Site icon Book PDF Down.com

সীমাবদ্ধ PDF Download শংকর

সীমাবদ্ধ PDF Download শংকর

‘শংকর’ তাঁর অসাধারণ বেশ কিছু সৃষ্টির মাধ্যমে আজো বেঁচে আছেন পাঠকের মনে। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন জীবনে। তাঁর সেরা সৃষ্টির একটা হলো ‘সীমাবদ্ধ’ উপন্যাস। জন অরণ্য বইটার মত এটা নিয়েও সত্যজিৎ বাবু সিনেমা বানিয়েছিলেন। এমন অসাধারণ সৃষ্টি না পড়ে থাকলে আমাদের ওয়েবসাইট বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

হিন্দুস্থান পিটার্স নামক স্বনামধন্য বিলেতি প্রতিষ্ঠানের সেলস এন্ড মার্কেটিং এগজিকিউটিভ মিস্টার শ্যামলেন্দু চ্যাটার্জি। বিখ্যাত পিটার্স লাইট ও ফ্যান তৈরি ও দেশ-বিদেশে রপ্তানি কারক প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থান পিটার্সের ফ্যান তৈরি তদারকি ও সাপ্লাইয় অংশের দায়িত্বে রয়েছেন শ্যামলেন্দু। শৈশব, কৈশোর আর যৌবনের প্রথম দিক টা শ্যামলেন্দুর কেটেছে পাটনা শহরে। স্কুল মাস্টার বাবা আর গৃহীনি মায়ের একমাত্র সন্তান শ্যামলেন্দু ছোটোবেলা থেকেই বেশ মেধাবী।

ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন এম.এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি তে প্রথম স্থান অধিকার করার মধ্য দিয়ে। শেক্সপিয়ার ছিল যার প্রাণ। গীতাপাঠের মত করে যে শেক্সপিয়ার পড়ত, অন্তরে আতঃস্থ করতো। বাবার পথ অনুসরণ করেই পড়ালেখা শেষে শ্যামলেন্দু স্থানীয় এক কলেজে মাস্টারির চাকরি শুরু করেন। কলেজ ছাত্রদের শেক্সপিয়ার পড়িয়ে অল্প কিছু মাইনে নিয়ে দিন বেশ সাদামাটা ভাবেই অতিবাহিত করছিলো সে, কিন্তু জীবনের মোড় ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিলো হিন্দুস্থান পিটার্সের এক চাকরির বিজ্ঞাপন।

অনেকটা অলসতা ভরেই আবেদন করে বসে স্বনামধন্য এই বিলেতি প্রতিষ্ঠানে। ইন্টারভিউ ডাক পেতেও বেগ পেতে হয়না। ইন্টারভিউ বোর্ডে শ্যামলেন্দু চ্যাটার্জির যোগ্যতা, কর্মনিষ্ঠায় আর দীপ্তিমান ভবিষ্যৎ আঁচ করতে পেরে অনেকটা মুগ্ধ হয়েই কোম্পানির বড় কর্তা সাহেব শ্যামলেন্দু কে চাকরি তে বহাল করেন। হীরা চিনতে ভুল করেননি বড় সাহেব ডেভিডসন।

অল্প দিনেই নিজ মেধা, যোগ্যতা, সময়োপযোগী বুদ্ধিমত্তা, পরিশ্রম আর অসামান্য ইচ্ছাশক্তির দ্বারা পাটনার পঞ্চাশ টাকা মাইনের এক কলেজ মাস্টার থেকে হাজার দশেক টাকা বেসিক স্যালারি নিয়ে এক ইংরেজ সাহেব দের পরিচালিত বিখ্যাত মার্চেন্ট কোম্পানি তে নিজের দৃঢ় অবস্থান আর নিজের নাম তৈরি করে নেন মিস্টার এস চ্যাটার্জি। তার ব্যক্তিত্ত্বের দৃঢ়তার কাছে পরাজিত হয়েছে সকল প্রতিদ্বন্দ্বী।

সাধারণ চলাফেরা দিয়েও অসাধারণ হয়ে উঠেন, হয়ে উঠেন সকলের প্রিয়। কিন্তু দিন শেষে কি পৌঁছাতে পারেন স্বপ্নের সর্বোচ্চ শিখর ডিরেক্টর পদে? পারবেন কি নিজের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী কে হারিয়ে দিতে? এতো টা সফলতার পথ পাড়ি দিয়েও তবু দিনশেষে এ কিসের আক্ষেপ? কিসের এই অপূর্ণতা? জানতে হলে পড়তে হবে শেষ অব্দি।

মেদহীন ঝরঝরে লেখনী বলে একটা কথা বেশ প্রচলিত। শংকর স্যারের লেখা পড়ে সেই লেখনীর স্বাদ পেলাম দীর্ঘ দিন পর। এ বইয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক খোদ লেখকের লেখার ভাষা। এমন সত:স্ফূর্ত প্রাঞ্চচল ভাষায় লেখক প্রতিটা লাইন লিখেছেন যে, যা লেখার বিষয়বস্তুর ছাপিয়েও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এ বইয়ে কোনো অপ্রয়োজনীয় অংশ নেই, কিংবা কোনো প্রয়োজনীয় অংশের কমতি ও নেই। লেখক লেখার বর্ণনা দিয়েই চোখের সামনে চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন সদ্য আভিজাত্যের ছোঁয়া লাগা কোলকাতা।

এ বইয়ের আরেকটি দুর্দান্ত ব্যাপার হলো বই পড়তে পড়তেই কোনদিক দিয়ে যেনো নিজেই মোটিভেটেড হয়ে যাওয়া যায় টেরই পাওয়া যায়না। পরিশ্রম আর সফলতার গল্প নিজের ভেতর এমন ভাবে সফল হওয়ার কিরকম একটা নেশা চাপিয়ে দেয় যা টের পাওয়ার পর দুর্দান্ত লাগে। নিজের মনেও সফল হওয়ার সাধ জাগে। যা আজকালকার মোটিভেশন বই পড়েও পাওয়া যায় না!

সবশেষে বলবো, এই বইটা আসলেই মাস্টার পিস। আর মাস্টার পিস জিনিস মিস করতে নেই।

Exit mobile version