হীরে মানিক জ্বলে PDF Download বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়

হীরে মানিক জ্বলে এই রোমাঞ্চকর উপন্যাসটি লিখেছেন বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়। ১৯৪৬ সালে প্রথম এই রোমাঞ্চকর উপন্যাসটি রচিত হয় এবং বইটি ৯৭ পৃষ্ঠায় রচিত একটি বাংলা উপন্যাস।
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় বিশেষভাবে বাংলা সাহিত্যে আলোচিত তার পল্লীপ্রকৃতি ঘনিষ্ঠ অসাধারণ উপন্যাস গুলোর জন্যে। আমরা অধিকাংশ কেবল তাকে পল্লী বাংলার রূপকার হিসেবেই চিনি। আদতে বিভূতিভূষণ তাঁর সাহিত্যিক জীবনে সামাজিক উপন্যাসের সাথে একাধারে লিখে গেছেন হরর, থ্রিলার ও কিশোর এডভেঞ্চার সহ দুর্দান্ত অনেক কাহিনী। এর জ্বলন্ত প্রমাণ ‘হিরে মানিক জ্বলে ‘ থ্রিলার ঘরনার উপন্যাস।
উপন্যাসটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪৬ সালে। এই উপন্যাসের মূল অভিযাত্রী তিন বাঙালি যুবক সুশীল, সনৎ আর জামাতুল্লা। সুশীল খানদানি বংশের সন্তান, পড়ন্ত জমিদারির উত্তরাধিকারী। কালের গর্ভে সেই জমিদারি অনেকটাই অবিলুপ্ত, যা অবশিষ্ট আছে তা নেহায়েৎ ফাঁপা ঢোলের মত। এর পরেও এই বংশে চাকরি, ব্যবসা- বাণিজ্য করা মানা ভারিক্কি জমিদারি চাল নষ্ট হবে যে।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম পায়ের উপর পা তুলে বসে খেতে খেতে জমিদারি শব্দটাই এক সময় ব্যঙ্গ করে তাদের। হালচাল যখন এরূপ তখন টনক নড়ে সুশিলের। ভাগ্য ফেরাতে কলকাতায় মামার বাসায় উঠে বেকার সুশীল। সনৎ তার মামাতো ভাই, খুব ন্যাওটা। জামাতুল্লা জাহাজের খালাসি। গড়ের মাঠে উদাসভাবে বসে থাকা সুশীলের সাথে আকস্মিকভাবেই পরিচয় হয় জামাতুল্লার। অল্প সময়েই সখ্য হয় তাদের।
সে বর্ণনা করে তার রোমাঞ্চকর এক সমুদ্র যাত্রার।, যেখানে নাম না জানা এক দ্বিপে সে আবিষ্কার করে বসে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার ভগ্নাংশ। জামাতুল্লার দেখানো অদ্ভুত চিত্র আঁকা সিলমোহর আর কিছু মানচিত্র আর ঐতিহাসিক কতৃক তার রহস্যময় বর্ণনা সাহসী সুশীল কে হাতছানি দিতে থাকে এডভেঞ্চারের।
প্রাচীন সভ্যতা আর গুপ্ত ভান্ডার আবিষ্কারের নেশায় তার ভাই সনৎ, জামাতুল্লা এবং বোম্বেটে নাবিক ইয়ার হোসেনকে নিয়ে সে বেরিয়ে পড়ে সমুদ্র যাত্রায়। মালয়, সুমাত্রা পেরিয়ে তারা পৌঁছায় ভারত মহাসাগরে ডাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বন্য প্রাণিতে পরিপূর্ণ একটি জনহীন দ্বীপে। সেখানে তারা আবিষ্কার করে প্রাচিন হিন্দু রাজ্যর রাজধানী এক প্রাচীন রাজপ্রাসাদ – চারপাশে তার খাল কাটা, যেখানে বিচরণ করে ভয়ংকর কুমির।
তারা জানে এর মধ্যে লুকায়িত আছে এই সভ্যতার ধনসম্পদ, কিন্তু তাদের পদে পদে আছে মৃত্যু ফাঁদ আর ভয়ংকর বিপদের আমন্ত্রণ। পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া ধনসম্পদের খোঁজ তারা পাবে কি? বিপুল রত্নভাণ্ডার নিয়ে পারবে কি দেশে ফিরতে? নাকি অন্যান্য নাবিকের মত মৃত্যু বরণ করতে হবে? এইসব উত্তর নিয়েই লিখিত হয়েছে ‘হীরা মানিক জ্বলে ‘।
কিশোরদের জন্য একেবারে আদর্শ একটি বই। বিভূতি ভূষণ একটানে নিয়ে যাবেন কৈশোরের রোমাঞ্চ। অসাধারণ বর্ণনা ভঙ্গিতে পুরো বই জুড়ে রয়েছে রোমাঞ্চকর উত্তেজনা। চীনা জাহাজে চড়ে সমুদ্রে পাড়ি, দুর্ধর্ষ জলদস্যু, গুপ্তগাতক, অলিতে-গলিতে রহস্যে ঘেরা প্রাচীন ফরেস্ট, প্রাচীন দুর্গ, সরীসৃপের আড্ডা, গুপ্তধন কি নেি বইটিতে।
পরিবেশ প্রকৃতির বর্ণনা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। চতুর্পাশকে দেখার এরকম অন্তর্ভেদী দৃষ্টি আর তার অসাধারণ বিবরণের পরতে পরতে পুরে দেওয়া জীবনদর্শনের চিত্র শুধু বিভূতিভূষণ এর পক্ষে সম্ভব। রোমাঞ্চকর এই বইটি পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট টি ভিজিট করুন।