তন্দ্রা বিলাস PDF Download হুমায়ূন আহমেদ

তন্দ্রা বিলাস উপন্যাসটি মিসির আলি সিরিজের অন্যতম একটি উপন্যাস। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সায়রা বানু। তবে সায়রা বানু তার আসল নাম নয় পরবর্তীতে চিত্রা, নিশি ইত্যাদি নামেও গল্পের প্রধান নারী চরিত্রটি আমরা পাই। এই গল্পে চিত্রা নামের মেয়েটি একটি কল্পনার জগতে বসবাস করে।

মূলত একাকীত্ব থেকেই তার জীবনে বহুরুপ রহস্যময় ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। তাকে শৈশবেই নিজের মাকে হারিয়ে এবং পরবর্তীতে তার বাবার দ্বিতীয় বউ বা তার ছোটমা, যাকে সে প্রচন্ড ভালোবাসতো তাকে হারানোর পর একাকিত্বের কারণে সে নিজের কল্পনার জগত তৈরি করে।

সেখানে বসবাস করতে থাকে এবং সে কল্পনায় তার মৃত আত্মীয় স্বজনের সাথে সাক্ষাৎ করে।তার মধ্যে রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে তার মৃত মা ও শফিফা। কিন্তু আসলে কি মৃত মানুষকে দেখা সম্ভব! এছাড়াও মেয়েটিঃ স্বপ্নে যা দেখে তাই সত্যি হয় এবং স্বপ্ন কিসে নিজে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। মূলত এই সমস্ত রহস্যময় ঘটনা প্রবাহ নিয়ে উপন্যাসটি রচিত হয়েছে এবং বরাবরের মতো মিসির আলি সর্বশেষে সমস্ত ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

গল্পের শুরুতেই দেখা যায় মিসির আলি নিজের বাড়ির বারান্দায় একটি চেয়ার নিয়ে খুব বিরক্ত মুখে বসে আছেন। তার কারণ হচ্ছে সায়রা বানুর নামের একটা অচেনা মেয়ে হট করে তার বাড়িতে এসেছে এবং সেখানেই থাকবে বলে তাকে জানায়। এভাবে একটি অপরিচিত মেয়ে বাড়িতে আসায় এবং মেয়েটার অনবরত মিথ্যা কথা বলায় চরম বিরক্ত হয় মিসির আলি পরে মেয়েটি জানায় যে তার নাম সায়রা বানু নয় বরং চিন্দ্রা।

তারপর যাওয়ার সময় মেয়েটি তার ফোন নাম্বার দিয়ে চলে যায়। কিন্তু দশ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলও মেয়েটি ফিরে আসে না। মিসির আলি মেয়েটিকে ফোন করার জন্য ফোন নম্বর লেখা কাগজ দেখতে গিয়ে দেখে সেখানে কোন ফোন নম্বর নেই বরং সেখানে লেখা “আমাকে সাহায্য করুন”।

তারপর মিসির আলি মেয়েটির সুটকেস ঘাটাঘাটি করে কতগুলো চিঠি খুঁজে পায় যেখানে মেয়েটির জীবনের সমস্ত ঘটনা দিয়ে সাজানো এবং এই চিঠির ঘটনাই উপন্যাসের মূল কাহিনী। চিঠিতে মেয়েটা উল্লেখ করে যে সে স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।সে স্বপ্নে যা দেখে তাই সত্যি হয়। কিন্তু মানুষ তো স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

এছাড়া তাঁর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল সে মৃত আত্মীয় স্বজনদের দেখতে পায়। সে মৃতদের দেখতে পায় এমনকি তাদের সাথে কথা বলতে পারে। সে সব সময় একাকিত্বের মাঝে বড় হয়েছে। তার সব সময় মনে হয় অন্ধকার বারান্দায়, খাটের নিচে মৃত মানুষেরা বসে আছে।

মূলত তার সমস্যা আরো প্রকট হয় যখন সে জানতে পারে সে তার পরিবারের কেউ নয় বরং তাকে অন্য জায়গা থেকে বাড়িতে আনা হয়েছিল। চিত্রার লেখা চিঠির শেষে সে মিছির আলীকে একটি ধাঁধার সমাধান করতে বলে। তা হল “কোন প্রাণীর দুটি দেশ রয়েছে”!

সবকিছু জানার পর মিসির আলি পুরো ঘটনা প্রবাহকে যুক্তিতে দাঁড় করান। তারপরেও কিছু কিছু রহস্য সমাধান করা কখনোই সম্ভব নয় কেননা প্রকৃতি রহস্য রাখতে পছন্দ করে। তন্দ্রা বিলাস উপন্যাসটি কিছুটা প্যারানরমাল ও হরর বিষয়বস্তু দিয়ে পরিবেষ্টিত তাই মিসির আলি প্রেমিকদের ও অন্যান্য পাঠকদের উপন্যাসটি অবশ্যই পড়া উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top