‘ঈগল ইন দ্য স্কাই’ উপন্যাসের রচয়িতা হলেন ‘উইলবার স্মিথ’। বর্তমান বিশ্বের সাহিত্য জগতে এক অন্যন্য নাম হলো উইলবার স্মিথ। পেশা জীবনের শুরু এ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে হলেও সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ তাকে সর্বদাই লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিলো। তাই তো প্রথম উপন্যাস প্রকাশের পর থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়ে ওঠেন এই লেখক।
পৌরাণিক সত্যের সাথে নিজের কাল্পনিক জগতের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে উইলবার এ পর্যন্ত যতগুলো বই প্রকাশ করেছেন প্রত্যেকটিই ব্যবসা সফল এবং পাঠকদের কাছে বিপুলভাবে সমাদৃত। লেখকের প্রত্যেকটি বই প্রায় মিলিয়ন কপি করে বিক্রি হয়েছে এবং প্রত্যেকটি বই আবার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
ঈগল ইন দ্য স্কাই এই উপন্যাসটিও আমাদের দেশে অনূদিত হয়েছে। অনুবাদ করেছেন ‘জেসি মেরী কুইয়া’ এবং প্রকাশনী সংস্থা হলো ‘রোদেলা প্রকাশনী’। লেখকের অন্যান্য বইয়ের মত এটিও কিছুটা দীর্ঘকায় কিন্তু পড়তে শুরু করলে এই দৈর্ঘ্যের বিষয়টি চোখে পরে না।
উপন্যাসটির মূল পটভূমি গড়ে উঠেছে ডেভিড মরগান নামক চোদ্দ বছর বয়সী এক তরুণকে কেন্দ্র করে৷ তার বাবা হলো একজন দক্ষিণ আফ্রিকান ধনকুবের। ডেভিডের প্রবল আগ্রহ কাজ করে বিমান চালানোর প্রতি, তাই সে তার প্রশিক্ষণ শুরু করে বার্নি ভেন্টার এর সাথে।
প্রশিক্ষণ শুরু করার অল্প সময়ের মাঝেই ডেভিড অনেক শিক্ষা রপ্ত করে ফেলে এবং বিমান চালোনায় দক্ষ হয়ে ওঠে৷ প্রশিক্ষণ শেষ হবার পর ডেভিড তার পাইলট লাইসেন্স পেলে ঠিক করে, কোন ধরণের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকে অগ্রসর না হয়ে সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিমানবাহিনীতে যোগ দিবে।
যেই ভাবা সেই কাজ, ডেভিডের দক্ষতার পরিচয় পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই সে বিমান বাহিনীতে চাকরি পেয়ে যায়। এরপর ইউরোপের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে ঘোরার মাঝে একসময় ডেবরা নামক এক ইসরাইলি মেয়ের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়। কিন্তু কিছু ঝামেলার জন্য তাদের দুজনের মধ্যে বনিবনা না হলে তারা দুজন দুজনের জীবনে মনোযোগী হয়।
কিছুদিন পরেই আবার ডেভিড জেরুজালেমের উদ্দেশ্যে রওনা করে ডেবরাকে খুঁজে বের করার জন্য। জেরুজালেমে গিয়ে জেনারেল মোডরেচাই এর সাথে ডেভিডের পরিচয় হয় এবং সে ডেভিডকে ইসরায়েলের সশস্ত্রবাহিনীতে যোগ দিতে বললে ডেভিড রাজি হয়।
কিন্তু এরই মাঝে ডেবরার ভাইয়ের বিয়েতে এক জঙ্গি হামলা হয় এবং এর পর থেকেই উপন্যাসের মোড় পালটে যেতে থাকে। উপন্যাসটি প্রথম দিকে কিছুটা ধীর গতির হলেও পরে তা রোমাঞ্চকর উপন্যাসে পরিণত হয়। উইলবার স্মিথের বর্ণনার ভঙ্গি, গল্প গড়ে তোলার ধরণ সব মিলে উপন্যাসটি অসাধারণ। উপন্যাসটির শেষের অংশটুকুও খুব ভালো লাগবে যেকোনো পাঠককের।