Site icon Book PDF Down.com

উত্তরাধিকার PDF Download সমরেশ মজুমদার

আপনি কি সমরেশ মজুমদার রচিত উত্তরাধিকার বইটির পিডিএফ ডাউনলোড লিংক খুঁজছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। এখান থেকে আপনি উত্তরাধিকার বইটি সম্পর্কিত অনেক তথ্য পাবেন এবং বুক রিভিউ পড়তে পারবেন।

উত্তরাধিকার সমরেশ মজুমদার বুক রিভিউ

সমরেশ মজুমদার পশ্চিমবঙ্গ অর্থাৎ ভারতের একজন প্রখ্যাত লেখক। বাংলা ভাষার কথাসাহিত্যে যে কয়েকজন লেখক প্রধানতম ভূমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে সমরেশ মজুমদার অন্যতম। সমরেশ মজুমদারের বহুল পঠিত উপন্যাসের তালিকা বানাতে গেলে যে উপন্যাসগুলোর নাম শুরুর দিকে থাকবে তার মধ্যে ‘উত্তরাধিকার’ একটি। এ উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যের সর্বাধিক জনপ্রিয় উপন্যাসও বটে। এ উপন্যাসের মূল চরিত্র অনিমেষ, যাকে লেখক বারবার অনি নাম দিয়ে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। অনিমেষ ছাড়াও এ উপন্যাসে আরো অসংখ্য চরিত্রের সমাহার। লেখক সকল চরিত্রকেই অত্যন্ত আকর্ষনীয় ভাবে তুলে ধরেছেন। কোনো চরিত্রকেই একটা বারের জন্যও গুরুত্বহীন বলে মনে হয় না।

লেখকের সবচেয়ে প্রশংসনীয় দিক হচ্ছে তিনি চমৎকার ভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য তুলে ধরতে পারেন। একজন পাঠক বইয়ের পাতায় চোখ বুলোলেই যেনো তার চোখের সামনে জ্যান্ত হয়ে ওঠে প্রকৃতির ছবি। উপন্যাসের শুরুটাই হয়েছে প্রকৃতির এমন চমৎকার বর্ননার মধ্য দিয়ে। স্বর্গছেড়া চা বাগানের অপরূপ বর্ননা, আর এখানে অনি’র ঠাকুরদাদের আসবার অতীত ইতিহাস দিয়েই উপন্যাসের গল্পটি তরতর করে এগিয়েছে। অনির পূর্ব পুরুষরা- অর্থাৎ বাবা, ঠাকুরদারা ছিলেন চা বাগানের বড়বাবু। বিলিতী কোম্পানীর এ চা বাগানটা অবশ্য চিরকাল স্কচ সাহেবদের ম্যানেজারীতেই ছিল। কিন্তু তারপরেও স্থানীয় জনগন, কুলি আর শ্রমিককের ভালোবাসার ও শ্রদ্ধার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন অনির পূর্বপুরুষরা। বলে নেওয়া ভালো, উপন্যাসটি ইতিহাস নির্ভর। অনিমেষের চোখ দিয়ে আমরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের ইতিহাস দর্শন করতে পারি খুব ভালোভাবেই। গল্প যতটা এগোয় অনিমেষ শৈশব, কৈশোর থেকে যৌবনের দিকে ততটা এগোয় আর সাথে সাথে এগোয় তার মনের জগতে পরিবর্তন, শুরু চেতনার জগতে তোলপাড়। উপন্যাসে অনিমেষ একেকটা সময় একেকটা চরিত্রের সংস্পর্শে এসেছেন, আর তাদের ছোঁয়ায় তার মনোজগতে স্থান করে নিয়েছে দেশপ্রেম। অনিমেষ শিশুকালে দাদু সরিৎশেখরের সংস্পর্শে এসে দীক্ষা পেয়েছিল দেশপ্রেমের। তার সে দেশপ্রেম শিশুমনে আরো শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে দিদিমনির কথার মধ্য দিয়ে। দিদিমনির কন্ঠে দেশাত্মবোধক গান শুনে অনির প্রথম উদ্বেলিত হয়ে ওঠা। ১৫ ই আগষ্ট পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে অনির শিশুমনে স্বাধীনতার বীজ বপন করে দেয়া হয় যেনো। পরবর্তীতে আমরা দেখতে পাই হরবিলাসবাবুর বলছেন, ‘আপনারা সবাই প্রস্তত হোন। এখন সেই ব্রাক্ষ্মমুহূর্ত, আমাদের জাতীয় পতাকা স্বাধীন ভারতের আকাশে মাথা উঁচু করে উড়বে। তাকে তুলে ধরছে আগামীকালের ভারতবর্ষের অন্যতম নাগরিক শ্রীমান অনিমেষ।’ আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, একসময় এ শিশুই হয়ে ওঠে ভারতপ্রেমী এক স্নেহময় সন্তান। দাদু সরিৎশেখর অবাক হন যখন ছোট্ট অনির মুখে শোনেন, ‘দাদু, সাহেবকে কিছু বললে না কেন? ওরা আমাদের দেশটাকে ছিঁড়ে শুষে নষ্ট করে দেয়নি?’ আমরাও ধীরে ধীরে বুঝতে পারি এ অনির মধ্য দিয়েই লেখক এক অসাধারন গল্পের জ্বাল বুনছেন।

