এখনকার সবথেকে তরুণ প্রজন্মের লেখিকা হলো জিমি তানহাব। খুবই কম বয়সী এই লেখিকার ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটা বই বেড়িয়ে গেছে। আর সেসবের মধ্যে আলাদা ভাবে চোখে পরে তার ইন্দ্রজাল সিরিজটা। এই সিরিজের মোট তিনটা বই প্রকাশ হওয়ার কথা, যদিও এখন পর্যন্ত দুই টাই প্রকাশিত হয়েছে।
প্রথম বইটা হলো ‘ইন্দ্রজাল ১; হাজার বছরের পিছুটান। আর ২য় বই হলো ‘ইন্দ্রজাল ২; হাজার বছরের আরাধনা’। সিরিজের এই দুইটা বই-ই ছোট ছোট। যা কিনা বলতে গেলে এক বসাতেই পড়া যায়। আপনারা যারা প্রথম বইটা পড়েছেন কিন্তু ২য় টা পড়তে পারেন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট বইটার পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।
কাহিনী সংক্ষেপ
“মরুর বেদুইন পথপ্রদর্শকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা লুসিফার আমায় তোমার নিকট পৌছাতে দেয়নি। কাফেলার দলটি মাঝপথেই নির্দয়ের মতো আমায় ফেলে চলে যায়…”
গল্পের শুরুতে সায়মন নিজেকে আবিষ্কার করে বিস্তীর্ণ মরুভূমির ধুলোর চাদরে শুয়ে থাকা অবস্থায়। জানে না কীভাবে, কী করে সেখানে গিয়েছে। শুধু জানে, রাত্রির রাজকীয় স্নিগ্ধতা উপভোগের নেশায় ব্যস্ত সে।
মরুভূমির বুকে লাল টোগা পরিহিত নারীটি কে? কোনো এক দেবী সুমিষ্ট, স্বর্গীয় কণ্ঠে সাবধানবাণী দিচ্ছে সায়মনকে। বলছে, ‘ভয়ংকর ভবিষ্যৎ তোমার পথ চেয়ে আছে অপেক্ষা করছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যে মায়াবিনীর পেছনে হেটে চলেছ; ও পথ থেকে ফিরে এস! এখনো সময় আছে, ফিরে এস।’ কেন এই সাবধানবাণী?
সায়মন দেখছে ইসাবেল কার সাথে যেনো কথা বলছে। ইসাবেলকে বলতে শুনলো, ‘গভীর রাতে প্রায় ঘুমের ঘোরে একটা অদৃশ্য কণ্ঠ আমাকে বলে, হাজার বছর ধরে একটা সত্য নির্বাক হয়ে আছে। সত্যটা খুজে বের করতে হবে আমাকে। যতদিন সেটাকে খুজে পাব না ততদিন পর্যন্ত একটা ইন্দ্রজালের ভেতর আটকে থাকবো আমি।’
সায়মন যখন দেখে ইসাবেল কার সাথে কথা বলছিলো সে অবাক হয়ে যায়। ব্যক্তিটি সে নিজেই। কীভাবে সম্ভব?
গুরু থিওডোরাস সায়মনকে বলছেন অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ একই সাথে বিদ্যমান। সত্যিই কি তাই?
ইন্দ্রজালের এই মোহময়তা আর হাজার বছরের আরাধনা কবেই বা শেষ হবে? জানতে হলে পড়ে ফেলুন দারুন বইটা।
বইটা শেষ করে বেশ ভাবনার মধ্যে পড়ে যাবেন। বেসিক্যালি সায়মন তার পূর্বের জীবনটাই আবার যাপন করেছে যেমন পেশাদার চিত্রকর হয়ে ওঠা, ইসাবেল ও তার বাবার বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো, ইসাবেলের বাসায় বসবাস করা এসব ঠিকই আছে। তবে ছোটখাটো, ক্ষুদ্র অনেক বিষয় পরিবর্তিত হয়ে গেছে আর টাইম লুপের ক্ষেত্রে এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলোই একত্রিত হয়ে একটা বড় পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলতে পারে।
ইন্দ্রজাল সিরিজের দ্বিতীয় বইটাতে রাইটারের টাইম লুপের এই এক্সপ্লোরেশনটা ভালো লেগেছে। পাশাপাশি দেবদেবীর ভূমিকাও কিছুটা উঠে এসেছে। দেবী আফ্রোদিতির মতো আমারও সায়মনের জন্য খারাপই লাগছিলো আর মনে হচ্ছিলো এটা না করলেই হয়তো সায়মন ইন্দ্রজাল থেকে মুক্তি পাবে, ওটা না করলেই হয়তো সব চুকেবুকে যাবে। যাই হোক, কাহিনিটা অসমাপ্ত আর সায়মন এখনো ইন্দ্রজাল থেকে মুক্তি পায়নি। দেখা যাক, পরবর্তী বইয়ে মুক্তি পায় কিনা।
তাছাড়া, শুধু সায়মন মুক্তি পেলেই তো হবে না। সায়মনের সাথে সাথে ইসাবেলও একটা ইন্দ্রজালে আটকা পড়ে আছে। তারও তো মুক্তি পেতে হবে! তা কি আদেও হবে? এই প্রশ্নটাও তাড়া করবে।
লুপের ধারণা আর দেবদেবীর ইশারা দ্বিতীয় বইটাকে অবশ্যই একটা আলাদা মাত্রা দিয়েছে। সবমিলিয়ে, সিরিজের দুটো বই-ই উপভোগ্য হবে।
সবশেষে বলবো, যাস্ট অসাধারন কিছু উপভোগ করতে চাইলে এই পুরো সিরিজটাই পড়ুন।