আসমান লতিফুল ইসলাম শিবলী PDF download (থ্রিলার)

বর্তমানের সব থেকে জনপ্রিয় লেখকদের তালিকা করলে অবশ্যই প্রথম দিকে থাকবে লতিফুল ইসলাম শিবলীর নাম! শুধু কি লেখক? না, তিনি জড়িয়ে আছেন আরও নানা সৃজনশীল কাজে। গান রচনা থেকে শুরু করে আরও নানা বিষয়। লেখকের সব বইই কম বেশি পাঠকপ্রিয়। তারমধ্যে যে বইটার মাধ্যমে তিনি বেশি সমাদৃত সেটা হলো, আসমান। বইটা যারা এখনও পড়েন নি তারা বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে।
কাহিনী সংক্ষেপঃ আমেরিকার কু-খ্যাত জেল গুয়ানতানামো বে থেকে বিনা বিচারে ১২বছর জেল খেটে মুক্তি পেয়েছে এক বাংলাদেশি। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সাফ জানিয়ে দিয়েছে এমন স’ন্ত্রা’সীর দায়িত্ব বাংলাদেশ নেবে না।
আমেরিকান আ’র্মি’র কার্গো প্লেন তাকে ফেলে গেছে আলবেনিয়ার তিরানা বিমান বন্দরে। ট্র্যাভেল ডকুমেন্টহীন দেশহীন মানুষটাকে পৃথিবীর কোনো দেশ রা’জনৈ’তিক আশ্রয় দেয় না। রিফিউজির স্ট্যাটাস নিয়ে তাকে থাকতে হবে রেডক্রসের শেল্টারে।
মানুষটা এখন যাবে কোথায়?
মায়ের কথা মতো ধানমন্ডি আট নম্বর রোডের জামে মসজিদের বৃদ্ধ পেশ ইমাম মাওলানা ইসহাক আব্দুর রহমানের কাছে যায় ওমার রিজওয়ান। এই ইমাম লোকটির মধ্যে পিরালী কিংবা বুজুর্গি দেখানোর কোনো প্রচেষ্টা নেই, কথা বলছেন খুব সাধারণ কিন্তু বিচক্ষণ মানুষের মতো। ইমামের গাম্ভীর্য থেকে বের হয়ে এসেছেন। ওমারের সেটা পছন্দ হয়েছে। আস্তে আস্তে ওমার ইমাম সাহেবের বন্ধু হয়ে ওঠে। ওমার লামিয়ার জন্য যে কষ্ট পাচ্ছিল সেটা ভুলে ভুলতে শুরু করে। ওমার ইমাম সাহেবের কথা মতো নিজের হৃদয়কে আল্লাহর ঘর করে নেয়। রুশোর সাথে সে আর নেশা করে না। ওমার নতুন করে জীবন শুরু করে। মসজিদে তাবলিগ নেতা আনোয়ারের ওমারকে খুব পছন্দ হয়। সে তাদের সাথে ওমারকে পাকিস্তান যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। ওমার আনোয়ারদের সাথে পাকিস্তান যায়। সেখানে বিভিন্ন দেশের তাঁবুতে গিয়ে সে সব দেশের মানুষের সাথে কথা বলে ওমার। তাদের দেশ-সংস্কৃতির সম্পর্কে সে অনেককিছু জানতে পারে। একদিন এক তাঁবুতে খালিদ নামের একজন তাদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে কথা বলছিলেন। ওমার মুগ্ধ হয়ে তাঁর কথা শোনে। তারপর ওমার তাদের সাথে আফগানিস্তান যায়। সেখানে সে তাদের সাথে জিহাদে অংশ নেয়। ওমার সেখানে আহত হলে খালিদ ওমারকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। খালিদের বোন আসমা ওমারের চিকিৎসা করে ওমারকে সুস্থ করে। যখন সেখানে আবার যু’দ্ধ শুরু হয় সে সময় খালিদ ওমারকে আসমার সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। যে রাতে আসমার সাথে বিয়ে হয় সে রাতেই খালিদ নি’হত হয়। ওমাররা তখন জানতো না যে খালিদ আর নেই।তাদের বিয়ের ১৪দিনের মাথায় ভয়া’বহ যু’দ্ধ শুরু হয়। আসমার পুরো পরিবার শেষ হয়ে যায়। ওমার আসমাকে হসপিটালে রেখে যু’দ্ধে যায়। আমেরিকানরা ওমারকে ধরে নিয়ে যায়। তাকে গুয়ানতানামো বে তে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে অনেক অ’ত্যা’চার করা হয়, তবু সে আল্লাহর উপর ভরসা হারায় না। সে আল্লাহর ইবাদত করা কখনোই বন্ধ করে না।সেখানকার মেজর এন্ড্রু শিমুজিকে বলে- ‘তুমি যদি কোনোদিন শোনো যে আমি মুসলিম হয়ে গেছি তবে জেনো সেটার কারণ হবে কয়েদি নম্বর ১১০(ওমার)।’ ১২ বছর পর যখন ওমার মুক্তি পায় তখন সে দেশহীন হয়ে যায়। কোথায় যাবে এবার ওমার? আসমা কি আদৌ বেঁচে আছে?
বইটা যতটা ভালো হবে ভেবেছিলাম তার থেকেও অনেক বেশি ভালো লেগেছে। মনে হলো যেন এক বইয়েই অনেকগুলো গল্প পড়লাম। এক কথায় অসাধারণ ছিল। লেখকের লিখনী ছিল চিত্তাকর্ষক! আর কাহিনীটা আরও বেশি চিত্তাকর্ষক ও উইনিক।
বেশ অনেকগুলো ভালো লাগার চরিত্র ছিল। ওমার তো আছেই, আসমা, ইমাম সাহেব, মা,রুশো, খালিদ, শিমুজি। এই চরিত্রগুলো খুবই ভালো লেগেছে। তার মধ্যে ওমার, আসমা আর ইমাম সাহেবের চরিত্রটা আমার বেশি ভালো লেগেছে। শেষ পর্যন্ত কি হবে ধারণা করা খুব কঠিন। আর এখানেই তো আসল মজা!
সবশেষে বলবো, ইউনিক একটা টানটান গল্প পড়তে চাইলে বইটা পড়া আবশ্যক!