বিড়াল সাধক PDF Download তামজীদ রহমান

তামজীদ রহমানের প্রথম বই হলো এই ‘বিড়াল সাধক’। এর আগেও নানা জায়গায় লেখালিখি করেছেন বটে তবে বই হিসেবে বেড়িয়েছে এটাই প্রথম। বইটা রুরাল থ্রিলার জনরার। অন্য টাইপের বই। রীতিমতো বিড়াল নিয়ে অন্য লেভেলে চলে যাওয়া! বইটা বেশি বড় না। এক নিশ্বাসে সহজেই পড়ে ফেলা যায়। বইটার পিডিএফ আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

বিড়ালের সাথে জাদুবিদ্যা আর অতিপ্রাকৃতের সম্পর্ক সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই প্রসিদ্ধ। প্রাচীন মিশরীয়রা বিড়ালকে মনে করত ইহজগত আর পরজগতের মধ্যকার প্রতিনিধি। আমাদের চেনা জগতের জাগতিক পর্দার আড়ালে লুকানো অতিপ্রাকৃত জগতও তাদের চোখে ধরা দেয়। আঁধারের পর্দার আড়ালে থাকা মায়াবী জগতের রহস্যঘেরা অবয়ব তাদের সামনে মূর্ত হয়ে উঠে। বাতাসে মিশে থাকা অশরীরী কন্ঠস্বর তাদের কানে কানে বলে যায় সহস্রাব্দ প্রচীন গুপ্তধনের ঠিকানা, কোথায় লুকানো আছে অমরত্বের চাবি, কি করলে পাওয়া যাবে সমস্ত মানবজাতিকে নিজের দাসে পরিনত করার ক্ষমতা…

আর এসবই একজন মানুষের পক্ষেও অর্জন করা সম্ভব। তেমনই একজন হলেন মল্লিক সাহেব। ভালো একটা কোম্পানির ভালো একটা পদের চাকরি করেন তিনি, কিন্তু হঠাৎ তাঁরই কিছু সহকর্মী কোম্পানির বেশ বড়সড় টাকা মেরে দেয় আর ফাঁসানো হয় মল্লিক সাহেবের মতো একটা ভালো মানুষকে। কোম্পানির পুরোনো কর্মী হিসেবে তাঁকে সময় দেওয়া হয় নিজেকে নির্দোষ প্রমান করার, তিনি কি পারবেন? বেছে নেওয়া অতিপ্রাকৃত পদ্ধতিও কি তাকে বাঁচাতে পারবে?

‘বিড়াল সাধক’ তামজীদ রহমানের প্রথম বই। এর আগে লেখকের কোনো লেখা পড়িনি, তাই বরাবরই একটু শঙ্কিত ছিলাম কেমন হবে ভেবে, তবে দুই একটা পজেটিভ রিভিউ দেখে বইটা কিনে ফেলি, কিন্তু একটা জিনিস আগে থেকেই খোঁচা দিচ্ছিলো, একজন সাধারন শহুরে ভালো মানুষ যত বড়ই বিপদে পরুক, তিনি কি এমন অস্বাভাবিক পদ্ধতি বেছে নিবেন উদ্ধারের জন্য? এর অবশ্য ভালো একটা কারন দেখিয়েছেন লেখক, মল্লিক সাহেব একজন ভালো মানুষ অবশ্যই তবে ১৫ বছর বয়স থেকেই তিনি একটু অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা লাভের সাধনা করার চেষ্টা করতেন এমনকি চাকরি থাকা অবস্থায়ও নানা উদ্ভট কাজ তিনি করতেন।

সুতরাং এমন একটা বিপদে তিনি ওদিকেই ঝুকতে পারেন। আরও একটা জিনিস ভালো লেগেছে তা হলো কাহিনী শুরুর কয়েক পৃষ্ঠার মধ্যেই পাঠকের মনে কৌতুহল জাগিয়ে তোলা। শেষ পর্যন্ত মল্লিক সাহেবের কি হলো, তিনি সাধনা শেষ করতে পেরেছিলেন কি-না? এসব প্রশ্নই পাঠককে বইটা শেষ করতে বাধ্য করবে।

প্রতিটা ভালো বই শেষ করার পর আমার একটা অনুভূতি হয়, ‘কি পড়লাম এটা’? এই বইটাও তার ব্যাতিক্রম নয়। এক কথায় খুব ভালো লেগেছে। আগে থেকেই জানতাম এটা লেখকের প্রথম বই, পড়ার সময় বুঝতেও পারছিলাম যে লিখনি নবীন একজনের তবে অল্পক্ষণেই বইয়ে এতোটা ডুবে গিয়েছিলাম যে, মল্লিক সাহেবের অপমানে আমি নিজেও আপমানিত বোধ করছিলাম। এটা যে শুধু থ্রিলার তাই নয়, এখানে সমাজের একটা খন্ড চিত্রও উঠে এসেছে। সেখান থেকে লেখকের বলা একটা লাইন খুবই ভালো লাগে–
“মানুষ যদি তার চেয়ে উচ্চপর্যায়ের কাউকে অপমান করার সুযোগ পায়– সে সুযোগ কোনোও ভাবেই সে হারাতে চায়না।”

বইয়ের মূল চরিত্র হলেন মল্লিক সাহেব। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি আছেন। একা অসহায় একজন মানুষ। লেখক এই চরিত্রটাকে এতটাই যত্ন করে ফুটিয়ে তুলেছেন যে তাঁকে এক সময় মনে হবে যে তিনি অসহায় একজন মানুষ, আবার এটাও মনে হবে তাঁর মতো খারাপ লোক হয় না!

আমি অবাক হয়েছিলাম যে এই লোকের কি কোনো ভালো নাম নেই? আছে। সেটা বেশ পরে বলা হয় তাই আমি সেটা খোলাসা করছি না।
গল্পের প্রয়োজনে আরও বেশ কিছু চরিত্র আছে। যেমন– মল্লিক সাহেবের স্ত্রী আফরোজা। তাদের মেয়ে রূপা, ছেলে রুমি। এছাড়াও অফিসের বস মিজান সহ আরও বেশ কয়েকজন।

বইটা প্রথমে ঢাকা শহর, তারপর তা গ্রামে চলে আসে মূল কাহিনী সব গ্রামেই ঘটে। ছোট বই তাই প্লটও এত বড় নয় যে, তা নিয়ে বিস্তারিত বলতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top