তার লেখাগুলো ছোট থেকে বড় সব বয়সী পাঠকরাই মনের খোরাক মেটানোর জন্য পড়ে থাকে। তিনি সব সময় তাঁর রচনায় সহজ-সরল ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করেন। তার বিখ্যাত সব উপন্যাসের মধ্যে “নক্ষত্রের রাজারবাগ” উল্লেখযোগ্য।
“নক্ষত্রের রাজারবাগ” মোশতাক আহমেদের একটি জনপ্রিয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস। বইটি প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয় 2020 সালে। বইটি হার্ডকভার এ ছাপা হয়েছে। বইটিতে মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা রয়েছে 320 টি। বর্তমান বাজারে বইটির মুদ্রিত মূল্য হল 428 টাকা।
কাহিনী সংক্ষেপ:
উপন্যাসটি মোশতাক আহমেদ মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে রচনা করেছেন। তার এই উপন্যাসটি পড়লে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে যাদের জানার ইচ্ছা তারা অনেক কিছু জানতে পারবেন। এছাড়াও ছোটরা অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবে। আমাদের এই স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে কারা তাদের নিজের রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন তাদের অসামান্য ত্যাগের কথা আমরা জানতে পারব এই উপন্যাসটি পড়ে।
1971 সালের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে অবদানের কথা কেউ ভুলতে পারে না। যাদের অবদানের কথা সবার প্রথমে মনে পড়ে তারা হল ঢাকার রাজার বাগ পুলিশ লাইন এ কর্মরত পুলিশ সদস্যরা। সে সময় রাজারবাগ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমন প্রতিহত করতে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম বুলেটে ছুটে গিয়েছিল পুলিশের রাইফেল থেকেই। এই উপন্যাসটি পড়ে আমরা শুরু থেকে জানতে পারবো যে স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের অবদান কতটা অনস্বীকার্য ছিল।
25 শে মার্চ 1971 সাল আনুমানিক দশটা 10 মিনিটে কামান ,মেশিনগান আর আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি আর্মি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। তাদের লক্ষ্য ঢাকা ভার্সিটি, পিলখানায় ইপিআর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের দখল নিয়ে সম্পূর্ণ ঢাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। ফার্মগেট অতিক্রম করার সময় তেজগাঁও থানা থেকে ওয়ারলেস স্বাধীনতা খবরটা জানিয়ে দেয়া হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স এর সদস্যদের।
মুহূর্তের মধ্যেই সবাই প্রস্তুত হয়ে যায় পাকিস্তানি বাহিনী দের ঘায়েল করার জন্য। সবাই মিলে প্রস্তুতি নেয় পাকিস্তানীদের পরাজিত করার। পাক হানাদার দের প্রতিহত করতে তারা ভেঙে ফেলল আইজি রিসার্চ সেন্টার ও রাজারবাগ কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগার এর তালা। সেকেলের রাইফেল হাতে সংকীর্ণ অস্ত্রসজ্জিত পাকিস্তানীদের মোকাবেলা করতে। রাজার বাগ পুলিশ লাইন এর সদস্যরা বীরের মতো পাকহানাদারদের সাহায্যে যুদ্ধ করে।
একাকী জীবন উৎসর্গ করতে থাকে দেশের জন্য। জীবন দিয়ে হলেও দেশমাতৃকাকে পাকিস্তান হানাদার মুক্ত করে ছাড়বেন। প্রকল্প থেকে জানতে হলে অবশ্যই পুরো বইটা পড়তে হবে। তুমুল আর ভয়ঙ্কর সে যুদ্ধের নানা অজানা অনেক সত্য কাহিনী নিয়ে রচিত হয়েছে এই উপন্যাসটি। 1971 সালের 25 শে মার্চের বিভীষিকার ভয়াল সেই রাত থেকে জীবনের বিনিময়ে বাঙালির হাজারো যুবক রক্ষা করে তার দেশকে।
অসাধারণ বাস্তবসম্মত গল্পটি যদি এখনো না করে থাকেন তাহলে অবশ্যই দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য উপন্যাসটি একবার হলেও পড়বেন। অনেক না জানা তথ্য জানতে পারবেন এবং দেশের প্রতি শ্রদ্ধা বোধ তৈরি হবে। কারণ হাজারো বাঙালির তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি তাই তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।