কাকতাড়ুয়া মুশফিক উস সালেহীন PDF download (থ্রিলার)

তরুণ লেখক মুশফিক উস সালেহীন একজন উঠতি জনপ্রিয় লেখক! মাত্র কয়েক বছরেই বেশকিছু দারুন বই লিখে ফেলেছেন, যা পাঠক মহলে ব্যপকভাবে সমাদৃত। যার জনপ্রিয় সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ঋ। আর তার থেকেও অনেক বেশি জনপ্রিয় থ্রিলার ‘কাকতাড়ুয়া’! নাম অদ্ভুত! কিন্তু এই অদ্ভুত নামের বইগুলো হয় অসাধারণ! সুতরাং বইটা থেকে যারা এখনও বঞ্চিত তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপঃ অস্ত্র! এই জিনিসটাই যত অসান্তির মূলে। প্রাণঘাতী…পৃথিবীধ্বংসি!
সারা পৃথিবীর অস্ত্রের ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার মতো একটি বন্ধুকের ডিজাইন হচ্ছে এমডি-টু। এমডি-টুয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এর দৈর্ঘ্য কম। কিন্তু বিশাল স্নাইপার বন্দুকের মতো করেও ব্যবহার করা যায়! আবার সাব মেশিনগান হিসেবে ব্যবহার করতেও কোনো অসুবিধে নেই! এর কার্তুজটাই এমন করে তৈরি করা হয়েছে যে, স্নাইপার গুলি ব্যবহার করা যায় একসাথে ষাটটা। আর মেশিনগান হিসেবে ব্যবহার করলে দুইশোর মতো। এই ধরনের বন্দুকের ডিজাইনের বাজার দাম প্রায় ১০০ কোটিরও বেশি!

কোন একটা দলের এজেন্টের দায়িত্ব ছিল, আসাম থেকে ডিজাইনটা রিসিভ করে ঢাকা পর্যন্ত নিয়ে আসা। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, ডিজাইনটা সেই দলটার হাতে এসে পৌঁছায়নি। যে এজেন্টের মাধ্যমে ডিজাইনটা ঢাকা পর্যন্ত আসার কথা ছিল, সেই এজেন্টের লাশ পাওয়া যায় উত্তর গোড়ান কবরস্থানের পাশে, সম্পূর্ণ নগ্ন।

ঘটনাচক্রে এম.ডি-টুয়ের ডিজাইন চলে আসে বঙ্কিম ও মুসার হাতে। যারা কি ন ড্রাগ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। এবার ডিজাইনটা কেড়ে নিতে উপচে পড়ে আরও কয়েকটা দল। আর এদিকে পুলিশ, আর্মি আর মাফিয়ার চোখকে ফাঁকি দিয়ে ডিজাইনটা বিক্রির পরিকল্পনা আঁটছে বঙ্কিম। এবার চোর- পুলিশের খেলাটা আরও ভালোভাবে জমে ওঠে। কিন্তু সে খেলায় কে জিতবে কে-ইবা হবে ধরাশায়ী তা এখনো অজানা। এই খেলার সমাপ্তিটা দেখতে চাইলে পড়তে হবে কাকতাড়ুয়া!

একদম এক নিমিষেই পড়ে শেষ করার মত বই। আমিও বলা যায় এক বসাতেউ শেষ করেছি!
ঢাকা শহরের অলিগলিতে ড্রাগ আদান-প্রদানের সাথে অন্য মাত্রা যোগ করে দিয়েছে এম.ডি-টু এর ডিজাইন। যেটা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য মাফিয়া থেকে শুরু করে আর্মির লোক পর্যন্ত উঠেপড়ে লেগেছে। তাদের সবাইকে ঘোল খাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বঙ্কিম। বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চোর – পুলিশের খেলার আমেজটা বিরাজমান ছিল। একদমই শেষ পর্যন্ত। মাঝেমধ্যে কিছু কিছু টুইস্ট এসে কাহিনীর মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।
পুরো গল্পটা অনেকটা সিনেম্যাটিক মতো মনে হবে। মনে হবে চোখের সামনে এসব ঘটছে। বইয়ের যে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে – যে উত্তেজনার মধ্যদিয়ে গল্পটা শুরু হয়েছিল ঠিক সেই উত্তেজনা নিয়ে কাহিনী শেষ হয়েছে। এই বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক নতুন লেখকই খুব সুন্দর করে তালগোল পাকিয়ে ফেলে। মুশফিক উস সালেহীন তেমন কাচা কাজ মোটেও করেন নি।

যদিও কাহিনী শেষ হয়েছে বললে ভুল হবে। কারণ এই সিরিজের পরের বইয়ের জন্য লেখক উত্তেজনাটা রেখে দিয়েছেন। অনেক সময় লেখকেরা গল্পের মাঝখানে এসে ছন্দ হারিয়ে ফেলেন। ফলে গল্পের ফিনিশিংটাও যথাযথভাবে দিতে পারেন না। এখানে কিন্তু এসবের কিছুই ঘটেনি। লেখক শেষ পর্যন্ত ছন্দটা ধরে রাখতে পেরেছিলেন। ওই যা বললাম। লেখক বেশ শক্তিশালী।
লেখকের লিখনশৈলীর প্রশংসা না করলে নয়। লেখকের প্রকাশভঙ্গির সাবলীলতা, শব্দের ছন্দময় মেলবন্ধন গল্পটাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। আর মুগ্ধ করে রেখে বইয়ের প্রতিটি পাতায়। এই বইটা পড়ার পর সিরিজের পরের বইয়ের জন্য আর তর সইবে না। যত দ্রুত সম্ভব পড়ে ফেলতে ইচ্ছে করবে। কিন্তু তার জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে। ভালো কিছুর জন্য একটু সবুর তো করতেই হয়।

সবশেষে বলবো, যাস্ট দারুন একটা বই। না পড়লে আসলেই মিস!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top