ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা’ কে না শুনেছে এই নাম! সেবা প্রকাশনী থেকে রকিব হাসানের অনুবাদে প্রকাশিত বইটা জনপ্রিয় হয়েছে অনেক। এবং এখনো সমান তালেই চলছে! সেবা প্রকাশনী থেকে এটি প্রথম প্রকাশ হয় ১৯৭৯ সালে তখন থেকেই জনপ্রিয় বইটি। তার কারণও আছে।
এর অনুবাদ, তবে সে বিষয়ে পরে আলোচনা করবো। যাই হোক, বিখ্যাত এই ‘ড্রাকুল’ বইটি, যাকে বিশ্বের ভয়ঙ্করতম পিশাচ কাহিনী হিসেবে ধরা যারা এখনো পড়েন নি তারা সত্যিকার অর্থেই অসাধারণ একটা জিনিস থেকে বঞ্চিত। সুতরাং আপনারা বইটির পিডিএফ ফাইল আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পড়ে নিতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
ইংল্যান্ডের একটা দুর্গম অঞ্চল ট্রানসিলভেনিয়া। আর তার থেকেও দুর্গম অঞ্চলে বাস তার। নাম তার কাউন্ট ড্রাকুলা। ট্রানসিলভেনিয়ার সবাই তাকে খুবই ভয় পায়। আর তার কাছেই কিনা একটা বিশেষ কাজে যাচ্ছে জোনাথন। অবশ্য সে কাউন্ট সম্পর্কে কিছুই জানতো না। কিন্তু ট্রানসিলভেনিয়ায় এসে কাউন্টের নামে আজাবাজে কথা শুনে অবাক হয় সে। সাথে বিরক্তও হয়। ইংল্যান্ডের মতো উন্নত একটি দেশে তাও আবার বিংশ শতাব্দীতে এসব উদ্ভট কথা বিশ্বাস করা বোকামি। এর থেকে ভালো তার স্যার হকিন্সের আদেশ পালন করা। এটাই তার চাকরি।
মূলত হকিন্স একজন আইনজীবী। আর তার সহকারী হলো জোনাথন। কাউন্ট ইংল্যান্ডের জমী কেনার ব্যাপারে হকিন্স কে ডেকেছিল। কিন্তু সে অসুস্থ থাকায় সরল বিশ্বাসেই জোনাথন কে পাঠায় সে এই কাজের জন্য। কিন্তু তারা কেওই জানতো কি গূঢ় উদ্দেশ্য রয়েছে কাউন্টের। যদি জানতো কখনোই ওদিকে পা বাড়াতো না।
শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল? জোনাথন কি সহজে পৌঁছাতে পেরেছিল কাউন্টের ঐ দুর্গম প্রসাদে? তা পেরেছিল বটে, অনেকে কথা উপেক্ষা করে ঠিকই সে কাউন্টের প্রসাদে যায়। কিন্তু কাউন্টের উদ্দেশ্য কি ছিল আসলে? তা কি সফল হয়েছে আদেও? নাকি বিনাশ হয়ে গেছে সে? এসব কিছুর প্রশ্নের উত্তর বইটা পড়লেই পাবেন।
বইটার শুরুটা খুবই সাদামাটা। এতোটাই যে বইটা সম্পর্কে ধারণা না থাকলে আর পড়তেও ইচ্ছা করবে না। কিন্তু যার নূন্যতম জ্ঞান আছে এই সম্পর্কে সে কিছুতেই মিস করবে না। প্রায় বিশ/ত্রিশ পেইজ পর্যন্ত একটু ধৈর্য্য ধরে পড়তে হবে আর তারপরই শুরু হয় আসল কাহিনী। অর্থাৎ জোনাথন কাউন্টের দুর্গম প্রাসাদে পৌঁছালে বাকি কাহিনীর শুরু।
বইটা মূলত দুই খন্ডে ভাগ করা। অবশ্য দুটো খন্ডই একসাথে দেওয়া আছে। প্রথম খন্ড শেষ হওয়ার সাথে সাথে যদি দ্বিতীয় খন্ডটা না পড়তে পারেন তো মন আনচান করবে! প্রথম খন্ডে প্রায় অর্ধেকটাতে বিস্তৃত জোনাথন এবং তার সাথে ঘটে যাওয়া কাহিনী। সে কিভাবে ঐ পিশাচ থেকে বেচেঁছিল সেই কাহিনী। আর তারপরেই আসে জোনাথনের প্রেমিকা মিনা হরাকার, তার বান্ধবী লুসি। এদিকে আবার লুসির সাথে ঘটতে শুরু করে অদ্ভুত সব ঘটনা। আস্তে আস্তে ফ্যাকাসে হয়ে যেতে থাকে লুসির মুখ।
ভয় পেয়ে পরিচিত ডাক্তার সেওয়ার্ডকে দেখনো হয়। তিনি একটু রহস্যের আঁচ পেয়ে তার শিক্ষক প্রফেসর ভ্যান হেলসিংকে ডাকে সে। তিনি পরীক্ষা করে দেখেই বুঝ ফেলেন যা বুঝার। এদিকে আবার হারিয়ে যেতে থাকে শিশুরা। ফিরে এলে তাদের গলায় থাকে সূক্ষ ক্ষত চিহ্ন। আর এসব কিছুরই সাথে সম্পর্ক রয়েছে ঐ পিশাচ কাউন্টের। তাকে শেষ করতে না পারলে বড় সমস্যা হয়ে যাবে! এসব করার জন্যই এক হয় মিনা, জোনাথন, ডাক্তার সেওয়ার্ড, প্রফেসর হেলসিং, আর দুঃসাহসিক মরিস। তাদের রোমাঞ্চকর অভিজান আপনাকে নিয়ে যাবে বইয়ের শেষ পাতা পর্যন্ত!
এবার অনুবাদের কথায় আসি। আমাদের চিরচেনা তিন গোয়েন্দার জনক রকিব হাসান অনুবাদ করেছেন বইটি। অনুবাদ এতো সাবলীল যে ক্ষণিকের জন্য কোথাও থমকাতে হবে না। আরা অনুবাদশৈলি এতো দক্ষ যে অসম্ভব সব কাহিনীকেও সম্ভব বলে মনে হয়। সুতরাং নির্দ্বিধায় পড়া যায়।
সবশেষে একটা কথাই বইটা অসাধারণ, না পড়লে মিস!