বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার আনিসুল হকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হলো “জেনারেল ও নারীরা”। বইটির নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে যে পুরো কাহিনী হয়ত একজন জেনারেল ও নারীদের নিয়ে, কিন্তু আপনাদের ধারণা সম্পূর্ণ ঠিক নয়। এখানে লেখক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক অজানা কথা লিখেছেন। আনিসুল হক বরাবরই বাস্তব ঘটনা নিয়ে লেখেন। তার লেখনীর মাধ্যমে আমরা বাস্তব জিনিসকে দেখতে পাই।
আপনারা যারা আনিসুল হক প্রেমী আছেন, তারা যদি “জেনারেল ও নারীরা”বইটি না পড়ে থাকেন তাহলে আজকেই বইটির পিডিএফ ফাইল আমাদের ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করে পড়ে ফেলুন। আমাদের ওয়েবসাইটে আমরা এরকম অসংখ্য বইয়ের পিডিএফ দিয়ে থাকি,কারণ সবাই বইয়ের হার্ডকপি সংগ্রহ করতে পারেন না। তাদের সুবিধার্থে আমাদের এটি একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।
“জেনারেল ও নারীরা” এটি একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস। বইটি প্রথম প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশনী থেকে। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় 2016 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মাসুক হেলাল। বইটিতে মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা রয়েছে 175 টি। বর্তমান বাজারে বইটির মুদ্রিত মূল্য 298 টাকা। উপন্যাসটিতে লেখক হয়তো কিছু কিছু জিনিস অনেক খোলামেলাভাবে বলেছেন। এখানে তিনি একজন জেনারেলের কেমন ব্যক্তিত্ব হওয়া উচিত,সেটাই এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
এখানে জেনারেল বলতেন পাকিস্তানি শাসক ইয়াহিয়া খান কে বোঝানো হয়েছে। তার নারীদের উপর খুব একটা ভালো দৃষ্টি ছিলনা আর সেটাই এখানে লেখক তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আমরা সবাই জানি জেনারেল ইয়াহিয়া খান বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে এক কুখ্যাত সামরিক শাসক। তিনি বাংলাদেশসহ তথা তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে জঘন্য গনহত্যার অন্যতম একজন হোতা। মূলত লেখক এখানে ইয়াহিয়া খানের ব্যক্তিগত জীবন ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছেন।
ইয়াহিয়ার সময়ে পিন্ডির রাষ্ট্রপতির ভবন কে বলা হত রাষ্ট্রপতিতালয়। ইয়াহিয়া বরাবরই নারী লিপ্সু ছিল। রাষ্ট্রপতিতালয়ে অবাধে বিভিন্ন ধরনের নারীরা যাতায়াত করতো। সবার উদ্দেশ্য ছিল ইয়াহিয়াকে খুশি করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করা। আর সেখানে নানা রকমের,নানা রংঙের মদের ফোয়ারা চলত।
আকলিম ওরফে জেনারেল রানী ছিল ইয়াহিয়ার পতিতালয়ের প্রধান মক্ষীরানী। তিনি তার ক্ষমতা দেখিয়ে ইয়াহিয়াকে হাতের পুতুল করে রেখেছিল। পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী শামীম ও গায়িকা নুরজাহান তাদের যৌন ক্ষমতা দিয়ে ইয়াহিয়াকে হাতে রাখতেন। 1970 সালে যখন বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ ভোটে জয়লাভ করে তখন ইয়াহিয়া খান তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গরিমশি করেন।
25 শে মার্চ কাল রাতে কাপুরুষের মত বাংলীদের ওপর লাফিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। বাঙ্গালীরা মে এত সহজে হার মানতে শেখে নি এটা তারা বুঝতে পারেনি। হয় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। বাঙালিরা তাদের পাশে পেয়েছিল প্রতিবেশী দেশ ভারতকে। 30 লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বাঙালিরা অর্জন করে স্বাধীনতার লাল সূর্য।
উপন্যাসটিতে লেখক এক অত্যাচারিত জাতির ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প তুলে ধরেছেন। এছাড়াও একজন স্বেচ্ছাচারী শাসকের চারিত্রিক দিক তুলে ধরেছেন। এই উপন্যাসটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা বাংলাদেশের ইতিহাস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বজ্রকঠিন ব্যক্তিত্ব কেমন ছিল সেটা জানতে পারবেন।
এই গল্প সব বাঙালির গল্প। সদ্য মাথা চারা দিয়ে ওঠা এক জাতির গল্প যার বীজ রোপিত হয়েছিল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির হাতে। বরেণ্য লেখক আনিসুল হক ঐতিহাসিক রচনা লেখায় সিদ্ধহস্ত যেটা আমরা সবাই জানি। তাই আমার মতামত হল, বইটি একবার হলেও পড়ে দেখুন অনেক কিছুই জানতে পারবেন।