বেলা ফুরাবার আগে PDF Download for Free আরিফ আজাদ

লেখক আরিফ আজাদ একজন ধর্ম প্রিয় মানুষ। তিনি প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ 1 ও 2 লিখে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন।অনেক নাস্তিকদের কঠোর প্রশ্নের জবাব তিনি বেশ যুক্তি সহকারে দিয়েছেন।

অনেক যুবক তার বই পড়ে ইসলামের আলোর পথ খুঁজে পেয়েছেন। অনেকেই হতে চেয়েছেন একজন সাজিদ হতে । সাজিদ হওয়ার লক্ষ্যে তিনি লিখেছেন বেলা ফুরাবার আগে।পার্থিব জীবনে কিভাবে চললে একজন সাজিদ হওয়া যায় এবং খোদার নৈকট্য লাভ করা যায় তা তিনি এ বইয়ে দেখিয়েছেন।

বেলা ফুরাবার আগে নামকরণ এর স্বার্থকতা

প্রথমে বইটির নামকরণ নিয়ে কিছু বলতে চাই। মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। স্বল্প সময়ের এই জীবনে আমরা উদ্দেশ্যহীন, দিকভ্রান্ত যুবকের মত ইঁদুর -দৌড় নামক জীবনের পিছনে ছুটেই জীবনের বেশিরভাগ সময়ই হারিয়ে ফেলি।জীবনটাকে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত এর সাথে তুলনা করতে পারি।

জীবনের সাথে খেলতে খেলতে যখন জীবনের বেলা শেষ হয়ে যায় তখন আমাদের বোধ জাগ্রত হয়। কিন্তু সময় অল্প এবং সেই স্বল্প সময়ে আমাদের বোধকে আর কাজে লাগাতে পারি না। তাই জীবনের বেলা ফুরাবার আগে একজন সাজিদ হওয়ার লক্ষ্যে, সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজেকে সঁপে দিতে এই বইটি প্রত্যেকটি যুবকদের পড়া আবশ্যক।

বেলা ফুরাবার আগে বুক রিভিউ

বইটি শুরুর আগে অধ্যায় দিয়ে শুরু হয়েছে। মহানবীর মৃত্যুতে তার সাহাবীগণের ভেতরে কি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল এবং সাহাবীগণের কিভাবে তা দমন করেছিল এবং আমরা তো একই ভাবে অনুসরণ করব তা দেখিয়েছেন। জীবনে চলার পথ সমান সমান নয়।

অল্পতেই ভেঙে পড়া মানুষগুলো যদি অতীতের নবী-রাসূলের শিক্ষা গ্রহণ করে চলে তবে দুনিয়ার জীবনের মন খারাপ দুঃখ-কষ্ট কোন ব্যাপার নয়। মন খারাপের দিনে বেশি বেশি করে রবের কাছে ফরিয়াদ জানানোর মাধ্যমে আমরা অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক সমস্যাগুলো সমাধান পেতে পারি।

সমস্যা আমাদের জীবনে আসবেই। সেটা ভয়, ক্ষুধা, জানমাল, ফসলের ক্ষতি যেকোনোভাবেই হোক না কেন। তার জন্য ভাগ্য বা আল্লাহকে দোষারোপ করা যাবে না। যেহেতু দুনিয়াটা একটা পরীক্ষা ক্ষেত্র সেহেতু আমাদের দুনিয়াবী বিষয়ে ভুলে না গিয়ে নবী রাসূলের দেখানো নির্দেশিত পথে চলার মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

বস্তুবাদের চাকচিক্যময় বিলাসিতাতে না ডুবে সুখের সন্ধান করার জন্য, মনের প্রশান্তি আনার জন্য রবের কাছে প্রার্থনা জানাতে হবে।অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। সমাজে অর্থ সম্পদশালী উচ্চশ্রেণীর সাথে নিজেকে তুলনা না করে নিজের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থেকে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে।

প্রতিযোগিতাময় জীবনের পিছনে না ছুটে, ইঁদুর দৌড়ের পেছনে না ছুটে আমরা যদি আমাদের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকি এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা কে বাদ দিয়ে চলতে পারি তাহলে আমাদের ভেতরের সুখ প্রকাশ পাবে এবং আমরাও সুখী থাকতে পারবো।

জীবনে ইঁদুর দৌড় না দৌড়ে জীবনের ক্ষুদ্র সময়ে আমরা আল্লাহর কাজে নিজেকে সপে দিই। আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আমাদের জীবনের যে পাপ গুলো আছে সেগুলো থেকে পরিত্রাণের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে তওবা করে এবং নিজেদের জন্য দোয়া করি।

