সিগমা ফোর্স’। থ্রিলার, এডভেঞ্চার প্রেমিরা হয়তো নামটার সাথে পরিচিত। তাও ব্যাখ্যা করি। জেমস রলিন্সের পৃথিবী বিখ্যাত থ্রিলার, এডভেঞ্চার সিরিজের নাম ‘সিগমা ফোর্স’। সিগমা ফোর্সের প্রথম বই হলো ‘স্যান্ডস্টর্ম’। বইটার অনুবাদ করেছেন, ‘মোঃ ফুয়াদ আল ফিদাহ’। অনুবাদ সাহিত্যের প্রতি অনেকের অনীহা থকতে পারে, আমিও বলি অনুবাদ ভালো না হলে সে বই না পড়াই ভালো।
তবে মোঃ ফুয়াদ আল ফুদাহ এর অনুবাদ খুবই সাবলীল, এবং তার অনুবাদের অনেক অভিজ্ঞতাও আছে। সুতরাং বইটা অবশ্যই উপোভগ্য। আদী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত, প্রায় ৪৩০ পৃষ্ঠার এই অসাধারণ বইটি এখনো পড়তে পারেন নি। তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করে পড়ে নিতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
ব্রিটিশ মিউজিয়ামে হলো প্রচন্ড ভয়ংকর এক বিস্ফোরণ! কেপে উঠলো পুরো লন্ডন শহরটা। সফয়া, আর সেই মিউজিয়ামের মালিক খুঁজে পান একটি মূর্তি। আর সেই মূর্তির ভেতরে রয়েছে একটা জীবন্ত হার্ট! হার্টের মাঝে একটা চিহ্ন পাওয়া যায়। বিশ্লেষণ করে দেখা যায় সেটা ‘উবার’ নামক এক শহরের। কিন্তু শহরটা মরুভূমিতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে সেটাও বেশ কয়েকশ বছর আগে! আবার ঠিক এই শহরের জন্য কারা’র বাবার মৃত্যুর রহস্য পর্যন্ত অজানা হয়ে আছে। তাই আর দেরি না করে দুই বান্ধবী ঠিক করে ফেলল তারা উবার শহরের খোঁজ করবে।
অন্যদিকে পেইন্টার ক্রো এবং কোরাল কে পাঠানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে। মূলত বিস্ফোরণ টা কোন পদার্থের কারনে হয়েছে, সেটা জানার জন্য। এখনো সেই পদার্থের ভান্ডার থাকতে পারে উবারে। আর তা যদি কোনোভাবে ভুল হাতে পরে যায়, তবে বিপদে পড়তে পারে পুরো পৃথিবী। কারন ঐ পদার্থ দিয়ে পুরো পৃথিবী ধ্বংস করে দেয়া সম্ভব! আর তাই সেই পদার্থের ভান্ডার উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে সাফিয়া, কারা’র সঙ্গী হলো পেইন্টার ক্রো এবং কোরাল।
এসময় আবার সাফিয়াকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। এর থেকেই প্রমাণিত হয় যে, দ্বিতীয় পক্ষও রয়েছে। যাদের লক্ষও এক। সেই বিস্ফোরক পদার্থ। কিন্তু পেইন্টার চিনে ফেলে সেই দ্বিতীয় পক্ষকে, কিন্তু কিভাবে? বিশ্বাসঘাতকতা?
উবার যত্রায়, ‘সাবাব ওমান’ আরবের সেই রাজকীয় জাহাজ ধ্বংসের পর মৃত বন্ধুদের মধ্যে শুধু একজনই বাঁচে। সে হলো সাফিয়া। এতো ঘটনা, এতো কিছুর পরও কি পাওয়া যাবে সেই উবারের প্রবেশদ্বার? আসলে কি হয়েছিল উবারে, যার আঘাত থেকে বাঁচতে পারে নি একজনও? এদিকে একদল নারী আবার সাফিয়া’কে ছিনিয়ে আনলো সেই অপহরণকারীদের কাছ থেকে। কিন্তু কেন? তারাই বা কি চাই?
শত চাওয়া, পাওয়া আর প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে পড়তে হবে রোলার কোস্টার গতির এই থ্রিলার বইটি!
আ্যকশন, এডভেঞ্চার, থ্রিলার, সাসপেন্স, কি নেই এই বইতে? সবই যেন উপস্থিত এই বইয়ের ভিতর! আসলে কি বলবো এই স্যান্ডস্টর্মকে! কোন জনরার মধ্যে ফেলবো সেটাই বুঝতে পারছি না! আবার মরুভূমির সৌন্দর্য বর্ণনা পড়ে মনে হচ্ছিল যেন আমি দেখতে পাচ্ছি সব চোখের সামনে! পড়ার পর মনে হচ্ছিল, ইশ এখনই যদি মরুভূমি ভ্রমন করা যেত! বলাই বাহুল্য যে, জেমস রলিন্স একজন শক্ত হাতের লেখক। তিনি শুধু নিছিক কল্পনা করে কিছু হযবরল বানিয়ে দেন না।
সে সবের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও থাকে তার কাছে! তাছড়া প্রতিটি চরিত্রকেই তিনি সমান গুরুত্ব দিয়েছেন। কাওকে বেশি বর্ণনা করতে গিয়ে আবার অন্যজনকে হারিয়ে দেননি। এদিকটাও প্রশংসার দাবি রাখে। যাই হোক সবকিছু মিলিয়ে এক কথায় বইটা অসধারন। শুধু থ্রিলার পাঠক না, সব বই প্রেমিদের পড়া উচিত এই ‘স্যান্ডস্টর্ম’!