দ্য এন্ড PDF Download আবুল ফাতাহ

থ্রিলার জগতে আবুল ফাতাহ একটি পরিচিত নাম। প্রায় দশ টার মত বই বেড়িয়েছে তার। সবগুলোই নানাদিক থেকে জনপ্রিয়। তাঁর অন্যতম একটা হিস্টোরিক্যাল থ্রিলার হলো ‘দ্য এন্ড’। ইতিহাস আর থ্রিলার এর মিশেলে একেবারে অসাধ্য করে তুলেছে এই বইটাকে। বইটা যারা পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ ফাইল পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

প্রধানমন্ত্রীর সফরের সাতদিন আগে কক্সবাজারের সি বিচে এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়। কিন্তু লাশের কোনো শনাক্তকরী বৈশিষ্ট্য নেই, কাপড়ের সিল পর্যন্ত খুলে ফেলা হয়েছে। শুধু পাওয়া যায় একটি চিরকুট,ওমর খৈয়ামের রুবাইয়াতের অংশ ‘তামাম শুদ’ অর্থ শেষ বা দ্য এন্ড। এই তথ্যটি আবিষ্কার করে ডিবিতে কর্মরত তরুণ জাহিদ।

এই খুনের তদন্তে জড়িয়ে পড়ে সিক্রেট শ্যাডো নামক ডিটেকটিভ এজেন্সির অপারেশনাল চিফ সাইফ হাসান। এবং এই চিরকুটের কথা সাইফকে জানানোর পর হোটেলের বাইরে খুন হয় জাহিদ। কেন পর পর দুইটি খুন এবং নামহীন গোত্রহীন একটি লাশ, যার কাছে শুধু পাওয়া গেল দুইটি শব্দ, দ্য এন্ড। এই তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হয় এনএসআই এজেন্ট আযীন।

তদন্তের মাধ্যমে মেজর সাইফ এবং আযীন জানতে পারে কক্সবাজারে পাওয়া লাশের সাথে মিলে গেছে সত্তর বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিচে পাওয়া আরেকটি লাশের হুবহু। সত্য জানতে তারা পাড়ি দেয় সুদূর অস্ট্রেলিয়ায়। কী আছে এই তামাম শুদের পেছেনে। লেখক সত্তর বছর আগের একটু অমীমাংসিত রহস্যকে নিজের আঙ্গিকে মিলিয়েছেন ইতিহাসের সঙ্গে। সেখানে উঠে এসেছে ওমর খৈয়াম, ইবনে সিনার মতো মুসলিম মনীষীর সাথে আধুনিক শক্তিশালী গুপ্তসংঘের মেলবন্ধন। রহস্যের জট খুলতেই বইটা পড়ুন।

যাস্ট দারুণ একটা বই। ৩১০ পৃষ্ঠার বইয়ে বোরিং হওয়ার সুযোগ নেই।

গল্পের শুরুটা বেশ সাদামাঠা ভাবে। অনেকটা সামাজিক উপন্যাসের ঠঙে। সময়ের সাথে সাথে তাতে থ্রিলের উপকরণ যোগ হওয়ায় ভাষাটাও থ্রিলারসুলভ হয়ে উঠেছে। লেখার গতিটাও প্রথমে শ্লথ ছিল। মূল গল্পে পৌঁছানোর পর সেটাও বেগবান হয়ে উঠেছে।

গল্পে ওরকম মাত্রার টুইস্ট না থাকলেও বড়সড় কয়েকটা হুক ছিল। সেগুলো বেশ ভালো ভাবেই চমকে দিয়েছে আমাকে।

এ গল্পে রোমান্স নেই। তবে দারুন একটা রোমান্টিক আবহ আছে। প্রধান নারী চরিত্রটিও বেশ আকর্ষণীয়। নারী-পুরুষের সম্পর্কের ব্যাপারে লেখক আশ্চর্য রকমের সংযমী। এস্পিওনাজ থ্রিলারে যেরকম খুল্লামখুল্লাম ভাব থাকে- এখানে সেটা অনুপস্থিত। বেশ ভালো ব্যাপারটা!

এসাসিন ক্যারেক্টারটা বেশ ভালো লেগেছে আমার। ওর ডিটেইলড ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরির বেলায় দারুন মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন লেখক। এবইয়ে অন্য কোন ক্যারেক্টারের এতটা নিখুঁত ব্যাকগ্রাউন্ড নেই।

ঐতিহাসিক বর্ননাগুলো প্রায় সময়ই কোন না কোন চরিত্রের জবানিতে বর্নিত হয়েছে। জবানির দৈর্ঘ্য আসলে খুব একটা বড় ছিল না। আমার মতে ওই অংশগুলো তৃতীয় পুরুষে এবং আরো একটু বড় কলেবরে লেখলে আরো বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠত গল্পটা। যেক’টা প্রশ্নকে নাকের ডগায় মূলার মত ঝুলিয়ে রেখে পুরো বইটা পড়িয়ে নিয়েছেন, শেষে জবাবগুলো এত দ্রুত পেয়ে যাওয়ায় কেমন এক অতৃপ্ত ভাব কাজ করে। ঐ অংশটা আরো বিস্তারিত হলেই বেশি ভালো হতো। কেননা, ওটার জন্যই তো এই বইটা পড়া! তবে লেখকের লিখনশৈলী বেশ গতিশীল। একেবারে এক বসাতে আটকে রাখার মত!

লেখক মূল গল্পটা ফেঁদেছেন বর্তমান এবং অতীতের কয়েকটি রহস্যকে একসূত্রে গেথে। এদের ভিতর সমরটন ম্যান রহস্য-টা সাধারণ জনমানুষের কাছে সবচাইতে বেশি পরিচিত। এ গল্পে অন্যান্য আর যে কয়জন ঐতিহাসিক চরিত্র স্থান পেয়েছে তাদের জীবনও কম ঘটনাবহুল নয়। তাদের প্রত্যেকের জীবন ঘিরে রয়েছে রহস্যের ঘনঘটা।
যা আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এম ভুবনে!

সবশেষে বলবো, ইতিহাসের মিশ্রণে অন্যরকম একটা কাহিনী পড়ার জন্য অবশ্যই বইটা পড়তে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top