একজন আলী কেনানের উত্থান পতন PDF Download আহমদ ছফা

একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন পিডিএফ ডাউনলোড লিংক শেয়ার করা হলো। আপনি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বিনামূল্যে বইটি সংগ্রহ করতে পারবেন। পিডিএফ ডাউনলোড এর আগে চলুন বইটির কাহিনী সংক্ষেপ জেনে নেওয়া যাক।

একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন রিভিউ

“একজন আলী কেনানের উত্থান পতন” উপন্যাসটির রচয়িতা আহমেদ ছফা। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাসটির প্রকাশক খান ব্রাদার্স এন্ড কোম্পানি। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন সমর মজুমদার।

উপন্যাসটির মূল চরিত্র আলী কেনান নামের এক ব্যক্তি। তার বাড়ি ভোলার তামাপুকুর এলাকায়। আলী কেনান নামক এই ব্যক্তির উত্থান পতনের কাহিনীই উপন্যাসটির মূল উপজীব্য। আলী কেনান জীবনের শুরুর দিকে নিতান্তই সাধারণ একজন ব্যক্তি ছিলো।

কিন্তু হঠাৎই ভাগ্যজোরে একদিন সে এবং তার তিন ভাই গভর্নরকে একটা বিপদ থেকে রক্ষা করার সুযোগ পেয়ে যায়। এরপর থেকেই সে গভর্নরের প্রিয় পাত্র হয়ে যায় এবং গভর্নর অফিসে পিয়ন পদে নিয়োগ পায়। আলি কেনান ছিলো অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির লোক।

সে শুধু গভর্নর অফিসের পিয়ন হয়েই সন্তুষ্ট থাকেনি। নিজের ধূর্ততা এবং চতুরতার মাধ্যমে গভর্নরের পি.এ সহ বড় বড় পদের মানুষকে পাশ কাটিয়ে গভর্নরের কাছের লোক হয়ে ওঠে। এমন একটা পর্যায়ে উঠে যায় যে গভর্নর অফিসে প্রবেশের পাস ও তার থেকেই নিতে হয় এবং গভর্নরের কাছে আসা ফোনকল ও সে ধরার ক্ষমতা পেয়ে যায়।

এদিকে গভর্নরের আশ্রয়ে সে নিজ গ্রামেও প্রভাব বিস্তার করে ফেলে। গ্রামের লোকদের বিভিন্ন পদে সরকারী চাকরির সুযোগ করে দেয়। এতে করে গ্রামের লোকেরাও তার প্রভাব মেনে নেয়৷ ইউনিয়নটি পুরোটাই চালাতে থাকে আলি কেনানের পরিবার। সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিলো।

কিন্তু এইসব সুখ আলি কেনানের কপালে বেশিদিন থাকে না। তার পতন আসে। আর এই পতনের কারণ তার নিজের উচ্চাভিলাষ এবং চালাকি। গভর্নরের পি.এ কে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র করে সে নিজেই এর পাঁকে পরে যায় এবং গভর্নর দ্বারা অফিস থেকে বিতাড়িত হয়। বিতারিত হয়ে সে পরে যায় বিপাকে।

এলাকায় তার প্রভাব থাকলেও একচেটিয়া ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে ভাবমূর্তি বিশেষ গ্রহণযোগ্য ছিলো না। সে এলাকাতেও ফিরে যেতে পারছিলো না। লেখক তার এই অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে– আলি কেনান যে মায়ের পেটে ন’মাস ছিলো সেখানে যেমন সে ফিরে যেতে পারেনা, তেমনই পারেনা ভোলার তামাপুকুর গ্রামে ফিরে যেতে।”

কিন্তু আলি কেনান দমবার পাত্র নয়। সে নতুন ধান্দার সন্ধান করতে থাকে। একসময় ফন্দি আঁটে ভিক্ষা করার। এটা কে অবশ্য ভিক্ষা না বলে চাঁদাবাজি বলাই যথার্থ। সে মানুষের কাছে গিয়ে বলতো “দে তোর বাপরে ট্যাহা দিয়া দে”। তার এই কথায় প্রার্থনার চেয়ে আদেশের সুরই বেশি খুঁজে পাওয়া যায়৷

প্রথমদিনেই সে তৎকালীন তেরো টাকা জোগাড় করে ফেলে। পরবর্তীতে সে নিজের বেশভুষাতেও পরিবর্তন আনে। লালসালুর লু্ঙ্গি, আজানুলম্বিত বসন, সাথে একটি রং মাখা কুকুর ইত্যাদি উপকরণের মাধ্যমে সে পুরোপুরি ভন্ডামীর দিকে অগ্রসর হয়৷

ফুলতলী নামক একটা জায়গায় সে একটি পরিত্যাক্ত কবরকে নিয়ে শুরু করে মাজার ব্যবসা৷ এলাকার মানুষদের অজ্ঞতা এবং ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানের অভাবের সুযোগে সে নিজের আখের গুছিয়ে নিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তার কথা ছড়িয়ে পরতে থাকে।

মুর্খ মানুষদের কাছে তার মহিমা প্রচার হতে থাকে এবং সে হয়ে ওঠে “গরম দরবেশ”।এভাবেই দিনে দিনে তার ভক্ত-আশেক বাড়তে থাকে। তার খবর জাতীয় পর্যায়েও পৌঁছে যেতে থাকে। এদিকে এর মাধ্যমে গড়ে উঠতে থাকে তার সম্পদের পরিমান।

তার কথা একদিন গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়। আর সেদিনই তার গলার জরির মালাটি বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে নিলামে ওঠে।
এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে আহমেদ ছফা বাংলাদেশে চলে আসা চিরাচরিত ধর্মব্যবসার নগ্ন রুপকেই তুলে ধরেছেন।

এসকল অসাধু ধর্মব্যবসায়ীরা কিভাবে সাধারণ গ্রামাঞ্চলের মানুষের সরল বিশ্বাস কে পুঁজি করে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে তার স্পষ্ট চিত্র রয়েছে উপন্যাসটি তে।

এই বিখ্যাত আলি কেনানের জীবনে একদিন আবার পতন এসে হানা দেয়। তার এই সুখও চিরস্থায়ী হয় না। তবে সেটা কিভাবে হয় তা খুঁজে বের করতে হলে পাঠককে অবশ্যই পুরো বইটি পড়তে হবে। তাহলেই জানা যাবে ভন্ড মাজার ব্যবসায়ী আলি কেনানের শেষ পরিণতি।

একজন আলী কেনানের উত্থান পতন পিডিএফ ডাউনলোড

একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন বইটির পিডিএফ আকারে আমাদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। আপনি কোন রকম রেজিষ্ট্রেশন ছাড়াই বিনামূল্যে বইটি ডাউনলোড করতে পারবেন। এ জন্য নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করুন।

আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। বই মানুষকে আলোকিত করে। নিজে বই পড়ুন এবং প্রিয়জনকে বই উপহার দিন। বই কিনে পড়ুন তাহলে প্রকাশক এবং লেখকের নতুন নতুন বই প্রকাশে উৎসাহী হবে।

সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন “বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top