ভ্রম এম. জে. বাবু PDF download (সামাজিক উপন্যাস)

বর্তমান আমলের তরুণ জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক হলেন গিয়ে এম. জে. বাবু। কিন্তু এই এম. জে. বাবুর প্রথম বইটা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। যেটা দিয়ে তিনি মৌলিক সাহিত্যের জগতে প্রবেশ করেন। সে সম্পর্কে অনেকেই জ্ঞাতহীন। যাই হোক, লেখক এম. জে. বাবুর প্রথম মৌলিক বই হলো ভ্রম। বরাবরই দারুণ বইটা। যারা বইটা পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপঃ ২২ শে শ্রাবণ।
দিনটার সাথেই কেমন যেন এক বাঙলার মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে। এই দিনটায় পৃথিবী ছেড়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর!
দিনের স্মৃতিচারণে যখন রবীপ্রেমিরা ব্যস্ত, ঠিক এই সময় এক তরুণ বেরিয়ে পড়ে তার ভালোবাসার মানুষটাকে নতুন করে খুঁজতে। জড়িয়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায়। তার ভালোবাসার মানুষ তাকে চিরকুটে লিখে দিয়েছিলো, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এক গন্তব্যে পৌঁছে দিতে।
দিনের শুরুতে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে তরুণ বের হয়ে যায় তার ভালোবাসার মানুষটাকে খুঁজতে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা হয়ত একটু ভিন্ন কিছু ভেবে রেখেছেন তরুণের জন্য। নানান ঘোরপ্যাঁচের মধ্যে দিয়ে তরুণ নতুন করে আবিষ্কারের নেশায় ছুটছে সারদার পেছনে।
অবশেষে তরুণের হাতে ধরা দেবে কি সারদা?
তরুণ আর সারদার বন্ধনের আড়ালে কি সৃষ্টিকর্তার কোনো গোপন যোগ-বিয়োগ আছে? কিইবা আছে এই গল্পের শেষে? আদেও কিছু আছে কি? জানতে চাইলে পড়ে ফেলুন বইটি।

বইয়ের গল্পটা শুরু থেকেই সাধারণ ও সাবলীলভাবে এগিয়েছে। গল্পটাও সাদামাটাই। মা, বাবা, ভাই, ভাবিকে নিয়ে সুন্দর একটা পরিবার এবং স্বল্প কয়েক পরিচিত মানুষ ও প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে গল্পটাকে খুব সুন্দর করে এগিয়ে নিয়েছেন লেখক। বইটাকে এক যুবকের স্মৃতিময় একদিন ও পূর্বের স্মৃতির ছোট্ট ভান্ডার বললেও দোষ হবেনা। ভ্রম বইটাতে লেখক একই সাথে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে নানান বিষয় তুলে ধরেছেন। একটা বাঙালি পরিবারের দৈনন্দিন চিত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া এক ছেলের বন্ধু ও ভিন্ন মানুষদের সাথে চলার গল্প, ভালোবাসার মানুষকে মুখ ফুটে কিছু বলতে না পেরে মনে মনে ভালোবেসে যাওয়া, কাউকে বলার জন্য মনের মাঝে জমানো কিছু কথা এবং কিছু মানুষের বিশ্বাসঘাতকতাকে একই সুঁতোয় বেঁধে দিয়েছেন লেখক। আহা কি দারুণ অনুভূতিগুলো! খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন সেসব।

চরিত্র বিশ্লেষণঃ লেখক চরিত্র গুলোকে খুব সুন্দরভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রতিটি চরিত্রকে নানা ঘটনার মাধ্যমে পাঠকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। সব চরিত্রকে নিয়েই আলাদা আলাদা ঘটনা তুলে ধরেছেন৷ যা পাঠক এবং বইয়ের মাঝে আকর্ষণের বন্ধন তৈরি করে দেবে।
তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে কিছু জায়গায় মনে হয়েছে যে, সাধারণ একটা কথাকে একটু বাড়িয়ে বলা হয়েছে এবং কোনো কোনো চরিত্রের পরিচয়পর্ব কিছুটা বড় করে ফেলেছেন। কম গুরুত্বপূর্ণ কিছু চরিত্রকে ইচ্ছে করেই যেন বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছেন লেখক।

আসলে এম.জে.বাবুর লেখার সাথে প্রবাদটার যেন দৃঢ় মিল রয়েছে। কেননা, সমাপ্তি বা টুইস্ট দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি টুইস্টের উপর টুইস্ট দিয়ে পাঠককে বোকা বানাতে ছাড়েন না। পাশাপাশি দুঃখময় গল্পের সমাপ্তি লেখাতেও দ্বিধাবোধ করেন না।
প্রায় সময় দেখা যায় অনেক লেখকের প্রথম বইগুলোর মধ্যে বড় ধরনের কিছু ভুল ত্রুটি থেকে থাকে। তবে ভ্রমের ক্ষেত্রে এমন কিছু নজরে পড়েনি।
আর বারবার মনে হয়েছে যে গল্পটা আর একটু বড় হলে ভালো হতো। এত ছোট না হয়ে। এবং গল্পের সমাপ্তিতে একটু তাড়াহুড়ো করেছেন। লেখক চাইলেই গল্পের সমাপ্তি বিস্তারিত কিছু আলোচনার মাধ্যমে আরো সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। তাতে বিরক্তি নয় বরং আরও বেশিই ভালো লাগতো।

সবশেষে বলবো, অসাধারণ ছোট্ট একটা উপন্যাস। দারুণ একটা সময় কাটবে সুতরাং নির্দ্বিধায় বইটা পড়ে ফেলতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top