জানালার ওপাশে PDF Download সাদাত হোসাইন

‘জানালার ওপাশে’ বইটির রচয়িতা হলেন ‘সাদাত হোসাইন’। বাংলাদেশের সাহিত্য জগতে বর্তমান যে ক’জন তরুণ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন সাদাত হোসাইন তাদের মধ্যে অন্যতম। সাধারণত উপন্যাস লেখে খ্যাতি অর্জন করলেও, সাহিত্যের প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই নিজের প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন লেখক।

উপন্যাস থেকে শুরু করে ছোটগল্প, কবিতা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সব ক্ষেত্রেই সমানভাবে বিচরণ করছেন এই লেখক। পাঠকেরা মনে করেন সাদাত হোসাইনের লেখা মানেই অনেক বড় কোন বই হয়তো, কিন্তু এবার সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন লেখক একটি ছোটগল্পের সংকলন বের করেছেন।

এই ছোট গল্পের সংকলনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৩ সালে ‘ভাষাচিত্র প্রকাশনী’ হতে। বইটিতে মাত্র ৬২ পৃষ্ঠায় ছয়টি গল্প তুলে ধরা হয়েছে। আর এই গল্পগুলো পড়লে রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের সংকলনের কথা মনে পরে যায়, কেননা রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মতই এগুলোও যেন শেষ হয়েও শেষ হয় না।

প্রত্যেকটি গল্পের কাহিনীই এখানে ভিন্ন ভিন্ন। একটার সাথে অন্য গল্পের কোন মিল নেই। প্রথমে পড়তে শুরু করে অবাকই হয়েছিলাম, যেই মানুষ কিনা এতো বড় বড় বই লিখে অভ্যস্ত তিনি এই অল্প ভাষায় গল্প ফুটিয়ে তুলতে পারবেন তো! সত্যি বলতে লেখক পেরেছেন এবং বেশ ভালোভাবেই পেরেছেন।

ছয়টি গল্পের মধ্যে প্রথমটি হলো ‘জানালার ওপাশে’ এ গল্পটি গড়ে উঠেছে এক ছেলেকে কেন্দ্র করে যাকে এক দম্পতি ছোটবেলায় পালক নিয়েছিলো এখন সে যুবকে পরিণত হয়েছে। তার জীবনের দুঃখ-কষ্ট হলো গল্পটির মূল বিষয়বস্তু। বইটির দ্বিতীয় গল্পের শিরোনাম হলো ‘পুঁটি মাছ’। এটি একটি প্রেমের গল্প।

দু’জনের প্রেমের এক বছর পূর্ণ হয়, প্রেমিক তার প্রেমিকাকে ১৭ টি গোলাপ উপহার দিতে চায় কিন্তু মাঝে বাঁধ সাজে পকেটে টাকার কমতি। শেষ পর্যন্ত কী প্রেমিক তার প্রেমিকাকে কোন উপহার দিতে পারে? তা জানতে হলে পড়তে হবে বইটি। তৃতীয় গল্পটির শিরোনাম হলো ‘সাইকেল’।

শিরোনাম সাইকেল হলেও গল্পটি মূলত লেখা হয়েছে এক বাবার গাড়ি কেনার স্বপ্নকে নিয়ে। বাবাদের অনেক ইচ্ছাই থাকে, পরিবারের জন্য এটা করবে সেটা করবে। নিজের সকল ইচ্ছা, আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে পরিবারকে কীভাবে হাসি-খুশি রাখতে চান তার একগল্প তুলে ধরা হয়েছে। চতুর্থ গল্পের শিরোনাম হলো ‘সোবহান সাহেব মারা গেছেন’।

এই গল্পে তুলে ধরা হয়েছে একজন মৃত পিতার আহাজারি। পিতা মারা গেলে পরিবারকে কতটা কষ্টের সম্মুখীন হতে হয় তা গল্পে পরিস্ফুটিত হয়েছে। পঞ্চম গল্পের শিরোনাম হলো ‘সে’। এটি একটি প্রেমের গল্প, প্রেমের মাঝে রাগ, ভালোবাসা ও আবেগ এসব নিয়ে গল্পটি রচনা করা হয়েছে। ষষ্ঠ গল্পটির শিরোনাম হলো ‘বোধ’৷

এই গল্পটিতে লেখক একজন সন্তান হারা বাবা ও বাছুরহারা এক গাভীর আর্তনাদের গভীরতা ফুটিয়ে তুলেছেন। এই গল্প সংকলনে লেখক যেভাবে মানুষের জীবনের অনেকগুলো রঙ ফুটিয়ে তুলেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। বইটি পড়তে বসলে এক বসাতেই শেষ করা যাবে এবং প্রত্যেকটি গল্পই পাঠকের ভালো লাগবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top