প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের হিমুকে নিয়ে লেখা জনপ্রিয় উপন্যাস ‘আঙুল কাটা জগলু ‘। বইটি প্রকাশিত হয় ২০০৫ সালে এবং বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ১০৭ টি।
একধরনের অদ্ভুত গল্প নিয়ে উপন্যাসটি রচিত হয়েছে। এই উপন্যাসটি হিমু সিরিজের জনপ্রিয় একটি উপন্যাস যা হিমু মূল চরিত্র নিয়ে রচিত। হিমু নামটি শুনলেই আমাদের মনে আসে হলুদ পাঞ্জাবি পরা একটি যুবক, যে কিনা বেশিরভাগ সময়ই খালপ পায়ে হাটাহাটি করে। আবার রাত বিরাতে হাটাহাটি করাও তার স্বভাব।
আঙুল কাটা জগলু একজন পরিচিত মানুষ প্রায় লোকের কাছে। মানুষের মুখের ভাষায় আর পত্রিকায় সে শীর্ষ সন্ত্রাসী নামে পরিচিত। একদিন হঠাৎ করেই আঙুল কাটা জগলুর কিছু লোকজন হিমুকে ধরে নিয়ে যায় জগলুর কাছে। হিমু এই জগলুর নাম অনেক আাগেই শুনেছে। তাই এইসব বিষয়ে তার কৌতুহল রয়েছে।
সেই জন্য অনেকটা ইচ্ছা করেই এসব লোকের সাথে সে যায়। জগলুর কাছে যাওয়ার পরই সে জানতে পারে কেনো তাকে ধরে আনা হয়েছে। জগলু তাকে পুলিশের ইনফরমার ভেবে ধরে নিয়ে এসেছে। কারণ এর আগেও বেশ কয়েকবার জগলুর পিছু নিতে সে দেখেছে।
আঙুল কাটা জগলু সন্ত্রাসী হলেও একজন শিক্ষিত মানুষ। ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করা একজন লোক। তিনি পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে। তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে সেই লোকের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। তার নাম আঙুল কাটা জগলু হলেও তার সবগুলো আঙুল ঠিক ই আছে। তবে মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে আঙুল কেটে দেয় জন্য তার নাম আঙুল কাটা জগলু। তবে মানুষটা দেখতে ও সুন্দর। হিমু ২৫- ৩০ বছর বয়সের একটি যুবক যার কোন কর্ম নেই। কিছু মানুষের কাছে সে বিরক্তিকর।
জগলু তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে জিগ্যেস করে সে পুলিশের ইনফরমার কিনা, হিমু প্রতি বারই অস্বীকার করে। তার পর তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় যাতে সে সত্যি কথা বলে। শাস্তির ধরন হলো জলের মধ্যে মুখ চুবিয়ে ১মিনিট ধরে রাখা হয়। সেখানে গিয়ে হিমুর মনসুর সাহেবের সাথে দেখা হয়। মুনসুর সাহেব হলেন মনসুর গ্রুপের মালিক।
মনসুর সাহেবকে ধরে নিয়ে তার থেকে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপন চাওয়া হয়। মুক্তি পণের জন্যে মনসুর সাহেবের মেয়ে মিতুকে ফোন দিয়ে জানানো হলে প্রথমে মিতু টাকা দিতে অস্বীকার করে। পরে মিতু টাকা দিতে রাজি হয়। সেই টাকা নিয়ে আাসার দায়িত্ব দেওয়া হয় হিমুকে। টাকা নিয়ে আসার পর আর জগলুর সাথে হিমুর দেখা হয় না। তাই হিমু টাকা গুলো মনসুর সাহেবের বাসায় আবার েফরত দিয়ে আসে।
অবশেষে আঙুল কাটা জগলু ভাই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ও তাকে ফাঁসি দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। অন্যদিকে মনসুর সাহেবের মেয়ে বিদেশ থেকে হিমুর নামে চিঠি পাওয়া। সেখানে লিখা সাংকেতিক ভাষায় মিতু হিমুকে ভালোবাসে। চিঠি পড়ে হিমু আর উত্তর দেয় না। শেষ পর্যন্ত হিমু কি মিতুর চিঠির উত্তর দিয়েছিল আর আঙুল কাটা জগলু ভাইয়ের জীবনের কি পরিণতি হয়েছিল, এই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে পড়তে হবে হুমায়ুন আহমেদের অসাধারণ এই উপন্যাস ‘আঙুল কাটা জগলু ‘।