দ্য গড অফ স্মল থিংস PDF Download অরুন্ধতী রায়

দ্য গড অফ স্মল থিংস’ উপন্যাসটির রচয়িতা হলেন অরুন্ধতী রায়। ভারতীয় প্রতিভাবান লেখিকার প্রথম উপন্যাস এটি। ১৯৯৭ সালে উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘ইন্ডিয়া ইংক’ প্রকাশনী হতে। অরুন্ধতী রায় নিজে ভারতীয় হলেও তিনি তার এই বই রচনা করেছিলেন ইংরেজী ভাষায়। বইটি প্রকাশিত হবার বছরেই ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করে।

এই পুরস্কার থেকেই বোঝা যায় প্রথম উপন্যাসেই সাহিত্য জগতে বাজিমাত করে ফেলেন লেখিকা। এই উপন্যাসটি প্রকাশ করার পর দ্বিতীয় উপন্যাস লেখিকা প্রকাশ করেন প্রায় ২০ বছর পর। অরুন্ধতী রায় যে বাস্তব জীবনে একজন অনুভুতিশীল মানুষ তা তার লেখা থেকেই বোঝা যায়।

মানুষের দুঃখ-বেদনা, আনন্দ, ভালোবাসা বিরহ সবকিছুই স্থান পেয়েছে তার লেখায়। মানব জীবনের সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলো জায়গা পেয়েছে লেখিকার উপন্যাসে। মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য ভারতের এপাশ থেকে ওপাশ চোষে বেড়ান লেখিকা তার ও আভাস উপন্যাসে রয়েছে।

অতীত ও বর্তমানকে পাশাপাশি রেখে যেভাবে গল্পের জাল বুনোন করা হয়েছে তা পাঠককে মোহিত করে রাখে। উপন্যাসটিতে বিভিন্ন বিষয়ের সংমিশ্রণ যে একই প্রবাহে মিলিত হয়েছে তাও এক বিস্ময়। বর্নবাদ, পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, প্রেম, প্রতিশোধ সব কিছুর মিলনে উপন্যাসটি হয়ে উঠেছে অনন্য।

উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছে এইমেনেম নামক একটি অঞ্চলের এক নারী যার দুইটি জমজ সন্তান রয়েছে। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের কেরালা রাজ্যের শীনাচল নদীর তীরে এক ছোট শহর হলো এই এইমেনেম। প্রাচীন ভারতের কিছু সমৃদ্ধ জনপদ মালাবার, কালিকট, কোচিন এই কেরালা রাজ্যেরই অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন ইউরোপীয় জাতি ভারতে আসার পর এই কেরালার সাথেই সর্বপ্রথম তাদের ভালো সম্পর্ক তৈরি হওয়ার ফলে এ রাজ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যাও যেমন বেশি তেমনি শিক্ষার হারও বেশি।

ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এই রাজ্য এতটাই ব্যতিক্রম যে পৃথিবীর প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বামপন্থী সরকার এই রাজ্যেই নির্বাচিত হয়েছিল ১৯৫৭ ও ১৯৬৭ সালে। আর এই সময়কেই কেন্দ্র করে ‘দ্য গড অফ স্মল থিংস’ এর গল্প গড়ে উঠেছে। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের থেকে ব্যতিক্রম হলেও, এই রাজ্যও বর্ণবাদ,জাতিভেদ প্রথা, সন্ত্রাস ও প্রশাসনিক দূর্নীতি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনি।

পৃথিবীর অন্যান্য জায়গার তুলনায় এই রাজ্যের খ্রিস্ট ধর্ম ও বামপন্থার রয়েছে হাজারো অমিল। যেই ব্রাহ্মণরা এক সময় খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন তারা এখনও নিজেদের সমাজের প্রভু ভাবেন আর যারা ছোট জাতের তকমা থেকে বের হওয়ার জন্য খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন তারা আগের মতই সমাজের নিচুস্তরের মানুষ বলেই গণ্য হন।

আর এভাবেই কোন একসময় সশস্ত্র নকশালবাদী বামপন্থী আন্দোলন গড়ে ওঠে। এভাবেই উপন্যাস সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে এবং উপন্যাসের মূল চরিত্রগুলোর সাথে সামাজিক এই সমস্যা ও ঘটনাগুলোর প্রবাহ মিলে এক অন্য্রকম কাহিনীর উপাখ্যান তৈরি করে।

অরুন্ধতী রায়ের লেখার শৈল্পিক আবহ যে কোন পাঠককেই বিমোহিত করবে আর উপন্যাসের গল্পটিতে যতগুলো ধারা একত্রে মিলিত হয় তা না পড়লে বোঝা সম্ভবপর হবে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top