মেমসাহেব PDF Download নিমাই ভট্টাচার্য

‘মেমসাহেব’ উপন্যাসটির লেখক কলকাতার প্রখ্যাত সাংবাদিক নিমাই ভট্টাচার্য। এই বইটি ১৯৬৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটির প্রকাশক দে’জ পাবলিশার্স। নিমাই ভট্টাচার্যের ‘মেমসাহেব’ উপন্যাসটি শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয় বাংলাদেশি পাঠকদের কাছেও সমানভাবে জনপ্রিয় ৷

বইটি প্রকাশিত হওয়ার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও দুইবাংলাতেই নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে আগের মতোই। শুধু পাঠকদের কাছেই নয়, ‘মেমসাহেব’ উপন্যাসটি অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটিও রয়েছে দুইবাংলার চলচ্চিত্রপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায়। নিমাই ভট্টাচার্য একজন নামজাদা সাংবাদিক হলেও তাঁর সাহিত্যকর্মের সংখ্যাও কম নয়। তাঁর লেখা প্রায় দেড়শোর মতো বই প্রকাশিত হয়েছে যার অধিকাংশই উপন্যাস।

মেমসাহেব বই রিভিউ

‘মেমসাহেব’ উপন্যাসটি একজন উদীয়মান তরুণ সাংবাদিক বাচ্চু এবং তার ভালেবাসার মানুষ অধ্যাপিকা কাজলরেখার জীবনের ঘটনাকে মূল বিষয়বস্তু করেই রচিত হয়েছে। এটি একটি রোমান্টিক উপন্যাস হলেও লেখক এর বাইরেও তৎকালীন সময়ের অনেককিছু তুলে ধরেছেন। দেখিয়েছেন ৪৭’র দেশভাগ, দাঙ্গা, তুলে ধরেছেন কলকাতার লক্ষ লক্ষ বেকার যুবকের জীবনচিত্র।

উপন্যাসটি মূলত একটি চিঠি সমগ্র। গল্পের মূল চরিত্র বাচ্চু তার দোলা বৌদির কাছে চিঠিগুলো লিখেছেন৷ চিঠিগুলো লেখার বিষয় ছিলো বাচ্চু এবং তার প্রেমিকার কাহিনী যাকে তিনি মেমসাহেব বলে ডাকতেন। মেমসাহেব শুনলে যে চিত্র পাঠকের চোখে ভেসে উঠবে আমাদের গল্পের এই মেমসাহেব কিন্তু মোটেও এমনটা ছিলেন না। তিনি ছিলেন শাড়িপরিহিতা আপাদমস্তক একজন বাঙ্গালী নারী, ভালোবাসা আর মমতা যার চরিত্রের বড় একটি অংশ দখল করে আছে।

এই মেমসাহেবের ব্যাপারে সকল রহস্য এবং সংশয় দূর করার জন্যই লেখক চিঠিগুলোর অবতারণা করেছেন। আর সেখানেই শুরু হয় ২০৭ পৃষ্ঠার এই বইটির যাত্রা। পাঠক দেখতে পাবেন বাচ্চু জন্মের পর পরই তার মা মারা যান। মায়ের মমতা, ভালোবাসা পাওয়ার সৌভাগ্য তার হয়ে ওঠেনি। মমতা দূরে থাক তাকে শাসন করবার মতোও তখন তার মাথার ওপর কেউ ছিলোনা।

মেমসাহেব নিমাই ভট্টাচার্য

একা একাই, স্নেহ-শাসন ছাড়াই নিজের মতো বড় হয়ে উঠেছেন বাচ্চু। ছোট থেকেই প্রচন্ড আর্থিক অভাবে দিন কাটিয়েছেন তিনি। তিনবেলা খাবার জোগার করতে পারাটাও তার কাছে বিলাসিতা ছিলো৷ এভাবে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটলেও বাচ্চু ছিলেন পরিশ্রমী, সৎ এবং নিষ্ঠাবান। কাজের প্রতি নিষ্ঠা থাকলেও তাঁর ছিলো না কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা, ছিলো না কোন লক্ষ্য।

ঠিক এমন একটি সময়ে তার জীবনে আসেন মেমসাহেব। মেমসাহেব তার জীবনে নিয়ে আসেন নতুন রং, নতুন আশা৷ তার অতি সাধারণ জীবনকে অসাধারণ করে দেওয়ার জন্যই যেন মেমসাহেবের এই আকস্মিক উপস্থিতি।এক ট্রেনের কামরায় দেখা হয় তাদের দুইজনের৷ মেমসাহেবের চোখের মায়ার জালে জড়িয়ে যান বাচ্চু। সেই থেকে পরিচয় অবশেষ প্রণয়ে রুপ নেয়।

আর তখন থেকেই বাচ্চুর জীবনেই ঘটতে থাকে ইতিবাচক সব পরিবর্তন। মেমসাহেব অপরিসীম ধৈর্য্য আর সাহসের সাথে বাচ্চুকে এগিয়ে দিতে থাকেন তার স্বপ্নের পথে। ভালোবাসাবঞ্চিত বাচ্চু মেমসাহেবের ভালোবাসা আর মমতার স্পর্শে সব দুঃখ ভুলে যেতে থাকেন। দুজনে মিলে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেন। লেখক এইসব সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন অত্যন্ত চমৎকার করে।

মেমসাহেব উপন্যাসের উক্তি

সেগুলো পড়লে পাঠক নিজের চোখের সামনেই যেন সেই কলকাতার পড়ন্ত বিকেল,গঙ্গার ঘাট, পার্ক সবই দেখতে পাবেন। তাদের এই সম্পর্কে কিছু সামাজিক বাধা নিষেধ থাকলেও মেমসাহেবের মেজ দিদির সহায়তায় সেগুলোও সহজ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে বাচ্চু ছোটখাটো একজন রিপোর্টার থেকে বড় একজন সাংবাদিক হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।

আর্থিক অবস্থার ও উন্নতি হচ্ছিলো। নিজের অগ্রগতি দেখে বাচ্চু নিজেই অভিভূত হয়ে যাচ্ছিলেন। তবে সবটুকু কৃতিত্ব তিনি দিয়েছিলেন মেমসাহেব কে। একসময় তারা সিদ্ধান্ত নেন গাঁটছড়া বাঁধার। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী দুজন একটা বাড়িও সাজিয়ে নেন নিজেদের স্বপ্নের মতো করে। ভবিষ্যতের সুখ কল্পনায় বিভোর হয়ে ওঠেন তারা।

মেমসাহেব PDF

এই সময় এসে পাঠক নিজেও যখন তাদের সুখে সুখী হয়ে ওঠেন তখনই ঘটে যায় এক দুঃখজনক ঘটনা। যা তছনছ করে দেয় দুজনের সব আশা কে। সেই ঘটনা জানতে পাঠক কে শেষ পর্যন্ত নিমাই ভট্টাচার্যের এই চমৎকার উপন্যাসটির সঙ্গে থাকতে হবে, জেনে নিতে হবে বাচ্চু এবং মেমসাহেবের জীবনের শেষ পরিণতি।

নিমাই ভট্টাচার্য pdf

তোমাকে নিমাই ভট্টাচার্য PDF

প্রেয়সী নিমাই ভট্টাচার্য pdf download

গুড নাইট pdf

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top