একাত্তরের দিনগুলি PDF Download জাহানারা ইমাম (৭১ এর দিনগুলি)

একাত্তরের দিনগুলি PDF Download জাহানারা ইমাম (৭১ এর দিনগুলি), ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনা করেছেন বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক ও শহীদ জননী হিসেবে খ্যাত জাহানারা ইমাম। বইটির প্রথম প্রকাশকাল ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাস। সন্ধানী প্রকাশনী বইটি প্রকাশ করেছিল। বইটি দিনলিপি আকারে লেখা হয়েছিল, যার মধ্যে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কাল স্থান পেয়েছে।
একাত্তরের দিনগুলি সারমর্ম
বইটির লেখিকা জাহানারা ইমাম ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত। রংপুর, কলকাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিনি শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। জাহানারা ইমামের স্বামী ছিলেন শরীফ ইমাম। স্বামী, দুই ছেলে শফী ইমাম রুমি ও সাইফ ইমাম জামী ও শ্বশুরকে নিয়ে বসবাস করতেন ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের বাড়ি ‘কণিকা’য়।
১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে হারান বড় ছেলে রুমী কে আর দেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েকদিন আগে হারান স্বামী শরীফ ইমাম কে। দেশের স্বাধীনতার পর রুমীর সকল বন্ধু ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধারা জাহানারা ইমামকে জননী হিসেবে মেনে নেন, কালক্রমে তিনিই হয়ে ওঠেন সমগ্র জাতির শহীদ জননী। লেখিকার লেখা অনেকগুলো বইয়ের মাঝে ‘একাত্তরের দিনগুলি’ অন্যতম।
একাত্তরের দিনগুলি রচনা কৌশল
এই বইটির সম্পর্কে অবগত নয় এমন মানুষ আমাদের দেশে পাওয়া খুবই দুস্কর। মুক্তিযুদ্ধের ন’টি মাস আমাদের দেশের জনগণকে কিরকম উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তার সার্বিক চিত্র বইটিতে ফুটে উঠেছে। ১মার্চ, ১৯৭১ থেকে লেখিকা দিনলিপি শুরু করেছেন।
রুমী সেইদিন ক্রিকেট খেলা শেষ করে বন্ধুদের নিয়ে বাসায় এসে হ্যাম বার্গার খাবেন তাই লেখিকা বাজারে গিয়েছিলেন। বাসায় এসেই জানতে পারেন ‘জাতীয় পরিষদের অধিবেশন’ স্থগিত করা হয়েছে, চারিদিকে খুব হট্টগোল শুরু হয়েছে। উপন্যাসের অন্যতম মূল চরিত্র রুমী ছিলেন খুব মেধাবী। তার সাথে বিতর্কে পেরে ওঠা কারো পক্ষেই সম্ভব ছিলো না।
একাত্তরের দিনগুলি সারমর্ম
আইএসসি পাস করে ১৯৭১ সালে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’ (বুয়েট) এ ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরুর অপেক্ষা করছিলেন। আমেরিকার শিকাগোর নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাক পেয়েও সেখানে যাননি, দেশের এমন ক্রান্তি লগ্নে দেশকে ছেড়ে যাওয়া তার বিবেকে বেঁধেছিল। একদিকে যেমন মেধাবী ছিলেন রুমী অন্যদিকে ছিলেন দেশপ্রেমিক ও রাজনীতি সচেতন।
১৯ এপ্রিল, ১৯৭১ রুমী মায়ের কাছে যুদ্ধে যাবার কথা প্রকাশ করেছিলেন এবং জাহানারা ইমাম উত্তরে বলেছিলেনঃ “দিলাম তোকে দেশের জন্য কোরবানী করে।” খালেদ মোশাররফ এর সেক্টর-২ এ ট্রেনিং শেষ করে ক্র্যাক প্লাটুনে যোগ দিয়েছিলেন। ধানমন্ডি এলাকায় গেরিলা আক্রমণের পর সকলের কাছে রুমী অতিপ্রিয় হয়ে উঠেন।
২৯আগস্ট, ১৯৭১ কয়েকজন সহযোদ্ধাসহ রুমী পাক হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পরেন। এরপর থেকে তার আর কোন খোঁজ মেলেনি। কতদিন বেঁচে ছিলেন, তার লাশ কোথায় এখনো তা অজানা। রুমীর সাথে তার বাবা ও ভাই ও হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পরেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনজনকে মুখোমুখি করা হলে, রুমী ভাই ও বাবাকে যুদ্ধে জড়িত না থাকার কথা শিখিয়ে দেন। তারপর নিজেই গেরিলা হামলার সকল দায়ভার স্বীকার করে নেন।
মুক্তিযুদ্ধের বই পিডিএফ
লেখিকার স্বামী শরিফ ইমাম হানাদার বাহিনীর অত্যাচারে ভিতরে ভেঙে পড়লেও পরিবারের কাউকে বুঝতে দেননি। তাই তো ইয়াহিয়া খান সেপ্টেম্বরে সাধারণ ক্ষমার কথা বললেও শরীফ ইমাম কারো কাছে ছেলেদের মুক্তির জন্য হাত পাতেননি। দেশ স্বাধীন হবার মাত্র কয়েকদিন আগে শরীফ ইমাম পরকালে পাড়ি দেন।
বাবা আর ছোট ভাইকে হারিয়ে জামী ও উন্মাদ হয়ে গিয়েছিলেন এসকল কিছুর মধ্যেও লেখিকা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করে গিয়েছিলেন, নিজের সাধ্যমত রসদ সরবরাহ দিয়েছিলেন। স্বামী ও ছেলের শোকে পাথর হয়েও দেশ মাতৃকার সেবা করেছিলেন। এসব কিছুর বর্ণনাতেই বইটি পরিপূর্ণ।
একাত্তরের দিনগুলি PDF
বাংলাদেশের সকল মানুষই প্রায় জাহানারা ইমামের ঘটনা জানেন, কিন্তু তারপরেও এই বইটি পড়ার পর যে অনূভুতি হয়, দেশ মাতৃকার প্রতি, দেশের ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যে সম্মান অনুভব করা যায় তা ভাষায় প্রকাশ করা কষ্টসাধ্য। বাঙালি যতদিন পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকবে বইটিও ততদিন বেঁচে থাকবে কেননা, এই বইটি বাঙালির সত্ত্বার পরিচয়পত্র স্বরূপ।
একাত্তরের ডায়েরি pdf
একাত্তরের দিনগুলি সৃজনশীল প্রশ্ন
একাত্তরের দিনগুলি প্রতিবেদন