মেঘেদের দিন PDF Download সাদাত হোসাইন

‘মেঘেদের দিন’ উপন্যাসটির রচয়িতা হলেন ‘সাদাত হোসাইন’। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সাহিত্য জগতে এক উজ্জল নক্ষত্র হলেন সাদাত হোসাইন। একের পর এক উঁচু মানের লেখা পাঠকদের উপহার দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সহজ-প্রাঞ্জল লেখার ধরণ, বিশদ বর্ণনার মাধ্যমে উপস্থাপনার ধরণ সব কিছু মিলে সাদাত হোসাইন এর লেখার তুলনা অন্য কারো সাথে হয় না।
তার লেখা পড়তে বসলেই বোঝা যায় কোনটা তার লেখা। অনেকে আবার তার এই বিশদ বর্ণনার দিক নিয়ে সমালোচনা করেন, কিন্তু পাঠক হিসেবে আমার মনে হয় সাদাত হোসাইন নিজের লেখাকে যেভাবে উপস্থাপন করতে চান, লেখক হিসেবে তিনি সেভাবেই তা করতে পারেন এক্ষেত্রে তার পূর্ণ অধিকার আছে।
মেঘেদের দিনে উপন্যাসটি প্রথম ‘অন্যদিন’ পত্রিকার ২০১৮ সালের ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত হলেও, পরে বিভিন্ন পরিমার্জনা ও পরিবর্ধনের পর তা ২০২০ সালে বই আকারে প্রকাশিত হয় এবং তার প্রকাশনী সংস্থা হলো ‘অন্যপ্রকাশ’।
উপন্যাসটির মূল পটভূমি গড়ে উঠেছে মানুষের জীবনের জটিলতা, স্বার্থান্বেষী মানুষের অমানবিকতা তথা সর্বোপরি আমাদের সমাজের বিভিন্ন অন্ধকার দিক নিয়ে লিখিত একটি সামাজিক উপন্যাস এটি। উপন্যাসটির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তিনটি চরিত্র মারুফ, তানিয়া ও বুড়ি।
এর বাইরেও আরও অনেক চরিত্র বিভিন্ন সময়ে গল্পের প্রয়োজনে দৃশ্যপটে এসে হাজির হয়। উপন্যাসটির গল্পের শুরুই হয় বুড়ির সাথে ঘটে যাওয়া একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মধ্যে দিয়ে। মারুফ আর তানিয়া হলো তরুণ এক দম্পতি৷ সম্প্রতি তাদের বিয়ে হয় এবং তারা হঠাৎ করেই ঠিক করে সামনে ছুটিতে মারুফের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাবে।
মারুফের গ্রামের নাম হলো নীলতলি। কিন্তু এই যাওয়াটাই কিনা এই তরুণ দম্পতির জীবনে নেমে আসে কালো দুঃস্বপ্ন হয়ে। প্রথমদিকে তাদের ছুটি ভালো কাটছিলো, কিন্তু হঠাৎ করেই মারুফের আত্মীয়দের আসল চেহারা বের হয়ে আসে, গল্প সামনের দিকে আগাতে শুরু করলে বোঝা যায় তারা কতটা লোভী।
সম্পদের লোভে মোহিত হয়ে তারা যেকোনো কিছু করতে পারে৷ আবার এসব ঘটনা চলাকালীন সময়ে হঠাৎ হঠাৎ করেই গল্পের দৃশ্যপটে বুড়ির বিভিন্ন কাহিনী চলে আসে। বুড়ির জন্মের পর তার মা খুব হতাশ হয়েছিলেন। এজন্য না যে বুড়ির মা ছেলে সন্তান চেয়েছিলেন বরং এই সমাজে একটা মেয়ের বড় হয়ে ওঠা থেকে শুরু করে পদে পদে যে কত কষ্টের স্বীকার হতে হয়, তাই ভেবে তিনি অস্থির হয়েছিলেন।
বইটিতে উপমা ও রুপকের কোন কমতি নেই। আর এই উপমা ও রুপকগুলো যেকোনো পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দিতে সক্ষম।
উপন্যাসটি একটি অসাধারণ উপন্যাস। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটের যেই করুণ সত্যকে লেখক তার লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন তা অনবদ্য। উপন্যাসটি যেকোন পাঠককে বিমোহিত করতে পারে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। অনেকগুলো উপাদানের সঠিক সংমিশ্রণ ঘটিয়ে লেখক একটি অভূতপূর্ব গল্পের জন্ম দিয়েছেন।