মকবরা PDF Download কিঙ্কর আহসান

‘মকবরা’ উপন্যাসটির রচয়িতা হলেন ‘কিঙ্কর আহসান’। সমসাময়িক সময়ে যে কজন তরুণ লেখক বাংলাদেশের সাহিত্য জগতকে নতুন এক দিক নির্দেশনা দিয়ে সামনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন কিঙ্কর আহসান তাদের মধ্যে অন্যতম। সুচারু বর্ণনার ধরণ, প্রয়োজন মোতাবেক বর্ণনা ও সুনিপুণ হাতে চরিত্র গঠণ এই লেখকের লেখনীকে নিয়ে গেছে এক নতুন উচ্চতায়।

মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কের যেই মায়াজাল এবং মায়াজালের কারণে আমাদের জীবনের মোড় কীভাবে ঘুরে যেতে পারে তা এই লেখকের লেখনীতে স্পষ্ট। কিঙ্কর আহসানের অন্যতম দিক হলো তার কল্পনা শক্তি খুবই প্রখর। তিনি এমন এমন কিছু বিষয় কল্পনা করেন এবং কল্পনা করার পর তার লেখনীর মাধ্যমে তা পাঠকদেরও কল্পনা করাতে পারেন এটি কিন্তু চারটি খানি কথা নয়।

মকবরা উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালে এবং প্রকাশনী সংস্থা হলো ‘শিখা প্রকাশনী’। মকবরা উপন্যাসটির মূল পটভূমি গড়ে উঠেছে নবাবী আমলের সময়কালকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এটা ইতিহাসের দিক থেকে কোন নবাবী আমল নয়। এটি লেখকের কল্পনা জগতের এক নবাবী আমল।

উপন্যাসটিতেও লেখক কোন নির্দিষ্ট সময়কালকে কেন্দ্র করেন নি। উপন্যাসটিতে নবাবের নাম হলো সরজ খাঁ। সরজ খাঁয়ের বয়স কম হলেও সে বেশ বিচক্ষণ ব্যক্তি। পারিপার্শ্বিক অবস্থার খোঁজ খবর রেখে চলেন। তাছাড়া তো আর নবাবী চালানো যায় না। মোনাই সরকার হলেন নবাবের দরবারের একজন ব্যবসায়ী এবং এই ব্যক্তি যে নবাবের চিরশত্রু তা তিনি খুব ভালোভাবেই জানেন।

কিন্তু এত সাবধানে চলার পরেও কিছু জিনিস তো অগোচরে থেকেই যায় যেমন, নবাবের সবচেয়ে কাছের লোকই তার সাথে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস ঘাতকতা করেন। আর সেই ব্যক্তিটি হলো ফখরুদ্দীন। ফখরুদ্দীন ও মোনাই মিলে নবাবকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তারা শুধু সময়ের অপেক্ষা করে, কখন সঠিক সময় পাওয়া যাবে।

নবাবের একজন বিশেষ গুপ্তচরের কথা উপন্যাসে উঠে আসে তার নাম হলো ত্রপা সুন্দরী। নবাবের যে শুধু নিজের ঘরেই শত্রু তাই না বাহিরেও তার শত্রু বিরাজমান। জিয়াউদ্দিন বারনি নবাবের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চায় পিতা হত্যার। উপন্যাসটি মূলত শুরু হয় মজনুর কাহিনী দিয়ে।

মজনু এক বৈচিত্রময় চরিত্রহীন, লম্পট, ভবঘুরে অলস সব মিলে অথর্ব এক কথায়। বিয়ে করেছে দুটা তারপরও চরিত্রের দোষ ঠিক হয় না। আবার ভালোবাসার জন্য কাঙাল এক চরিত্র এই মজনু। হাবিবা হলো মজনুর বর্তমান স্ত্রী কিন্তু সে মজনুকে ভালোবাসে না। হাবিবার স্বামী কোন এক যুদ্ধে মারা যাবার পর সে এই আরেকটি বিয়ে করে।

হাবিবার ভাই হলো বহরাম সেও যুদ্ধে একজন সৈনিক ছিল। এখন তার সবসময়ের কারবার হলো কবুতর নিয়ে। সেই কবুতর কিনতে চেয়েছিলো নবাব সরজ খাঁ। কিন্তু বহরাম সেগুলোকে বিক্রি না করায় নবাব সবগুলোকে মেরে ফেলেন। তাই নবাবের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে বহরাম যোগ দেয় মোনাই ও জিয়াউদ্দিনের দলে।

তখন আবার ত্রপার সাথে প্রেম হয়ে যায় বহরামের। এভাবেই গল্প সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। উপন্যাসটি এককথায় অসাধারণ। এক বসায় অনায়াসেই শেষ করে দেয়া যায়। আর উপন্যাসটি শেষ করার পরেও বেশকিছু সময় এর রেশ থেকে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top