আপনি আমি যে অসুস্থ প্রতিযোগিতায়, অসুস্থ মানসিকতায়, অসুস্থ দৃষ্টিভঙ্গিতেজীবন গড়ে তুলি আল-কোরআনের জীবনব্যবস্থায় পরিপূর্ণ সেসবকে বাদ দিয়ে চলি। সৃষ্টিকর্তার মহান দান চোখকে হেফাজত করে এবং এই চোখকে আমরা কাজে লাগাই মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্র আল কোরআন পাঠের মাধ্যমে।

জীবন গড়ে তুলি আল-কুরআনের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানে।আমাদের জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলি আমাদের পবিত্র সম্পর্কের আত্মীয় স্বজনের সাথে।ডিজিটাল শয়তানের ফাঁদে পা না দিয়ে, অবৈধ সম্পর্ক গড়ে না তুলে, হারাম রিলেশনশিপ না করে আমরা যেগুলো হালাল সম্পর্ক সেগুলো গড়ে তুলি।

মনে রাখবেন চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়। দুনিয়ার জীবনের আপনি যা কাজ করবেন সে সবগুলোই আপনার আমল নামায় লিখা হবে। তিল পরিমান আমল বাদ পড়বে না। ভালো কাজের জন্য আপনি পাবেন জান্নাত আর খারাপ আমলের জন্য আপনি পাবেন জাহান্নাম।

জীবনের বেলা ফুরাবার আগে জীবনের ভবলীলা সাঙ্গ করার আগে তাই আসুন আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তার পথে পথে ফিরে আসি। দ্বীনের নবী যেহেতু আমাদের দ্বীনের শিক্ষা দান করে গেছেন সেহেতু সেই দিনের পথে আমরা আমাদের জীবনকে অতিবাহিত করে সৃষ্টিকর্তার শোকর গুজার করি।

বেলা ফুরাবার আগে কেন পড়বো

সালাত আদায় করুন। সালাতে আপনার মন না বসলে মেহনত করুন। কিভাবে মেহনত করলে পূর্ণাঙ্গ ভাবে সালাত আদায় করতে পারবেন তা লেখক আরিফ আজাদ সবিস্তারে বুঝিয়ে দিয়েছেন।পছন্দের জিনিসকে হৃদ মাঝারে না রেখে সৃষ্টিকর্তার দেয়া নেয়ামত গুলো এবং তার দেখানোর নির্দেশিত পথগুলোকে মেনে চলুন। যুদ্ধ করুন শয়তানের সাথে। আপনার উদ্দেশ্য হাসিলের পথে যদি সে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে তার সাথে মনে মনে যুদ্ধ করুন।

নিজের ইচ্ছা শক্তি দ্বারা শয়তানের কাজগুলো ব্যহত করুন।ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার কাজে,অর্থ-সম্পদ জোগাড় করতে, রাজপ্রাসাদ গড়ে না তুলে আপনাকে যে পরকালে মাসের পরে মাস,বছরের পরে বছর কাটাতে হবে সেই মেঘের ওপারে একটা প্রশান্তিময় ঘর বানাতে চাইলে আপনাকে হতে হবে সকাল বেলার পাখি।

দিন শুরু করুন ফযরের সালাত আদায়ের মধ্য দিয়ে,দেখবেন আপনার দিনটি সুন্দর কাটবে।ঠিক কবির লাইনের মত আপনিও খোদার কাছে ধরা দিন সকাল বেলার পাখি হয়ে।ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়ে রবের কাছে দুই হাত তুলে মোনাজাত করুন আপনার অতীত,বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিনগুলোর জন্য।আসুন আমরা বদলাই।

অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসি আলোর পথে,সত্যের পথে।প্রিয় রবের আনুগত্য স্বীকার করি,নির্দেশিত পথে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাই।ক্ষনস্থায়ী দুনিয়ার মোহে না পড়ে নিজেকে জানি,নিজের উৎস জানি,নিজের পরিনতি জানি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি।জীবনের বেলা ফুরাবার আগে নিজের পরকালের জন্য কিছু করি।

“এবার ভিন্ন কিছু হোক
জাগরণের এই জাগ্রত জোয়ারে
এবার নতুন করে লেখা হোক জীবনের জ্যামিতি
বেলা ফুরাবার আগে
আজ তবে ফেরা হোক নীড়ে……

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top