বিখ্যাত ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ রচিত একটি জনপ্রিয় উপন্যাস হল ‘এবং হিমু’। এটি একটি চমৎকার উপন্যাস। এটি হিমু সিরিজের ৫ম উপন্যাস। এই বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বইমেলায়। বইটি প্রকাশিত হয় সময় প্রকাশনী থেকে। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ৮০ টি এবং বইটি হার্ডকাভারে ছাপা হয়েছে। বইটি প্রকাশিত হওয়ার পূর্ববর্তী বই ‘ পারাপার ‘ আর পরবর্তী প্রকাশিত বই ‘ হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম’।
এবং হিমু উপন্যাসটির মূল কাহিনী
বাদলের গলায় মাছ খেতে গিয়ে কীভাবে যেনো কাটা আটকে গেছে। কোনভাবেই সেই কাটা নামানো যাচ্ছে না। খাওয়া দাওয়া সব কয়েক দিন থেকে বন্ধ। অনেক ডাক্তারও দেখানো হয়েছে কিন্তু কিছুতেই কাটা নামানো যাচ্ছে না। এমনকি বাদল ঢোক পর্যন্ত গিলতে পারছে না। বাদলের বিশ্বাস হিমু ছাড়া গলার কাটা কেউ নামাতে পারবে না। তাই হিমুকে গরু খোঁজার মত খোঁজা হচ্ছে।
তারপর একদিন রাতে হিমুর খুধা লাগায় সে মাজেদা খালার বাসায় হাজির হয়। সেই রাতে খাওয়ার সময় বাদলের গলার কাটা নেমে গিয়েছিল। সেই থেকে হিমু তার খালা খালুর কাছে তাদের প্রিয় পাত্র। আগে থেকেই বাদল হিমুর একনিষ্ঠ ভক্ত। সে আবার মনে করে হিমু মহাপুরুষ। এই ঘটনার পর থেকে সে আরো বেশি হিমুর ভক্ত হয়ে যায়।
ইরা হল বাদলের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। বাদলের বাসায় থেকে সে বিশেষ কারণে পড়ালেখা করছে। কখনোই সে হিমুকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনা। সবাই মনে করে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার বলে হিমু মাছের কাটা নামিয়ে দিয়েছে। শুধু ইরা কখনোই এিসব বিশ্বাস করে না। সে মনে করে হিমুর এইসব মানুষ ঠকানোর ধান্দা।
বাদলের কাটা নামিয়ে দেওয়ার পর হিমুর সাথে ইরার বেশ কয়েকবার দেখা হয়। বাদলের সন্ন্যাসব্রত তাদের দেখা করার উপায় ছিল মাত্র। কিন্তু ইরা কখনোই হিমুকে তেমন পছন্দ করেনি। এই গল্পে হিমু, ইরা, বাদল, মাজেদা খালা ছাড়াও আরো চরিত্র রয়েছে রেশমা খালা, বদরুল সাহেব।
বদরুল সাহেব হল হিমুর মেসের ম্যানেজার। স্বভাবতই তিনি হিমুকে খুব পছন্দ করেন। তার চাকরি চলে যাওয়ায় তিনি খুব হতাশার মধ্য থাকেন। হিমুও বদরুল সাহেব কে খুব সমীহা করে। বদরুলের জন্য হিমু রুপাকে একটি চাকরি খুঁজে দেওয়ার কথা বলে। হিমুর কথামত রুপা বদরুলের চাকরির ব্যবস্থা করে। কিন্তু তার আগে থেকে চাকরি না থাকার হতাশায় বদরুল অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে । তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে ইরাও হিমুর সাথে যায়। হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে ইরা হিমুর হাত ধরতে চাইলে হিমু না করে। কারণ হিমুরা কখনো কারো হাত ধরে না।
আরো একটি চরিত্র হল রেশমা খালা। প্রতি রাতে রেশমা খালা স্বপ্ন দেখেন তার মৃত স্বামীকে। তার মৃত স্বামী সারা বাড়ি ঘুরে বেড়ায়। তিনি এই সমস্যা সমাধানের জন্য হিমুর কাছে আসেন। তিনি চিন্তা করেন একমাত্র হিমু তার সমস্যার সমাধান দিতে পারবে। এই উপন্যাসে রেশমা খালার কাহিনী না থাকলে গল্পটা সাদামাটা রুপ ধারণ করত। হিমু কি রেশমা খালা কে তার সমস্যার সমাধান দিতে পেরেছিল, বদরুল সহেবকে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছিল, ইরা কি হিমুকে পছন্দ করেছিল? এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে পড়তে হবে হুমায়ুন আহমেদের ‘ এবং হিমু’ বইটি।