যেখানে রোদেরা ঘুমায় PDF Download শরীফুল হাসান

‘সাম্ভালা ট্রিলজি’র লেখক শরীফুল হাসান বেশ জনপ্রিয় একজন লেখক। পাঠক মহলে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। সেটা তিনি নিজ গুনেই অর্জন করে নিয়েছেন। এই লেখকের একটি বই হলো ‘যেখানে রোদেরা ঘুমায়’। অদ্ভুত নাম তো! তোদেরা কিভাবে ঘুমায়? আসলেই অদ্ভুত। অদ্ভুত সুন্দর! তাঁর এই বইটি প্রকাশিত হয় চিরকুট প্রকাশনী থেকে। ৩০০+ পৃষ্ঠার এই অসাধারণ সুন্দর বইটি যারা এখনো পড়তে পারেন নি, তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করে পড়ে ফেলতে পারেন অনায়েসে।
কাহিনী সংক্ষেপ
মির্জাপুরের রুপু গোটা দক্ষিণাঞ্চলের ত্রাস। মাদকের চোরাচালান থেকে শুরু করে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ দক্ষিণাঞ্চলের সকল ধরণের সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের মূলে রয়েছে এই রুপু। অবশ্য এসব কাজে সাহায্যের জন্য তার সবসময়ের সাথী হয় দুই বন্ধু – শফিক আর মিলন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এত সব খারাপ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার পরও মির্জাপুরের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তির নাম আবার রুপু! কিন্তু কারণটা ঠিক কী? কারণটা আমি বলবো না।
এদিকে আবার ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্রী, অনির জীবনের কাহিনীটা কী রকম?
অনি স্বভাবে ভীষণ ঠান্ডা। নিজের জগতে মগ্ন থাকতে পছন্দ করে। কারো সাতেপাঁচে থাকে না। অথচ প্রয়োজনে কঠোর হতে জানে মেয়েটা। ওর দুই বন্ধু – হেনা আর নাসরিন।
তাছাড়া আরেকজনের সাথে অনির টুকটাক কথা হয়, নিবিড় তার নাম। নিবিড়ও কি অনির বন্ধু? নাকি বন্ধুর চেয়েও বেশি কিছু? কে জানে!
কবিতার প্রতি নিবিড়ের রয়েছে প্রবল আগ্রহ। একসময় ভালোই কবিতা লিখতে পারত ছেলেটা। সেই ছেলের হঠাৎ কী যে হলো! কবিতার নেশা ছুটে গেল। জাপটে ধরল আরেক ধরণের নেশা। এরকম কেন করলো সে?
অনেকেই ভাবতে পারেন রুপু, অনি আর নিবিড়কে কেন্দ্র করেই সাজানো হয়েছে এই বইয়ের কাহিনী? তাই যদি ভেবে থাকেন, তাহলে ভুল ভাবছেন। নিছক ত্রিকোণ প্রেমের কাহিনী নয় “যেখানে রোদেরা ঘুমায়”। এই কাহিনী ক্ষমতালিপ্সু জামাল খন্দকার আর মানিক মিয়ার, বিশ্বাসঘাতক নকীবের।
এখানে আছে রাজনীতিও। রাজনীতিকে আমার বেশ জটিল বিষয় বলে মনে হয়। কিন্তু লেখকের বর্ণনা বেশ সাবলীল ছিল, বুঝতে একটুও কষ্ট হয়নি।
এই উপন্যাসে বেশ কয়েক ধরণের চরিত্রের দেখা পাওয়া যায়।
তবে বেশি ভালো লাগে যে চরিত্র’কে তা হলো রপু। চরিত্রদের মধ্যে এটাই বেশি প্রিয়। লেখক রুপু’কে চরিত্রের নির্মাণ অত্যন্ত যত্নের সাথেই করেছেন বোঝা যায়। বুঝতেই পারছেন এই রপু উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। খুন, চাঁদাবাজি কিংবা মাদক ব্যবসার মতো খারাপ কাজের সাথে জড়িত লোকেদেরও যে দুই একটা ভালো গুণ থাকতে পারে। রুপু চরিত্রের মাধ্যমে এই ব্যাপারটা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
তাছাড়া অনি আর নিবিড়ের চরিত্রায়ণ যথেষ্ট ভালো।
এবং কোনো চরিত্র’কেই ঠুনকো মনে হয়নি। অগুরুত্বপূর্ণ কিংবা ঠিক মতো বিল্ড আপ হয় নি এরকম কিছু আমি পাই নি। শরীফুল ইসলাম বলে কথা! বেশ ভালোভাবেই সব সামলাতে পেরেছেন লেখক!
বইয়ে কিছু ছন্দ কবিতাও ছিল যা বইটাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে আমার কাছে। উপন্যাস থেকে একটা ছন্দ না বললেই নয়।
“যেখানে জ্যোছনা নিভে গেলে
চাঁদ নেমে আসে নিচে
যেখানে রোদেরা ঘুমায়
অনেক দূর কোনো দেশে”
এই লাইন ক’টা আমার অনেক ভালো লেগেছে। তাই না বলে পারলাম না।
আর সবশেষে এসে যেটা বলবো তা হলো, বইটা কিন্তু শুধুমাত্র রাজনৈতিক, সমকালীন, জীবনধর্মী কোনো উপন্যাস না। এর সাথে মিশে আছে থ্রিলার! যা বইয়ের মোড় ঘুরিয়ে দেয়! নিয়ে যায় অনন্য মাত্রায়! যারা থ্রিলার পড়তে পছন্দ করেন তারাও নির্দ্বিধায় হাতে তুলে নিতে পারেন বইটি।
উপভোগ করার মতো কয়েক নিশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো একটা বই।
তাই দেরি না করে দ্রুত পড়ে ফেলুন বইটি!
আপনাদের পিডিএফ লিঙ্ক নেই। তবুও মিথ্যে বলেন কেন?