জলপরানি PDF Download কিঙ্কর আহসান

‘জলপরানি’ উপন্যাসটির লেখক হলেন ‘কিঙ্কর আহসান’। সমসাময়িক সময়ের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নক্ষত্র কিঙ্কর আহসান। বর্তমান সময়ের এক কালজয়ী লেখক হিসেবে বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে আবির্ভূত হয়ে বেশি দিন সময় প্রয়োজন হয়নি এই লেখকের পাঠক সমাজে জনপ্রিয়তা পেতে।

মার্জিত উপস্থাপনার ধরণ, সহজ-সরল ভাষায় গল্পের কাহিনী তুলে ধরা, সবকিছু মিলে এই লেখকের সৃষ্টি অনবদ্য। কোন কিছুকেই কিঙ্কর আহসান অতিরঞ্জিত করতে চান না তার লেখায়। সহজ সাধারণের মাঝে যেই সৌন্দর্য বিরাজমান তাই লেখক খুব নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলেন।

আরেকটি বিষয় লেখকের উপন্যাসগুলো পড়লে বোঝা যায়, তা হলো লেখকের কল্পনা শক্তি খুব প্রখর। গল্পের মাঝে এমন এমন কিছু বিষয় তিনি তুলে ধরেন যার তুলনা হয় না। জলপরানি উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েহে ২০২১ সালে এবং প্রকাশনী সংস্থা ছিল ‘শিখা প্রকাশনী’।

জলপরানি উপন্যাসটির মূল কাহিনী গড়ে উঠেছে জাহান নামক এক চরিত্রকে কেন্দ্র করে। জাহান নেশায় আসক্ত এক তরুণ। দুশ্চিন্তা ও জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পার হতে গিয়ে সে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। প্যাথেডিন তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু বর্তমান সময়ে। প্যাথেডিনের সাথে আরেকটি জিনিস সম্প্রতি তার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে সেটা হলো বার্বিচুরেটস।

উপন্যাসটির শুরু হয় জাহান গিটার পাশে রেখে প্যাথেডিনের অ্যাম্পুল ভেঙে তা সম্পূর্ণটা সিরিঞ্জে নিয়ে নিজের হাটুর নিচের শিরায় পুশ করার মধ্য দিয়ে। প্যাথেডিন নেয়ার সাথে সাথেই জাহানের মনে হয় যেন পৃথিবীর সকল অবসাদ তাকে ছেড়ে দূরে চলে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে সকল অস্থিরতা।

প্যাথেডিন রক্তের সাথে মিশতে শুরু করলেই ঘুম ঘুম লাগতে থাকে জাহানের। এই সুখময় ক্লান্তিতেই জাহান তার জীবনের মর্ম খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু এই ভালো লাগা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। শুয়ে চোখ বন্ধ করার সাথে সাথেই জাহানের মনে পরে তার মায়ের কথা। শতবার চেষ্টা করেও কোনভাবেই তার মায়ের মায়াবী চেহারা তার চিন্তা থেকে দূর হতে চায় না।

অসহ্য এক যন্ত্রণায় ছটফট করতে তাকে জাহান। এসব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই জাহানের চোখের সামনে ভেসে ওঠে জালিয়াপাড়া গ্রামের স্মৃতি। জাহানের নিজের গ্রাম। অনেক চেষ্টা করেও এসব থেকে বের হতে পারে না জাহান। একে একে তার মনে পরতে থাকে তার শৈশবের স্মৃতি, কৈশোরের স্মৃতি।

ছোটবেলার স্কুলের স্মৃতি, বন্ধু কৌশিকের সাথে ফুটবল খেলার স্মৃতি। সবকিছু মিলে এক অসহ্য যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। আবার হঠাৎ করেই জাহানের চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসে। আবার কিছুক্ষ্ণ পর সূর্যের মৃদু আলো দেখতে পায় জাহান আর দূর থেকে এক বাউলের গানের ধ্বনি ভেসে আসতে শুরু করে।

এভাবেই উপন্যাসের গল্প সামনের দিকে আগাতে থাকে। লেখক উপন্যাসটিতে এক অদ্ভুত নাটকীতার জন্ম দিয়েছেন যা পদে পদে পাঠককে এর পরে কী হবে জানার জন্য উৎসুক করে রাখে। তাই উপন্যাসটি কখন শেষ হয়ে যায় বোঝাই যায় না। বর্তমান সময়ের দারুণ একটি বই, যা যেকোনো পাঠক পড়লে মুগ্ধ হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top