কাঁদো নদী কাঁদো PDF Download সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ

কাঁদো নদী কাঁদো উপন্যাসটির রচয়িতা সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ৷ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তাঁর সব রচনার মাধ্যমেই সাধারন মানুষের জীবনচিত্রকেই তুলে ধরেন। তাঁর রচনার বিষয়বস্তু হয় খুব সাধারণ অথচ তাৎপর্যপূর্ণ। এই উপন্যাসটিও এর ব্যতিক্রম নয়। ১৯৬৮ সালে এই বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়৷ বাঁকল নদী এবং কুমুরডাঙা গ্রামকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে এই উপন্যাসের কাহিনী।

উপন্যাসটিতে রয়েছে অসংখ্য চরিত্র যারা সবাই কাহিনীপ্রবাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরকমই এক কেন্দ্রীয় চরিত্রে পাঠক মুস্তফাকে দেখতে পাবেন। মুস্তুফার বাবা খেদমতুল্লাহ একজন দুর্বৃত্ত শ্রেণীর মানুষ। পড়ালেখার ধার ধারেন না। এরকম একটা মানুষের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও মুস্তফার ছিলো পড়ালেখার প্রতি টান।

কাঁদো নদী কাঁদো বুক রিভিউ

সে নিজের চেষ্টায় পড়ালেখা করে এবং এক পর্যায়ে কুমুরডাঙা গ্রামের ছোট হাকিম পদে অধিষ্ঠিত হয়। সেখানে কাজ করতে করতে তার সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মচারী আশরাফ হোসেনের সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। সেখান থেকেই পরিচয় হয় আশরাফ হোসেনের মেয়ের সাথে৷ তাদের একে অপরকে ভালো লেগে যায় এবং বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।

মুস্তফা বিয়ের ইচ্ছা পোষন করে বাড়িতে চিঠি পাঠায়। কিন্তু সেই চিঠি পেয়ে তার বাড়ির সকলের মাথায় আকাশ ভেঙে পরে। কারণ তারা মুস্তফার জন্য অন্য কাউকে পছন্দ করে রেখেছে অনেক আগে থেকেই। সেই মেয়েটি খেদমতুল্লাহর বোনের মেয়ে খোদেজা। বাবার মৃত্যুর পর খুব ছোটবেলায় সে মায়ের সাথে খেদমতুল্লাহর বাড়িতে এসে আশ্রয় নেয়। তখন খেদমতুল্লাহ বোনকে আশ্বাস দেয় যে মুস্তফা এবং খোদেজা বড় হলে তাদের বিয়ে দেওয়া হবে।

বাড়ির সবাই এই মনস্থির করে রাখলেও মুস্তফা কখনো খোদেজাকে সেই চোখে দেখে নি। কিন্তু খোদেজা অনেক আগে থেকে মুস্তফাকেই মনে মনে স্বামী হিসেবে লালন করে আসছে। সেজন্যই মুস্তফার পাঠানো এই চিঠি তার ওপর বজ্রের মতো আঘাত হানে। তারপর ঘটে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। এদিকে কুমুরডাঙার প্রাণ বাকল নদীতে একসময় চর পরে যায়।

স্টিমার চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, মফস্বল এলাকাটির যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যহত হয়ে যায়। ব্যবসা বাণিজ্যে ভাটা পরে, এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার ওপর চাপ পরে। মানুষ দিশেহারা হয়ে পরে। নদীটির ওপর এই জনপদের রয়েছে ব্যাপক নির্ভরশীলতা। তারা কেউই এই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারে না। এলাকার অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিও বিশ্বাস করতে পারেন না চর পরার কথাটি। তারা সবাই হতবিহ্বল হয়ে পরেন।

কাঁদো নদী কাঁদো পিডিএফ ডাউনলোড লিংক

এদিকে মোসলেম উদ্দীনের মেয়ে সখিনা একটা অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পায়। সেই আওয়াজ টি আসে বাকল নদী থেকে। সেই আওয়াজ কে সখিনা বিপদের পূর্বাভাস হিসেবে ধরে নেয়৷ ভাবে বড় কেন বিপদ এসে গ্রাস করতে যাচ্ছে কুমুরডাঙ্গার মানুষের জীবনকে। কুমুরডাঙার মানুষ যে আগেও খুব বিপদমুক্ত জীবন যাপন করেছে তাও নয়। সন্ত্রাস,রাহাজানি,ধর্ষণ এসব সেখানকার নৈমিত্তিক ব্যাপার। এসব বিপদের সাথে লড়াই সেখানকার মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী।

এখানকার মানুষ হিংসা-বিদ্বেষের উর্ধ্বে উঠে কিছুই করার কথা ভাবতে পারে না। এছাড়াও দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করাও সাথে অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। এভাবেই নদী ও মানুষের জীবনপ্রবাহ নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে উপন্যাসটির কাহিনী। বর্ণনাশৈলী, কাহিনী এবং গুরুত্বের দিক থেকে “কাঁদো নদী কাঁদো” উপন্যাসটি ব্যতিক্রধর্মী একটি উপন্যাস। কেউ কেউ একে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবেও অভিহিত করেছেন। তাই এই অসাধারণ উপন্যাসটি আজও বাংলা সাহিত্যে তার নিজের স্বকীয়তা নিয়ে বিরাজমান আছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top