বাংলাদেশের স্বনামধন্য একজন লেখক হলেন মোশতাক আহমেদ। তার লেখা সবগুলো উপন্যাস সবার কাছে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তার রচিত সবগুলো উপন্যাস, গল্প সবাই খুব সাদরে গ্রহণ করেছে। তাঁর উপন্যাসের মধ্যে কল্পনার পাশাপাশি বাস্তবতার ছোঁয়া পাওয়া যায়। তিনি ছোট থেকে বড় সব বয়সী পাঠকদের জন্য বই রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস এর মধ্যে “লাল ডায়েরি” উল্লেখযোগ্য।
মোশতাক আহমেদ পেশায় একজন ডিআইজি। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তাঁর বই পড়ার প্রতি অনেক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। মূলত সেখান থেকেই তার লেখালেখির শুরু হয়। সবদিক দিয়ে মোশতাক আহমেদ কে একজন সফল কবি হিসেবে ধরা যায়। কারণ তাঁর রচিত ভ্রমনকাহিনী,উপন্যাস,প্যারাসাইকোলজিকাল উপন্যাস, গল্প, ভৌতিক কাহিনী, সাইন্স ফিকশন সবগুলো সবার কাছে অধিক জনপ্রিয়।
“লাল ডায়েরি” মোশতাক আহমেদের একটি জনপ্রিয় ও নামকরা রোমান্টিক উপন্যাস। বইটি প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয় 2020 সালে। বইটি প্রকাশ করে অনিন্দ্য প্রকাশনী। বইটিতে মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা রয়েছে 208 টি। বর্তমান বাজারে বইটির মুদ্রিত মূল্য হল 300 টাকা।
কাহিনী সংক্ষেপ:
লেখক মোস্তাক আহমেদ যেমন অন্যান্য ধরনের বই লিখে বিখ্যাত হয়েছেন তেমনি তাঁর রচিত রোমান্টিক উপন্যাস গুলো ততটাই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তার রোমান্টিক উপন্যাসে অনেক ধরনের সম্পর্কের মিশ্রণ দেখা যায় যেটা পড়ার পর মনে প্রশান্তি মনে প্রশান্তি অনুভূত হয়।
নির্ঝর নামের একজন ভার্সিটি পড়ুয়া যুবক একটি মেয়েকে ভালোবাসতো। অনিন্দ্য, সুন্দর সেই মেয়েটির নাম হলো নিকিতা। নির্ঝরের ভালোলাগা ভালোবাসা তার স্বপ্নের কথাগুলো কখনোই বলতে পারবে না বলেই তার এই ডায়েরি লেখা। নির্ঝর তার মনের সব কথা গুলো লাল ডায়েরিতে লিখে রেখেছে। কারণ নিকিতা অস্কার বিজয়ী বাংলাদেশের একমাত্র নায়িকা। নির্ঝর খুব ভালোভাবেই জানে তারার নিকিতার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। সে কিছুতেই নিকিতার যোগ্য হয়ে উঠতে পারবেনা।
নির্ঝর এটাও ভাল করেই জানে যে নিকিতা তার ডায়েরি কোনদিন পড়বে না। হয়তো নিকিতা কোনদিন জানতেও পারবেনা যে নির্ঝর নামের কেউ তাকে ভালোবাসতো। এইসব কারণে নিকিতাকে নিয়ে তার মনের কথাগুলো তার লাল ডায়েরিতে লিখে।
সে নিকিতাকে নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা, পূর্ণিমা রাতে ভরা জোছনায় হাত ধরে হাটার কথা, দূর গ্রামে হিজল তলায় বসে রিমঝিম বৃষ্টি দেখার কথা, বসন্তের ঝিরিঝিরি বাতাসে নিকিতা রেশমি চুলের স্পর্শ অনুভব এর কথা, লাল-নীল নানা রঙের ছোট ছোট স্বপ্ন ভালোবাসার কথা, এমনকি কোথাও নীরবে-নিভৃতে একটি রাত কাটানোর কথা সে খুব যত্নে তার ডায়রিতে লিখে রেখেছে।
ঘটনাক্রমে একদিন নির্ঝরের সেই ডায়েরীটা নিকিতার হাতে গিয়ে পড়ে। পরেরদিন নিকিতার ম্যানেজার এসে নির্ঝরকে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে নিকিতা নির্ঝরের ইচ্ছেপূরণের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। নিকিতা জানায় একমাস পর সে সত্যি কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে নির্ঝরের সাথে একটি রাত কাটাতে চায়। ঝোঁকের মাথায় নির্ঝর সম্মতি দেয়ার পরে বুঝতে পারে কি ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। শর্তগুলো সে যত সহজ মনে করেছিল বাস্তবে সেগুলো অনেক কঠিন।
তাইতো আবেগ, উত্তেজনা, অস্থিরতা আর অনিশ্চয়তায় পাগল হওয়ার মত অবস্থা হয় তার। নির্ঝর একসময় সব বুঝতে পেরে সিদ্ধান্ত নেয় নিকিতা সাথে দেখা করবে না। কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ নির্ঝরকে লেখার নিকিতা চিঠিগুলো তাকে আবার ওই কাজে উজ্জীবিত করে। অবশেষে আসে সেই রহস্য ঘেরা রাত।
শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছিল ওই রাতে? আর শর্তগুলো বা কী ছিল? শেষ পর্যন্ত নির্ঝর আর নিকিতা সম্পর্কের পরিণতিই বা কী হয়েছিল? এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে অবশ্যই আপনাদের পুরো বইটা পড়তে হবে। আশা করি অনেক ভাল লাগবে।