মিথ্যা তুমি দশ পিপড়া PDF Download নাজিম উদ দৌলা

বিখ্যাত থ্রিলার লেখক ‘নাজিম উদ দৌলা’র সবথেকে বড় ও বিখ্যাত বইটা হলো ‘মিথ্যা তুমি দশ পিপড়া’। নামের সাথে আমরা অনেকে পরিচিত। তবে একটা বইয়ের নাম এমন কেন? প্রশ্ন জাগতেই পারে। বর্তমান লেখকদের মধ্যে নাজিম উদ দৌলা বেশ নামকরা বই লেখার পাশাপাশি নাটক সিনেমার স্ক্রিপ্টও তিনি লিখেন। তাই তার বইয়েও সিনেমাটিক ভাব আসে। যাই হোক, বইটির পিডিএফ আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পড়ে ফেলতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল। জার্মানির হোনাসপার্গ দুর্গে থাকা কয়েদীদের উপরে পাষবিক নির্যাতন হওয়ার গুজব ছড়িয়ে যায় দেশ জুড়ে। গুজব সত্যি নাকি মিথ্যা তা প্রমাণ করা জন্য এক দল দেশ সেরা সাংবাদিক উপস্থিত হয় সেখানে। সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হলেন মার্টিন ফিশার। বিশাল দুর্গের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে কড়া গার্ডদের আড়ালে মার্টিন খুঁজতে থাকে অন্য কিছু।

কিছুক্ষণের মধ্যে নিজের সন্দেহকে অনুসরণ করে পৌঁছে যায় একটি টর্চার সেলে যেখানে সে তার বহু বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে খুঁজে পায়। জানতে পারে কিছু অজানা রহস্য! হিটলারের শেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে জার্মান নাৎসিরা কিছু একটা খুঁজে চলেছে বছরের পর বছর। কথা বলার এক পর্যায়ে মার্টিন জানতে পারে সেই কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি লুকিয়ে আছে সবুজ ছোট্ট একটা দেশে যার নাম হলো ‘বাংলাদেশ’!

গল্প চলে আসে বর্তমান সময়ে যেখানে এক বাঙালি নবদম্পতি এসেছে ইংল্যান্ডের কার্ডিফে তাদের হানিমুনের বিশেষ মুহূর্তগুলো কাটাতে। গল্পের একটু ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় গল্পের মূল মেয়ে চরিত্র লিজা পড়াশোনার জন্য আগে থেকেই বিদেশ জীবনে অভ্যস্ত কিন্তু অপরদিকে মূল ছেলে চরিত্র অর্থাৎ লিজার হাসবেন্ড আবরার এই প্রথম দেশের বাহিরে পা রাখে। আর্থিক দিক দিয়ে আবরার একজন নিন্ম-মধ্যম আয়ের ছেলে তবে লিজা হলো বড়লোক ঘরের মেয়ে।

দুইজনের এতো বেশি পার্থক্য থাকলেও মিল আছে এক জায়গায়, তারা উভয়ই এতিম। মূলত লিজা তার খালু গালিব খানের কাছেই বড় হয়েছে এবং লিজার সমস্ত খরচ তার খালুই বহন করে। গল্প সামনের দিকে যাওয়ার সাথে সাথে দেখা যায় আবরার কার্ডিফের কোথায় যাবে, কিভাবে যাবে, কার্ডিফের কোথায় কি আছে তা নিয়ে এক বিশাল প্ল্যান করে রেখেছে। এমন কি কার্ডিফের রাস্তার প্রতিটি মোড় আবরার ভালো মতো চিনে। লিজার এই বিষয়ে সন্দেহ হলেও তা প্রকাশ করে নি।

এক পর্যায়ে আবরার ফ্ল্যাটহোম আইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য প্রচন্ড জেদ করতে থাকে। সেখানে যাওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ জানা সত্ত্বেও আবরার নিজেদের হানিমুনের সময়গুলো ব্যয় করে পারমিশন নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতে থাকে। যা লিজাকে ভাবুক করে তুলে। এরই মধ্যে লিজা লক্ষ্য করে লিজা এবং আবরার যেখানেই যাচ্ছে না কেন একজন লোক তাকে সবসময় অনুসরণ করছে এবং হোটেল ম্যানেজার জগজিৎ সিং লোকটা গোপনে তাদের দিকে নজর রাখছে।

এতো কিছুর ঝামেলার মধ্যে লিজা খুঁজে পায় আবরারের বাবার লিখা ডায়েরি। হানিমুনে কেন এই ডায়েরি নিয়ে আবরার এসেছে ভাবতে ভাবতে পড়ে ফেলে সম্পূর্ণ ডায়েরিটা সে। আবরারের বাবা আযহার আহমেদ ১৯৯০ সালে আবরারের জন্মের আগে কার্ডিফে আসার ঘটনাই সেখানে লিখা ছিলো। এবং ফ্ল্যাটহোম দ্বীপের লাইট হাউজে কোনো এক ঘটনায় তিনি তার মানসিক ভারসাম্য হারায়। সেই রহস্য ভেদ করতেই আবরার কার্ডিফে আসে হানিমুনে।

শুরু হয় লিজা এবং আবরারের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। একসময় তাদের মধ্যকার ভুল বোঝাবুঝি চুকে গিয়ে তারা একসাথে রহস্যের সমাধান করতে বের হয় এবং জানতে পারে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে হিটলারের এক নৃশংস পরিকল্পনার কথা। যা পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মিশেছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল জিনিসটাই লুকিয়ে রাখা হয়েছে এতো বছর। যেটা খোঁজার জন্য তিনটি দল আলাদাভাবে পিছনে লেগেছে আবরার এবং লিজার পিছনে।
এসবের মুক্তি কোথায়?

বইটার কাহিনী অতি চমৎকার। বইটাও যে অসাধারণ তাতে সন্দেহ নেই। তবে লেখক স্ক্রিপ্ট রাইটার হওয়াতে বইয়ের টুইস্টগুলোতে একটু সিনেমাটিক ভাব চলে এসেছে। ফলে মনে হতে পারে আপনি কোনো মুভি দেখছেন! সেটা অবশ্য এক দিক দিয়ে খারাপ না!
এছাড়া আর কোনো অসংগতি চোখে পরে নি।

সবশেষে বলবো, বইটার কাহিনি আপনাকে আটকে রাখতে বাধ্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top