মির্জাপুরে মহাতঙ্ক PDF Download দিবাকর দাস

বর্তমানে আমার চোখে সেরা একজন লেখক হলেন ‘দিবাকর দাস’ উনার ‘দ্য নেস্ট অভ স্পাইডার’ পড়েই বুঝেছি সেটা। একটু আন্ডাররেটেড লেখকও বলা যায়। তিনি যে বেশ দারুণ লিখেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। রোমাঞ্চকর গল্প লেখাতেই বেশি পারদর্শী তিনি। সেটা হোক ইতিহাস ভিত্তিক কিংবা হোক কিশোর এডভেঞ্চার! সেরকমই একটি কিশোর এডভেঞ্চার আর রোমাঞ্চকর বই হলো ‘মির্জাপুরে মহাতঙ্কক’। দারুণ আর জোশ একটা বই। একন রোমাঞ্চকর উপন্যাস সবাই পড়তে চাই। তাই যারা বইটি পড়েন নি তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বইটির পিডিএফ ফাইল পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

তমালের বাবা কোম্পানির কাজের সুবাদে ঢাকা থেকে বদলি হয়ে গেছেন মির্জাপুর নামক গ্রামে। অগত্যা তমালকেও নিজের চিরপরিচিত শহর ছেড়ে পাড়ি জমাতে হয়েছে সেই মির্জাপুর গ্রামে। সে তো শহরের মানুষ। আর তার কাছে এই গন্ড গ্রামে খাপ খাওয়া কোনো ভাবেই সম্ভব না! এখানে না আছে মোবাইল নেটে আর না টিভি! ইলেক্ট্রিসিটিও তো ঠিক নেই। মূলকথা, তমাল এই পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে বেশ হিমশিম খাচ্ছে, মিশতে পারছে না সহপাঠীদের সাথেও; তাদের মধ্যে যেন অনক অনেক দুরুত্ব। অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু উপায় তার নেই। বাবার জন্য তাকেও আসতে হয়েছে।

একদিন বিকালে তমালের এক সহপাঠী ছোটনের বোন হঠাৎ পানিতে পড়ে যায়। তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও জ্ঞান ফেরে না। গ্রামে আবার ডাক্তার পাওয়াও সহজ কথা না। তমালের ক্যাম্পে শেখা প্রাথমিক চিকিৎসা এখানে বেশ কাজে দিলো। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জ্ঞান ফেরে ছোটনের বোনের। এই ঘটনাটা যেন বদলে দিলো তমালের সাথে ছোটনসহ বাকি সহপাঠীদের সম্পর্ক।

তমাল এখন এই মির্জাপুরেরই একজন; সহপাঠীরা এখন শুধু সহপাঠী না তারা এখন বন্ধু। কখনো সবার সাথে গোল্লাছুট খেলা, কখনো বা দিঘীতে সাঁতার কাটা, কখনো আবার অন্যের গাছ থেকে ফলচুরি। যেন সবই এখন তমালের দৈনন্দিন কাজের অংশ। এভাবেই বেশ কাটছিল তমালের জীবন। এদিকে একদিন খেলার সময় বল হারিয়ে গেলে তা খুঁজতে খুঁজতেই তমালেরা আবিষ্কার করে জঙ্গলের মধ্যে পরিত্যক্ত সাহেবের কুঠি যেন পরিত্যক্ত নয়, সেখানে আছে কারোর বসবাস।

এরই মধ্যে মির্জাপুর গ্রামে শুরু হলো আতঙ্ক। প্রথম কিছুদিন দেখা গেল রাতের বেলা গবাদি পশুদের নৃশংসভাবে হত্যা করে যাচ্ছে কে যেন! তবে সেটা কোনো ভয়ংকর জন্তু-জানোয়ার না কি মানুষ সেটা কেউ জানে না। কিন্তু পরবর্তীতে শুরু হলো মানুষহত্যাও। কিন্তু এইভাবে আর কত…!? সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে বইটা পড়ে ফেলুন।

‘মির্জাপুরে মহাতঙ্ক’- একটা নির্ভেজাল কিশোর এডভেঞ্চার। বইটা পড়তে গিয়ে বয়সটা যেন হুট করেই কমে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছিল। নস্টালজিকও হয়ে পড়ছিলাম। কিশোর বয়সে করা দুষ্টুমি আর বাঁদরামি গুলো যেন চোখের সামনে উঠে আসছিল। আহা আবার যদি ফিরে যেতা পারতাম! বইটা কিশোর দের জন্য হলেও অন্যান্য পাঠকরা পড়ে আমার মতোই নস্টালজিয়া হয়ে যাবে। আর দিবাকর দাসের লিখনী যেন আরেক যাদু মেশানো!

দিবাকর দাসের ‘মির্জাপুরে মহাতঙ্ক’ পড়তে গিয়ে আরও একটা কথা মনে হচ্ছিল, এই নির্ভেজাল কিশোর এডভেঞ্চার পড়েছি জাফর ইকবাল স্যারের বইয়েও। একাডেমিক-ননএকাডেমিক ভারি-ভারি বইয়ের ভিড়ে এই বইটা পড়ে আমি সামান্য সময়ের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলাম সেই নির্ভার হয়ে কিশোর উপন্যাস পড়ার দিনগুলোতে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বইটা উৎসর্গ করাও হয়েছে জাফর ইকবাল স্যারকে। কিশোররা পড়লে যেমন মজা পাবে। তেমনি অন্যান্য বয়সী পাঠকদেরও বইটি ভালো লাগতে বাধ্য।

সবশেষে বলবো, যাস্ট অসাধারন একটা সময় কাটবে। এইটুকু নির্দ্বিধায় বলতে পারি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top