গণদেবতা PDF Download তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

গণদেবতা বাংলা ভাষার অন্যতম কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি জনপ্রিয় ও অন্যতম উপন্যাস। বিংশ শতাব্দীর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বাংলা উপন্যাসের একটি বলে বিবেচিত এই উপন্যাস টি বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৬৭টি এবং এটি একটি কালজয়ী উপন্যাস। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে এই উপন্যাসটিকে ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরষ্কার জ্ঞানপিঠ পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়। মহাকাব্যিক পটভূমির এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু বিভাগোত্তর ভারতবর্ষের সমাজব্যবস্থা এবং স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিল্পায়নের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামীণ সমাজের বিবর্তন।

গণদেবতা উপন্যাস টি গড়ে উঠেছে পাশাপাশি দুটো গ্রাম শিবপুর ও কালিপুর নিয়ে, গ্রামের বিভিন্ন মানুষের জীবন যাত্রা নিয়ে। শিবকালিপুর গ্রামে হিন্দু ধর্মের নিচু বংশের মানুষ যেমন কামার, নাপিত, বায়েন, সূত্রধর ও ধোপাদের বসবাস বেশি। পৈতৃক সূত্রে তারা তাদের কাজগুলো করে। এই উপন্যাসের গল্প এগিয়ে গেছে নিচু বংশের মানুষদের নিয়ে। পার্শ্ববর্তী মহাগ্রাম, পন্ঞ্চগ্রাম ও কঙ্কনায় জমিদার শ্রেণির বসবাস। নিচু শ্রেণির মানুষ গুলো উঁচু শ্রেণির কৃষক ও জমিদারদের হাতের পুতুল।

এদের নিজস্বতা বলতে কিছু নেই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ লেগেই আছে। ফলে নিচু শ্রেণির মানুষের ব্যাবসায় ধস নেমেছে। উঁচু শ্রেণির কৃষকরা অনেক কষ্টে ফসল উৎপাদন করেছে। কামারের গড়া পেরেক, হাতা, খুন্তির বদলে বিদেশ থেকে আসা সস্তায় বিভিন্ন জিনিস উঁচু শ্রেণির মানুষেরা কিনে নিচ্ছে।

এ কারণে কামার অনিরুদ্ধ আর সুতার গিরিস তাদের ব্যাবসা গুটিয়ে জংশন শহরে গিয়ে দোকান তৈরি করেছে। তাতে গ্রামের অবস্থা সম্পন্ন কৃষক থেকে শুরু করে নিম্নবর্গের মানুষের বেশ কষ্ট হয়েছে ফসল ফলাতে। যার কারণে গ্রামের মানুষ তাদের বিরুদ্ধে মজলিস বসায়। মজলিসে কারন দর্শিয়ে অনিরুদ্ধ বলে দেয় তারা আর গ্রামে কাজ করতে পারবে না।

গ্রামের নতুন ধনী শ্রীহরি পালের সাথে তার বাকবিতন্ডা বেধে যায় পুরনো হিসেব নিয়ে। অনিরুদ্ধ মিটমাট করে নিলেও রাতের আধারে শ্রীহরি দুই বিঘা জমির ধান কেটে নেয়।

শিবকালিপুর গ্রামে প্রথমে উঁচু বংশ ও নিচু বংশের মধ্যে বিরোধিতা, প্রতিবাদ দেখা দেয়। অনিরুদ্ধর দেখাদেখি পাতু বায়েন, তারা বাঈ, নাপিত আর ধোপারা প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তারা নগদ ছাড়া কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায়। গ্রামের উচ্চ বংশীয় মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়ে। তার মধ্যে দেবু ঘোষ অন্যতম। গণদেবতা উপন্যাসের নায়ক দেবনাথ ঘোষ। দেবু ঘোষ স্বতন্ত্র মানুষ।

অস্বচ্ছল পরিবারে জন্ম হওয়ার কারনে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে সংসারের হাল ধরতে হয়। স্কুলের লেখাপড়া ছেড়ে দিলেও যখন যেখানে যে বই পায় তাই পড়ে জ্ঞান আহরোণের চেষ্টা করেন। শ্রীহরি পালের মতো মানুষ যেখানে প্রধান ব্যক্তির ভূমিকা পালন করে এবং তাকে প্রতিবাদ করার মতো কেউ নেই, সেই গ্রামে বিরুদ্ধ প্রতিবাদ আসবেই।

শ্রীহরি পাল জমিদারদের সমক্ষ একজন। তিনি একজন গোঁয়ার ও দুর্ধর্ষ প্রকৃতির লোক। মানুষ সামনে তাকে সম্মান করলেও মনে মনে ঘৃণা করে। সেই কথা সে জানে। উঁচু শ্রেণির মানুষের কারণে নিচু শ্রেণির মানুষের দুঃখের শেষ নেই। তারা সব সময় উঁচু শ্রেণির মানুষের পায়ের তলায় থাকে। তাদের দুঃখ, কষ্টের কাহিনী নিয়েই গল্পটি রচিত। চমৎকার এই বইটি পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট টি ভিজিট করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top