মেঘে ঢাকা জোছনা PDF Download মোশতাক আহমেদ

‘মোশতাক আহমেদ’ একজন সনামধন্য বহুমাত্রিক লেখক হিসেবে পরিচিত। পেশায় তিনি একজন পুলিশ অফিসার হলেও লেখক হিসেবেই তাঁর বেশি খ্যাতি রয়েছে। নানা ধরনের বই তিনি লিখেছেন। সাইন্স ফিকশন থেকে শুরু করে ছোটদের জন্য গোয়েন্দা গল্প। প্যারাসাইকোলজিক্যাল বিষয় সম্পর্কেও তার অগাধ জ্ঞান। আর সেখান থেকেই তিনি সৃষ্টি করেছেন দারুন একটি চরিত্র, প্রফেসর তরফদার! আর এই সিরিজের একটি বই ‘মেঘে ঢাকা জোছনা’। দারুন বইটার পিডিএফ পড়তে পারেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে।
কাহিনী সংক্ষেপ
ঢাকা ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক ও তার মা সাদিয়া বেগম কে নিয়ে তাদের সাজানো-গোছানো ছোট্ট সংসার। অপরদিকে রাহাতের প্রেমিকা রিতিশা ধনী ব্যবসায়ী লোকমান চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে।সব ঠিকঠাক ছিল হঠাৎ রাহাতের বাড়িতে খুন হয় এক সুন্দরী নারী লাবনী।যে কিনা আবার রাহাতদের বাড়িতে কাজ করত।এই খুনের জন্য সবাই রাহাত ও তার মা সাদিয়া বেগমকে আসামী ভাবে।সবাই এই হত্যা কান্ডে উত্তাল হয়ে উঠে।রাস্তায় সভা, সমাবেশ,মানববন্ধন হতে থাকে।যার পেছনে মদদ জোগাতে থাকে কায়েস আর তার শাগরেদরা।সবাই স্লোগান দিতে থাকে
“লাবনী হত্যার বিচার চাই,
ফাঁসি চাই,ফাঁসি চাই,
রাহাতের ফাঁসি চাই,
ডাইনিবুড়ি সাদিয়া বেগমের ফাঁসি চাই।”
রাহাতকে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং সাদিয়া বেগম স্টোক করেন।সাদিয়া বেগম কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেখানে তার চিকিৎসা চলে সুস্থ হয়ে সাদিয়া বেগম বাড়ি ফিরলে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।এদিকে রিতিশা রাহাতকে মুক্ত করার জন্য উঠেপড়ে লাগে।কিন্তু তার বাবা চান না সে রাহাতের কেসের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। রিতিশা রাহাতকে মুক্ত করার জন্য উত্তলা হয়ে উঠে।কিন্তি রিতিশার বাবা তাকে জোরপূর্বক ঘরে আটকে রাখে।
এতে রিতিশা ধীরে ধীরে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই তার বাবা একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তরফদারের শরণাপন্ন হন। ডাক্তার তরফদার রিতিশাকে সুস্থ করতে গিয়ে লাবনী হত্যার তদন্তে জড়িয়ে পড়েন।ডাক্তার তরফদার রিতিশাকে সুস্থ করার উদ্যেশে রাহাতের খুনিকে খুঁজে বেড়াতে থাকে।
অপরদিকে ডাক্তার তরফদারের পুরোনো রোগী গাছমানব অরুপে মোবাশ্বের ।গাছমানব হলেন প্রকৃত গাছ প্রেমিক। গাছের ব্যাথা ব্যথিত হন আর খুশিতে আনন্দ পান। গাছমানব গাছের সাথে কথা বলতে পারেন, যা তার অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতা। গাছমানব রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে গাছের পরিচর্যা করে। গাছে গাছে থাকা সাইনবোর্ড, প্যারাকে তুলে গাছকে স্বস্তি দেন। এছাড়া তিনি বুড়িগঙ্গার তীরে গাছ লাগান।
গাছমানবের ইচ্ছে অনুযায়ী তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারি গ্রামের শতবর্ষী সর্যপুরী আম গাছ দেখতে যান এবং গাছের সাথে সুখ দুঃখের কথা বলেন। এছাড়া ডাক্তার তরফদারের দেওয়া লজ্জাবতী গাছের চারা থেকে আরও চারা উৎপাদন করে বিক্রি করে, এতে একদিনে যেমন গাছমানব লাভবান হন তেমনি গাছের ও যে প্রাণ আছে তা মানুষকে বোঝাতে চেষ্টা করেন। এই দুই কাহিনীর মিশেলে চলতে থাকে মোশতাক আহমেদ স্যারের আরেক অসাধারণ সৃষ্টি মেঘে ঢাকা জোছনা বইটি।
লেখকের বর্ণনা ভঙ্গী বেশ মুগ্ধ করেছে।,প্রেম ভালোবাসার বর্ণনা এত নিখুঁত ভাবে দিয়েছে যা মন ছুয়ে যাবার মতো। যেখানে ভয় আনা প্রয়োজন সেখানে ভয়ের সৃষ্টি করতে পেরেছে। যেখানে মন খারাপ হওয়ার অনুভূতি প্রয়োজন সেখানে বর্ণনার মাধ্যমে সেই অনুভূতিও তৈরি করতে পেরেছে।একজন লেখকের সার্থকতা ঠিক এইখানে। যে নিজের জগতে অনায়াসে আপনার মনকে বিচরণ করিয়ে দিতে পারে। ঠিক যেন জেগে থেকে স্বপ্ন দেখার মতো। অতুলনীয়। এই বর্ণনাশৈলী আবেগকে উথলে দেয়।
সবশেষে বলবো, দারুন কিছু উপভোগ করতে চাইলে বইটা অবশ্যই পড়বেন।