মাতৃহারা অনির চেতনাজগতে আবার নাড়া দেন স্কুলের নতুন স্যার। ক্লাসে যখন সবাই জানলো অনির মা নেই, তখন তিনি অনিকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, ‘মা নেই বোলো না। আমাদের তো দুটো মা, একজন চলে গেলেন ঈশ্বরের কাছে কিন্তু আর একজন মা তো রয়েছেন। তুমি তাঁর কথা ভাববে, দেখবে আর খারাপ লাগবে না। বঙ্কিমচন্দ্র বলে একজন বিরাট সাহিত্যিক ছিলেন, তিনি এ দেশকে মা বলেছিলেন, বলেছিলেন বন্দেমাতরম।’ দেশটা যে শুধু দেশ নয়, এটা আমাদের মাতৃতূল্য সেটা অনির মাথায় গেঁথে দিয়েছিলেন নতুন মাস্টার। অনি বুঝতে শিখলো এ দেশটাকে ভালোবাসতে হবে, এদেশকে সম্মান করতে হবে, এ দেশকে সেবা করতে হবে। ‘বন্দেমাতরম’ শ্লোগানটি সযত্নে বুকে লালন করতে থাকে অনি।

অনির চেতনা জগতে আবার ঢিল ছুড়ে ছোটকাকা। প্রিয়তোষ হাড়ে হাড়ে একজন কংগ্রেস বিদ্বেষী। সে অন্যকে ‘শালা কংগ্রেসী’ শব্দ ব্যবহার করে গালি হিসেবে। অনি অবাক হয়। তাকে নতুন মাস্টার বলেছেন, ‘দেশের জন্য যারা কাজ করেন তারা কংগ্রেসী!’ অথচ প্রিয়তোষ কি না এই দেশ কে যারা ভালোবাসে তাদেরই উঠতে বসতে গালি দেয়। কাকাকে গালি দিতে দেখে তার মনে প্রশ্ন জেগে ওঠে, ‘যারা দেশকে ভালবাসতে বলে তাঁরা কি খারাপ?’ ধীরে ধীরে সে দেশের প্রেক্ষাপট, রাজনীতি এসব বুঝতে চেষ্টা করে।
মার্কসবাদ, কম্যুনিষ্ট, কংগ্রেস, বন্দে মাতরম, ইনকিলাব জিন্দাবাদ- এসবে খুঁজে নিতে চায় তার সত্যিকার আদর্শকে। সত্যন্বেষণ হয়ে ওঠে তার অন্যতম কাজ।

একটা সময় প্রিয়তোষের রেখে যাওয়া সুকান্ত ও গোর্কী শেষ করে অনি। সে বুঝতে পারে এ দেশটা স্বাধীন হয়েছে ঠিকই- কিন্তু ক্ষুধার দাসত্বে আজও বন্দী জনগন। ধীরে ধীরে কংগ্রেস-কম্যুনিষ্ট, বন্দেমাতরম-ইনকিলাব জিন্দাবাদ এসবের দ্বন্দ্ব বুঝতে পারে। আর ঠিক এসময়টাতে তার চেতনাজগত নতুন করে নাড়া দিতে উদ্ভব ঘটে সুনীলদার। সুনীলদার মাধ্যমেই সে শোষিত, শাসিত বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে শেখে। কংগ্রেসের তৈরী স্বাধীনতাকে আর স্বাধীনতা বলে মনে হয় না, তাদের রাজনীতিটাও মনে হয় অপাঙক্তেয়। সুনীলদা বলেন, ‘পার্লামেন্টারী গনতন্ত্র, বুর্জোয়া গনতন্ত্র, বড়লোকের গনতন্ত্র, সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা পাল্টে বড়লোকদের বাঁচাবার প্রয়োজনেই এর সৃষ্টি।’ উপন্যাসের শেষটায় সুনীলদার মৃত্যু দেখি। মিটিংয়ে পুলিশের গুলি বিদ্ধ হয় অনির শরীরে। লেখক ছোটগল্পের মতই অসমাপ্ত করেই এ উপন্যাসটারও যবনিকা টেনেছেন। অনিমেষের কী হলো এ অতৃপ্তি থেকেই যাবে পাঠক মনে।

‘উত্তরাধিকার’ উপন্যাসটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের ইতিহাসের চিত্রায়ন। ইতিহাস, রাজনীতি, বাঙালী পরিবারের টানাপোড়েন, ভালোবাসা, দেশপ্রেম, প্রগাঢ় মাতৃপ্রেম- কী নেই এ উপন্যাসে। বইটি পড়তে শুরু করুন- দেখবেন সহসাই হারিয়ে গেছেন অন্য এক জগতে। উপন্যাসটি এনে দেবে আপনার মনে ভিন্ন এক স্বাদ।

আলোচনায়- শিমুল শাহিন

উত্তরাধিকার পিডিএফ ডাউনলোড

আপনি খুব সহজেই আমাদের ওয়েবসাইট থেকে উত্তরাধিকার বইটির পিডিএফ ডাউনলোড করতে পারবেন। এজন্য আমাদের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলুন।

প্রথমে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে মেনু থেকে নির্বাচন করুন সমরেশ মজুমদার।

এরপর উত্তরাধিকার বইটি নির্বাচন করুন।

এবার বইয়ের রিভিউ লিখাটি পড়ে নিন। রিভিউ পড়া শেষ হলে বইয়ের কভার ফটোর নিচে দেওয়া ডাউনলোড লিংকে ক্লিক করুন।

তাহলে অল্প কিছুক্ষনের ভিতরেই বইটি ডাউনলোড হয়ে যাবে।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের সংগ্রহ কেমন লেগেছে তা কমেন্টে জানান। ভালো লাগলে ফেসবুকে শেয়ার করুন। এরকম আরো বই পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

Exit mobile version