সূর্য দীঘল বাড়ী PDF Download আবু ইসহাক

‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ উপন্যাসটির রচয়িতা আবু ইসহাক। আবু ইসহাক বাংলা সাহিত্যের সেই সকল লেখকদের মাঝে বিবেচিত হন, যাদের রচনাগুলোকে সংখ্যায় নয়, সৃজনশীলতা ও মননশীলতার গুণে বিচার করা হয়। সাহিত্যিক জীবনে সর্বসাকুল্যে ৩টি উপন্যাস ও দুটি গল্প গ্রন্থ রচনা করেছিলেন আবু ইসহাক।

আর এই অল্প সংখ্যক লেখা দিয়েই বাঙলা সাহিত্যের প্রথম সারিতে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন এই লেখক। লেখকের সকল রচনার মধ্যে যে রচনাটি তাকে অন্য সকল সাহিত্যিকের চেয়ে অনন্য করে তুলেছে তা হলো ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’। এ উপন্যাসটি গ্রামীণ পটভূমিতে রচিত যার প্রধান চরিত্র হলো এক নারী। উপন্যাসটি লেখকের রচিত প্রথম উপন্যাস। উপন্যাসটির রচনা কাল ছিল ১৯৪৪-৪৮ সাল।

সূর্য দীঘল বাড়ি উপন্যাস

কবি গোলাম মোস্তফা সম্পাদিত মাসিক ‘নওবাহার’-এ উপন্যাসটি ১৯৫১-৫২ সালে প্রথম ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে শুরু করে। পরে কলকাতার ‘নবযুগ’ প্রকাশনী হতে উপন্যাসটি প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবার পর উপন্যাসটির রচনাশৈলী ও অনন্য বিষয়বস্তুর কারণে আবু ইসহাক পাঠক সমাজে বাহবা পেয়েছিলেন। ১৯৬২-৬৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিলেন লেখক এই উপন্যাসটির জন্য।

গ্রামীন পটভূমিতে রচিত ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ একটি সামাজিক উপন্যাস। যার পটভূমির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে স্বামী পরিত্যক্তা এক নারী ও তার জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকার কাহিনী। উপন্যাসের মূল চরিত্র জয়গুন নামক প্রান্তিক এক শ্রমজীবী নারী। প্রথম স্বামীর পুত্র হাসু আর দ্বিতীয় স্বামীর কন্যা মায়মুনকে নিয়ে ছোট এক সংসার জয়গুনের।

সূর্য দীঘল বাড়ি উপন্যাস রিভিউ

জয়গুণের প্রথম স্বামী জব্বার মুন্সী মারা যাবার পর করিম বকসের সাথে জয়গুণের বিয়ে হয়ে। করিম বকস ছিলো বদমেজাজী এক কৃষক। তেতাল্লিশের মন্বন্তরের সময় মায়মুন ও জয়গুনকে তাড়িয়ে দেয় করিম, শুধু নিজের ছেলে কাসুকে করিম নিজের সাথে রেখে দেয়। স্বামী তাড়িয়ে দিলে ক্ষুধার তাড়নায় জয়গুন ছেলে-মেয়েকে নিয়ে শহরে পাড়ি জমায়।

কিন্তু শহরের জীবন ব্যবস্থা যে আরো নিষ্ঠুর এই বাস্তবতার সাথে পরিচিত হয়ে জয়গুনের মন ভেঙে যায়। শহর ছেড়ে কঙ্কালসার শরীর নিয়ে তিনজনেই আবার গ্রামে ফিরে আসে। উদ্বাস্তু জয়গুনের নিজের কোন ভিটেমাটি না থাকায় এবং তাকে ঠাঁই দেয়ার মত কোন আত্মীয় না থাকায় জয়গুন আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় এক পরিত্যক্ত বাড়িতে। যেই বাড়ির নাম হলো ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’। গ্রামীণ লোকজ বিশ্বাসে বাড়িটিকে অপয়া বিবেচনা করা হয়।

সূর্য দীঘল বাড়ি উপন্যাসের চরিত্র

এ বাড়িতে বহু বাসিন্দার অপমৃত্যু, ভূত-প্রেতের অত্যাচার আছে। আর এ বাড়িতে যেই বসবাস করে তাকে নির্বংশ হতে হয়। কিন্তু যেই জয়গুনের দুবেলা খাবার জোগানোর টাকা নেই তার এসব ভাবলে চলে না। তাই সমাজের কোন কথার তোয়াক্কা না করে জয়গুন তার সন্তানদের নিয়ে বাড়িটিতে নিজেদের বাসস্থান গড়ে তুলে। ক্ষুধার তাড়নায় গ্রাম্য নিয়মনীতি ভেঙে, পর্দা ভেঙে জয়গুন পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে চাল এনে গ্রামে ব্যবসা শুরু করে।

চাল ব্যবসার পাশাপাশি যখন যেই কাজ পায় তাই করতে থাকে জয়গুন। দারিদ্র্য দুর্দশা দূর করতে হাসু ও মায়ের সাথে রোজগার করতে আরম্ভ করে দিন মজুরি খেটে। আর মায়মুন সংসারের বোঝা নিজের কাঁধে তুলে নেয়। কিন্তু রক্ষণশীল সমাজের এই বিষয়টা মেনে নিতে কষ্ট হয়, তারা জয়গুণের এই স্বাধীন চলাফেরাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করে আর এই সুযোগ নিয়ে গ্রামের মোড়ল জয়গুনকে তার তৃতীয় স্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেয়।

সূর্য দীঘল বাড়ি-আবু ইসহাক pdf download

জয়গুন দৃড়তার সাথে সেই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে। আর তারপর থেকেই শুরু হয় জয়গুনের জীবনের সংগ্রামের আরো বড় অধ্যায়। উপন্যাসটিতে আমাদের পূর্বেকার গ্রামীণ সমাজ ও কুসংস্কার যেভাবে পরিস্ফুটিত হয়েছে তা খুবই বিরল। উপন্যাসটি শুধুই একটি উপন্যাস নয় আমাদের প্রাচীন সমাজ ব্যবস্থার দর্পণ। আমাদের সমাজের অন্ধকার অধ্যায়, নারীর মর্যাদা আর বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের যে সংমিশ্রণ উপন্যাসটিতে ঘটেছে তা অনবদ্য।

 

সূর্য দীঘল বাড়ি চলচ্চিত্রের পরিচালক কে

সূর্য দীঘল বাড়ি অর্থ

জাল আবু ইসহাক pdf

সূর্য দীঘল বাড়ি উপন্যাসের রচয়িতা কে

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top