একলব্য PDF Download হরিশংকর জলদাস

‘একলব্য’ উপন্যাসের রচয়িতা হলেন ‘হরিশংকর জলদাস’। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সাহিত্য জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র এই লেখক। জন্মগ্রহণ করেছিলেন চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এক দরিদ্র জেলে পরিবারে। কিন্তু জেলে বাবার ইচ্ছা ও নিজের অদম্য চেষ্টায় আজ হয়ে উঠেছেন এক কিংবদন্তি।

অদ্বৈত মল্লবর্মনের পর কেউ এতো ভালোভাবে জেলে সমাজকে নিয়ে কোন ধরনের সাহিত্য রচনা করেছেন বলে মনে হয় না। এই প্রতিভাবান লেখক তার শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করেছেন চট্টগ্রাম কলেজ ও তারপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন বাংলা সাহিত্য নিয়ে।

শিক্ষাজীবনের শেষভাগে হরিশংকরের গবেষণার বিষয়বস্তু ছিলো ‘নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস এবং কৈবর্ত জনজীবন’। বর্তমানে তিনি কর্মরত আছেন ‘চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে’। সেখানে তিনি বাংলা বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ভূষিত হয়েছেন একুশে পদকেও।

এই উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো ২০১৬ সালে এবং প্রকাশনী সংস্থা হলো ‘অন্যপ্রকাশ’৷ বইটির মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৯৬।

উপন্যাসটির মূল পটভূমি গড়ে উঠেছে মহাভারতের একটি চরিত্র একলব্যকে কেন্দ্র করে। একলব্য মহাভারতে একটি অবহেলিত চরিত্র হলেও লেখক এখানে সেই চরিত্রকেই মুখ্য করে তুলেছেন। উপন্যাসটি অনেকটা মহাকাব্যের আঙ্গিকে রচনা করা হলেও বইটি মোটেও খুব বেশি বড় নয়।

বইটির মূলমন্ত্র বুঝতে হলে পাঠককে অবশ্যই মহাভারত সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান রাখতে হবে। মহাভারতের মোট ৪৩ টি চরিত্রের মধ্যে অন্যতম একটি চরিত্র হলো একলব্য। একলব্য ছিলো হিরণ্যধনুর পুত্র। সে যুদ্ধবিদ্যা শেখার জন্য গুরুদেব দ্রোণাচার্যের শরণাপন্ন হলে, দ্রোণাচার্য একলব্যকে প্রত্যাখ্যান করে কেননা একলব্য ছিল নিচু শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।

কিন্তু একলব্য এতে কোনভাবেই দমে না গিয়ে সে নতুন এক উদ্যম নিয়ে গহীন অরণ্যে চলে যায় এবং সেখানে দ্রোণাচার্যের এক মূর্তি এবং সেই মুর্তির সামনেই শুরু করে কঠোর অনুশীলন। একসময় একলব্য ধনুর্বিদ্যায় হয়ে উঠে পারদর্শী। অপরদিকে আবার দ্রোণাচার্যের কাছে ধনুর্বিদ্যা শিখছিলো তার প্রিয় শিষ্য অর্জুন।

এমন সময় একদিন দ্রোণাচার্য অরণ্যে ভ্রমণে গেলে তার দৃষ্টিগোচর হয় একলব্যকে। তখন দ্রোণাচার্য তার কাছে তার গুরুর নাম জানতে চাইলে, একলব্য বলে তার গুরু দ্রোণাচার্য। এরপর দ্রোণাচার্য একলব্যের কাছে তার ডানহাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দাবী করে গুরুদক্ষিণা হিসেবে। এবং একলব্য তা দিয়েও দেয়। আর দ্রোণাচার্যের এমন কার্যক্রমের পিছনে উদ্দেশ্য ছিলো তার শিষ্য অর্জুনকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাখা।

এমনই একটি চরিত্রকে বর্তমান সমাজে বসিয়ে একটি কালজয়ী উপন্যাস সৃষ্টি করেছেন হরিশংকর। এই বইটি লেখতে গিয়ে তাকে করতে হয়েছে হাঁড় ভাঙা পরিশ্রম দিতে হয়েছে জীবণের ১০টি বছর। বইটির মূল কাহিনী অসাধারণ।

রিভিউতে বইয়ের কাহিনী লেখার কারণ হলো, রিভিউ বই পড়তে বা বাছাই করতে সাহায্য করে, এই মহাভারত ও একলব্যের আলোচনাও পাঠককে হরিশংকরের এই উপন্যাসটি পড়তে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু পড়তে হবে পাঠককে নিজেই। এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, এই বইটি যেকোন পঠককে বিমোহিত করতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top