কোথাও কেউ নেই PDF Download হুমায়ূন আহমেদ

“কোথাও কেউ নেই” হুমায়ূন আহমেদের এক কালজয়ী সৃষ্টি। বইটির গল্পকে কেন্দ্র করে নাটক নির্মিত হয়েছে। বই পড়ে এবং নাটক দেখে কেউ কাঁদেনি এমন পাঠকের এর জুড়ি মেলা ভার। বইটি কাকলী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৩। বইটির মুদ্রিত মূল্য ৩০০ টাকা।
বই পাঠের মাধ্যমে পাঠক হৃদয়ে যে কাঁন্নার সৃষ্টি লেখক করেছেন তা সত্যিই সৃজনশীল, মনমুগ্ধকর এবং হৃদয়বিদারক বটে। শওকত সাহেব বাড়ির কর্তা। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। অফিসের ডিউটি শেষে সন্ধ্যায় এসে ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে পড়াতে বসেন। বড় মেয়ে বকুলের ট্রানসলেশন নিয়ে মাঝে মধ্যেই তিনি তাকে খুবই বকা দেন। বাবু অর্থাৎ ছোট ছেলের প্রতি তিনি পড়ালেখার বিষয় খুবই কঠোরতা অবলম্বন করেন।
কোথাও কেউ নেই বুক রিভিউ
মাঝেমধ্যেই পড়ালেখা ঠুস ঠাস শব্দ পাওয়া যায়। তবে তাদের এই ভয় থেকে মুক্তির আশ্রয়স্থল মুনা আপা। শৈশবে পিতা-মাতা মারা যাওয়ায় মামা শওকত সাহেব তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং নিজের মেয়ের মতই মানুষ করতে থাকেন। মুনা তার পরিবেশটাকে নিয়ে বাঁচতে থাকে এবং মামার বাড়িতেই সবচেয়ে আপন তার মনে হতে শুরু করে।
লেখাপড়া শেষ করে সেও একটি চাকরি নাই টাইপিস্টের। কোন কোন দিন কাজের চাপে ফিরতে দেরি হলেও সে ভয় করে মামার জন্য। কিন্তু মামা তাকে কিছুই বলেনা। মুনার সাথে মিথস্ক্রিয়া চলতে থাকে এক বেকার যুবকের যার নাম মামুন। মামুন মুনাকে আশা দেই যে তারা একসাথে বিয়ে করে একটি সুখের সংসার করবে।
কোথাও কেউ নেই নাটকের ডায়লগ
কিন্তু একটা পর্যায়ে এসে মুনার মনে হয় যে মামুন স্বার্থপর। সে তার স্বার্থের জন্য মোনাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। তাদের এই সম্পর্কটা একটা সময় ভেঙে যায়। মুনা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। অন্যদিকে শওকত সাহেব মানসিক দিক থেকে ভেঙে পড়তে থাকে। সে আর মেয়ের দিকে নজর দেয় না। পড়ালেখার বিষয় ছেলে মেয়েদের প্রতি কোন কঠোরতা প্রকাশ করেনা।
পরিবার থেকে তার মন উঠে যায়। তার মামা ডুবে যেতে থাকে এক দোটানায়। অফিসের কোন একটা ঝামেলার কারণে তার মামা চুপচাপ হয়ে যায়। মুনার পরিবার যখন বিপদ সংকুল অবস্থায় পড়ে তখন সেই মুহূর্তে এগিয়ে আসে এলাকার গুন্ডা বাকেরভাই। বাকের ভাই গুন্ডা হলেও একজন ভালো মনের মানুষ।
কোথাও কেউ নেই উক্তি
তিনি কোনো মানুষের উপর জোর জবরদস্তি করে কোনো কিছু আদায় করেন না। অন্যায়ের বিপক্ষে আপস না করার জন্যই তার নাম হয়েছে গুন্ডা। আসলে ভালো মানুষেরা কেন গুন্ডা হবে। কিন্তু আমাদের সমাজের তথাকথিত কিছু মানুষ তাদেরকে নাম দিয়েছে গুন্ডা। যাই হোক বাকের ভাই মুনাকে মনে মনে ভালোবাসে।
কিন্তু মুনা বুঝতে পারলেও সে বাকের ভাইয়ের ভালোবাসার উত্তরের ক্ষেত্রে নীরব থাকে মামুনের জন্য। কিন্তু যখন মামুন দূরে সরে যায় তখন বাকের ভাই মোনাকে প্রস্তাব দেয় যে সারা জীবন যাতে তারা একসাথে চলতে পারে। কিন্তু বাকের ভাইয়ের একসময় অবস্থা খারাপ হয়ে থাকে। বাকের ভাই আর সে আগের বাকের ভাই থাকে না।
সম্প্রতি কোন একটা ঝামেলার কারণে তাকে জেলে যেতে হয় এবং জেলই হয় তার আসল ঠিকানা। সেই মামলার শেষ রায় হিসেবে তার ফাঁসি কার্যকর হয় সে মুনাকে তার ফাঁসির কথা বলে এবং তার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করে। কিন্তু মুনাদের চুপ করে থাকে কারণ এ এক অসম্ভব ইচ্ছা যাকে বাস্তবে রুপ দেওয়া কঠিন। বাকেরভাই নিঃসঙ্গতা প্রকাশ করে।
হুমায়ুন আহমেদ PDF Book Download
তেমনি মুনার মামা তার পরিবার থেকে দুই বছরের জন্য জেল হাজতে চলে যাই কোন একটি মামলার কারণে। পরিবার থেকে বকুলের বিয়ে হয়ে যায়। মামি মারা যায়, ছোট দুই ভাই বোনকে নিয়ে চলে যাই বকুলের শাশুড়ি। বাস্তবিকপক্ষে এ পৃথিবীতে আমরা সবাই একা।। আমাদের কোথাও কেউ নেই। এসেছি একা ,যেতে হবে একা।
মুনা নামের কঠোর শক্তিশালী চরিত্রের মধ্য দিয়ে সে দিকটি ফুটে উঠেছে। একসময় তার পরিবারের সবাই ছিল কিন্তু একটা সময় এসেছে যখন তার পাশে আর কেউ নেই। সে হয়ে গেছে সম্পূর্ণ একা। এমনকি ভালবাসার মানুষটা তার থেকে অনেক দূরে । বইটি পড়ে এবং নাটকটি দেখে অঝোরে কেঁদেছি। আসলেই তো মানব জীবনটা এমনই। বইটির কিছু কিছু কথা খুবই ভালো লেগেছে।
বইটির শেষে বাকের ভাইয়ের ফাঁসির মধ্য দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটে। জেল হাজতে যখন বাকের ভাইয়ের লাশ বুঝিয়ে দেয়া হয় তখন জিজ্ঞেস করা হয় আপনি লাশের কে হন? মুনা শুধু বলে আমি তার কেউ না। আসলে কেউ নয় এর মধ্য দিয়েও যে মুনা হৃদয়ে বাকেরভাই জায়গা করে নিয়েছিল এটা অপ্রকাশিত থেকে যায়।
কোথাও কেউ নেই PDF
মুনর মত প্রত্যেকটি মানুষ নিঃসঙ্গতার কাছে যেন নিজের মনে শক্তির সঞ্চার করতে পারে সেই শিক্ষা আমরাই উপন্যাসটি পাঠ করে লাভ করতে পারব। তাই বইটি পাঠ করুন। আশাকরি বইটি আপনার জন্য উপভোগ্য হবে।