বিবিয়ানা PDF Download কিঙ্কর আহসান

‘বিবিয়ানা’ উপন্যাসটির লেখক হলেন ‘কিঙ্কর আহসান’। বর্তমান সময়ের এক কালজয়ী লেখক হিসেবে বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে আবির্ভূত হয়ে বেশি দিন সময় প্রয়োজন হয়নি এই লেখকের পাঠক সমাজে জনপ্রিয়তা পেতে। মার্জিত উপস্থাপনার ধরণ, সহজ-সরল ভাষায় গল্পের কাহিনী তুলে ধরা, সবকিছু মিলে এই লেখকের সৃষ্টি অনবদ্য।

কোন কিছুকেই কিঙ্কর আহসান অতিরঞ্জিত করতে চান না তার লেখায়। সহজ সাধারণের মাঝে যেই সৌন্দর্য বিরাজমান তাই লেখক খুব নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলেন। আরেকটি বিষয় লেখকের উপন্যাসগুলো পড়লে বোঝা যায়, তা হলো লেখকের কল্পনা শক্তি খুব প্রখর। গল্পের মাঝে এমন এমন কিছু বিষয় তিনি তুলে ধরেন যার তুলনা হয় না।

‘বিবিয়ানা’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে এবং প্রকাশনী সংস্থা হলো ‘অন্বেষা প্রকাশনী’। উপন্যাসটি আকারে বড় মনে হলেও গল্প গঠনের নিপুণতায় তা বোঝা যায় না একবার শুরু হলে কখন তা শেষ হয়ে যায় বোঝা মুশকিল। উপন্যাসটির মূল পটভূমি গড়ে উঠেছে মানুষের জীবনের জটিলতাকে কেন্দ্র করে।

আরও সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে সাধারণ জীবনে প্রত্যেকটি মানুষের সম্পর্কের জটিলতার গল্প উপন্যাসটি৷ উপন্যাসটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, উপন্যাসটির চরিত্রগুলোকে গঠন করা হয়েছে শৈল্পিক আবহ নিয়ে। পড়তে শুরু করলে যে কোনো পাঠকের কিছু চরিত্রের প্রতি মায়া জন্মাবে, কিছু চরিত্রের প্রতি বিদ্বেষ জন্মাবে আর মনে হতে পারে প্রত্যেকটি চরিত্ররই বাস্তব জীবনে অস্তিত্ব রয়েছে।

আমাদের সমাজে মেয়েদের ভূমিকা, তাদের আচার-ব্যবহার, মনস্তাত্ত্বিক বিষয় খুব ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। কখনো কখনো হঠাৎ করেই কিছু চরিত্র হয়ে ওঠে নির্মম আবার কখনো তারাই হয়ে ওঠে উদাসীন। ফজিলাত বিবি যিনি কিনা জীবন যুদ্ধে পরাজিত একজন সৈনিক তার একমাত্র চাওয়া হলো তার সন্তানেরা যেন নিজেদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

নিজের জীবনের সকল শখ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে হলেও সে তার এই আকাঙ্খা পূরণ করতে চায়। তার স্বামী হলো কালা মিয়া। কালা মিয়ার প্রতি ফজিলাত বিবির অনেক অভিযোগ। কালা মিয়া জীবনের প্রতি উদাসীন এক চরিত্র, জাগতিক হিসাব নিকাশ বুঝতে অপারগ এক ব্যক্তি কালা মিয়া।

আবার উপন্যাসের শুরুতে পাঠকের কাছে সাভেরা চরিত্রটি আবির্ভূত হয় এক বিলাসী নারী রূপে। সাভেরার স্বামী হলো জালাল। এই দুই চরিত্র আবার পরে পাঠকের কাছে ধরা দেয় সরল রেখার মত সরল হয়ে। কালা মিয়া খুব অবহেলিত তার ব্যক্তি জীবনে। তার সন্তানেরা তাকে পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না, তার স্ত্রী তাকে নিয়ে খুব বিরক্ত।

উপন্যাসটি যে শুধু মাত্র চিত্ত বিনোদনের জন্য তা নয়, এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে লেখক সমাজের বিভিন্ন বৈসাদৃশ্য ও ফুটিয়ে তুলেছেন। চেয়ারম্যানের কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে সমাজ জীবনের বিভিন্ন অসঙ্গতি ফুটে উঠেছে। আবার ডাকাতের চরিত্রটির জন্যও মাঝে মাঝে খুব হাহাকার বোধ হয়।

আমাদের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক জীবনের এক অতি সুন্দর ও সত্য প্রতিফলন উপন্যাসটিতে উপস্থাপিত হয়েছে যা কোন পাঠকের মনে জায়গা সৃষ্টি করতে সামর্থ্য রাখে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top