জলপুত্র PDF Download হরিশংকর জলদাস

‘জলপুত্র’ উপন্যাসটির রচয়িতা হলেন ‘হরিশংকর জলদাস’। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক হলেন হরিশংকর। এই প্রখ্যাত লেখকের জন্ম হয়েছিল চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়, ১৯৫৩ সালের ০৩ মে এক জেলে পরিবারে। হরিশংকর জলদাস এ পর্যন্ত বেশ অনেকগুলো উপন্যাসই রচনা করেছেন এবং প্রায় প্রত্যেকটিই পাঠক সমাজের কাছে বিশেষভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

২০১১ সালে এই সাহিত্যিক পেয়েছিলেন প্রথম আলোর বর্ষসেরা বইয়ের পুরষ্কার। বাংলা ভাষা আর সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার ‘ ‘একুশে পদকে’ এই লেখককে ভূষিত করেন। একজন সাধারণ জেলে পরিবারের সন্তান হয়েও পড়াশোনায় দেখিয়েছিলেন নিজের পান্ডিত্য।

চট্টগ্রাম কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর ভর্তি হয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সেখানে বাংলা বিভাগে অধ্যয়ন করেছিলেন। পেশাগত জীবনে এই প্রতিভাবান লেখক হলেন বাংলা বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং কর্মরত আছেন ‘চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে’।

উপন্যাসটির প্রকাশক হলো ‘মাওলা ব্রাদার্স’ এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা ১২৮।

লেখকের অন্যান্য বেশিরভাগ উপন্যাসের মত এই উপন্যাসের মূল পটভূমিও গড়ে উঠেছে জেলে সমাজকে কেন্দ্র করে। উপন্যাসের মূল চরিত্র হলো ভুবনেশ্বরী নামক এক ঊনিশ বছরের এক তরুণী এবং তার স্বামী একজন জেলে। কোন এক উথাল পাথাল ঢেউয়ের রাতে তার স্বামী মাছ ধরতে গিয়ে আর ফিরে আসে না। এমনকি লাশটাও ফিরে পাওয়া যায় না।

ভুবনেশ্বরীর একটি ছেলে সন্তান আছে তার নাম গঙ্গাপদ। স্বামী নিখোঁজ হবার পর থেকেই গঙ্গাপদ ও শ্বশুরকে নিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলো ভুবনেশ্বরী। কিন্তু স্বামী হারা এই তরুণীর জীবনেও অনেক প্রতিকূলতা। ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠতে শুরু করে গঙ্গা, সাগরের প্রতি তার খুব আগ্রহ।

কিন্তু, ভুবনেশ্বরী চায় গঙ্গাও যেন তার পিতার মত সমুদ্রে হারিয়ে না যায় তাই গঙ্গাকে সর্বদা আগলিয়ে রাখতে চায়। উপন্যাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এই যে, গল্পের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চরিত্র উপন্যাসের পটভূমিতে উঁকি দেয়। এমন একটি চরিত্র হলো শুক্কুর। শুক্কুর চায় জেলেদের দমিয়ে রাখতে, তাদের নিজেদের দাসে পরিণত করতে। কিন্তু, গঙ্গা শুক্কুরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বসে এবং জেলেদেরকে তার বিরুদ্ধে সংবদ্ধ করে তোলে৷ আর এইসবের জন্য নিহত হতে হয় গঙ্গাকে।

উপন্যাসটিতে জেলেদের ভাষার একটি আভাস পাওয়া যায়, যা উপন্যাসটিকে করেছে আরো বেশি আবেদনময়। যেন মনে হয় জেলেদের মাঝে থেকেই ঘটনাগুলো প্রতক্ষণ করছি।

হরিদাসের লেখা যারা পড়েছেন তারা সকলেই জানেন, এই লেখকের লেখা বেশ ঝরঝরে। কোন ধরনের ভণিতা বা অতিরঞ্জিত করার ইচ্ছা এই লেখকেত লেখায় লক্ষ্য করা যায় না। বইটি যে শুধু পাঠকের অবসর সময় কাটাতেই সাহায্য করবে তাই নয়, বরং আমাদের সমাজ ব্যবস্থা ও যেসব মানুষ দরিদ্র পেশাজীবি হিসেবে জীবণ পরিচালনা করে তাদের প্রতি আমাদের উদাসীনতার ও পরিচয় পেতে সহায়তা করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top